Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
Cyclone Biparjoy

কয়েক ঘণ্টার মধ্যে আছড়ে পড়বে ‘বিপর্যয়’, ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা দেশের উপকূলবর্তী এলাকায়

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে রাজস্থান, পঞ্জাব, হরিয়ানা, নয়াদিল্লি এবং উত্তর প্রদেশে। আগামী চার দিন এই এলাকাগুলিতে হালকা বৃষ্টি হতে পারে। সঙ্গে বইতে পারে ঝোড়ো হাওয়াও।

Cyclone Biparjoy

উপকূলবর্তী এলাকায় আছড়ে পড়ছে সমুদ্রের ঢেউ। ছবি: পিটিআই।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
মুম্বই শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০২৩ ০৯:২৪
Share: Save:

‘বিপর্যয়’ আছড়ে পড়ার আর কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা। আশঙ্কার প্রহর গুনতে শুরু করে দিয়েছেন গুজরাতের বাসিন্দারা। মৌসম ভবন সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টে থেকে সন্ধ্যা ৮টার মধ্যে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিয়ে গুজরাতের পশ্চিম উপকূলবর্তী এলাকায় আছড়ে পড়বে ‘বিপর্যয়’। ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে পাকিস্তানেও। মঙ্গলবার মধ্যরাতে ‘বিপর্যয়ে’র অবস্থান ছিল জখৌ বন্দর থেকে ২০০ কিলোমিটার পশ্চিম এবং দক্ষিণ-পশ্চিমে।

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে রাজস্থান, পঞ্জাব, হরিয়ানা, নয়াদিল্লি এবং উত্তরপ্রদেশে। আগামী চার দিন এই রাজ্যগুলিতে হালকা বৃষ্টি হতে পারে। সঙ্গে বইতে পারে ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়াও। গুজরাত এবং পাকিস্তানের মধ্যবর্তী উপকূলবর্তী অঞ্চলের উপর দিয়ে প্রতি ঘণ্টায় ১৫০ কিলোমিটার গতিবেগে ঝড় বইতে পারে। গুজরাতের কচ্ছ এবং সৌরাষ্ট্রে লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। গুজরাতের মাণ্ডবী এবং পাকিস্তানের করাচির নিকট জখৌ বন্দরের উপর দিয়ে ঘূর্ণিঝড় আরও উত্তর দিকে এগিয়ে যেতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দফতর। গুজরাত এবং পাকিস্তানের পাশাপাশি সতর্কতা জারি করা হয়েছে কেরল, তামিলনাড়ু, রাজস্থান, কর্নাটক, মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ, গোয়া, দমন ও দিউ, লক্ষদ্বীপ এবং দাদর ও নগরহাভেলিতে। ‘বিপর্যয়ের’ কারণে কচ্ছ, পোরবন্দর, দ্বারকা, গির, সোমনাথের মতো এলাকায় দু’দিনের জন্য স্কুল বন্ধ রাখা হয়েছে। পুণ্যার্থীদের জন্য বন্ধ হয়ে গিয়েছে দেবভূমি দ্বারকার দ্বারকাধীশ মন্দিরের দরজা। পোরবন্দর এবং ওখায় পাঁচটি বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর পাশাপাশি ভালসুরায় ১৫টি জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর দল মোতায়েন করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই গুজরাতের উপকূলবর্তী এলাকা থেকে ৫০ হাজার মানুষকে সরিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কার মধ্যে বুধবার বিকেলে ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছিল গুজরাত। রিখটার স্কেলে বুধবারের ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৩.৫। কম্পনের উৎসস্থল ছিল ভচাউ থেকে পাঁচ কিলোমিটার পশ্চিম দক্ষিণ-পশ্চিমে। গান্ধীনগরের ইনস্টিটিউট অফ সিসমোলজিক্যাল রিসার্চ জানিয়েছে, বুধবার বিকেল ৫.০৫ নাগাদ কচ্ছে ভূমিকম্প হয়। তবে এর ফলে কোনও ক্ষয়ক্ষতির কথা জানা যায়নি। মঙ্গলবার থেকেই মুম্বইয়ে ‘বিপর্যয়ে’র কারণে জলোচ্ছ্বাস দেখা গিয়েছে। উত্তাল হয়ে উঠেছে সমুদ্র। মৎস্যজীবীদের আপাতত সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। ১৯৬৫ সালের পর থেকে জুন মাসে এই নিয়ে গুজরাতে তৃতীয় বার ঘূর্ণিঝড়ের ভ্রুকুটি।

‘বিপর্যয়ে’র মোকাবিলায় প্রশাসনের তরফে কী রকম প্রস্তুতি রয়েছে, তা খতিয়ে দেখতে সোমবার বৈঠক করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পরে তিনি গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র পটেলের সঙ্গেও ফোনে যোগাযোগ করেন। ‘বিপর্যয়’ মোকাবিলায় কেন্দ্রের তরফে প্রয়োজনীয় সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। প্রশাসনের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে গুজরাতে গিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডবীয়। বায়ুসেনা ঘাঁটিতে গিয়ে আপৎকালীন চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়েও খুঁটিনাটি আলোচনা করেন তিনি। ভিডিয়ো কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যাঙ্ক এবং বিমা সংস্থার উচ্চ আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনও।

অন্য বিষয়গুলি:

Cyclone Biparjoy Gujarat Pakistan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE