শশিকলা নটরাজন ও পনীরসেলভম
দলে ঐকমত্য নেই। তাই নেতৃত্বের প্রভাবশালী একটি অংশ চাইলেও, এডিএমকে-র সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব নেওয়ার প্রশ্নে আপাতত নীরব ‘চিন্নাম্মা’ শশিকলা নটরাজন।
জয়ললিতার মৃত্যুর পর তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন ও পনীরসেলভম। কিন্তু দলের হাল কে ধরবেন তার জবাব মেলেনি। এম থাম্বিদুরাইয়ের মতো এডিএমকে-র বর্ষীয়ান নেতাদের একটি বড় অংশ চাইছে আম্মার মৃত্যুর পর সংগঠনের হাল ধরুন শশিকলা। সে কারণে তাঁকে দলের সাধারণ সম্পাদক করার প্রস্তাব দিয়েছেন তাঁরা। দলের মুখপাত্র সি পন্নিয়ান আজ বলেন, ‘‘এম জি রামচন্দ্রনের বিবেক ছিলেন জয়ললিতা, তেমনি পরবর্তী কালে জয়ললিতার বিবেক বলে গণ্য হতেন চিন্নাম্মা শশিকলা। দলকে অটুট রাখতে শশিকলার বড় ভূমিকা রয়েছে। আমার বিশ্বাস তাঁকে সাধারণ সম্পাদক করার প্রশ্নে দলে মতপার্থক্য হবে না।’’
এডিএমকে এই দাবি করলেও, সমস্যা রয়েছে। এমজিআর জীবদ্দশাতেই জয়ললিতাকে রাজনৈতিক গুরুত্ব দিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু জয়া কখনওই শশিকলাকে উত্তরসূরি হিসাবে ঘোষণা করেননি। উল্টে দল থেকে দু-দু’বার তাঁকে বার করে দিয়েছিলেন জয়া। এমনকী শশিকলার বিরুদ্ধে বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগও এনেছিলেন জয়ললিতা। কিন্তু জয়া হাসপাতালে যাওয়ার পর থেকেই পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে তুলে নেন শশিকলা। স্পষ্ট হয়ে যায়, তিনিই আম্মার উত্তরাধিকারী হয়ে উঠতে চাইছেন।
কিন্তু শশিকলার সেই ইচ্ছেয় প্রধান কাঁটা মুখ্যমন্ত্রী পনীরসেলভম। ক্ষমতা কার হাতে থাকবে তা নিয়ে ইতিমধ্যেই দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে দল ও প্রশাসনের মধ্যে। শশিকলা ও পনীরসেলভম দু’জনই জয়ললিতার ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। প্রশাসনিক কাজে জয়ললিতা যেমন পনীরসেলভমের উপরে ভরসা রাখতেন, তেমনি একটা সময় পর্যন্ত দলের ঘরোয়া বিষয়ে শশিকলাই ছিলেন শেষ কথা।
শশিকলার অবর্তমানে জয়ললিতার আরও কাছাকাছি চলে আসেন পনীরসেলভম। এমনকী অনুগত পনীরকেই মুখ্যমন্ত্রী পদে বসিয়ে জেলে গেলে যান জয়া। আম্মার মৃত্যুর পরে তাই পনীরসেলভমকেই মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত করা হয়েছে। সূত্রের খবর, পনীরসেলভমের পদপ্রাপ্তিতে অখুশি দলের প্রবীণ শিবিরই শশিকলাকে দলের মাথায় বসাতে চাইছেন। ডানা ছাঁটতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রীর। কিন্তু বিধায়কদের সম্পূর্ণ সমর্থন আবার রয়েছে পনীরের প্রতি। ফলে এই মুহূর্তে দলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে রীতিমতো টানাপড়েন চলছে শশিকলা ও পনীর শিবিরের মধ্যে।
শশিকলার স্বস্তির বিষয় হল ইতিমধ্যেই পনীরসেলভম তাঁর সমর্থনে মুখ খুলেছেন। যদিও
আটঘাট বেঁধেই এগোতে চাইছেন শশিকলা। ঘনিষ্ঠ মহলে শশিকলা জানিয়েছেন, তাঁর মনোনয়ন নিয়ে ঐকমত্য হলে একমাত্র তবেই তিনি সাধারণ সম্পাদকের পদ নেবেন। কারণ দলের নেতৃত্ব নিয়ে ঝগড়ার বার্তা গেলে ফায়দা নেবে ডিএমকে। আপাতত তাই ধীরেই চলতে চাইছেন শশিকলা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy