আদানি কাণ্ডের প্রতিবাদে তৃণমূলের মিছিল। ছবি: সংগৃহীত।
কোনও রাজনৈতিক দলকে স্মরণকালে সংসদের করিডরে স্লোগান দিয়ে মিছিল করতে দেখা যায়নি। আজ সেই বিরল ঘটনার সাক্ষী রইল বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয়ার্ধ। একটি নয়, আদানি কাণ্ডের প্রতিবাদে এক জোড়া মিছিল হয়েছে সংসদের করিডরে। একতলায় মিছিল করে তৃণমূল কংগ্রেস, আর দোতলায় মিছিল করল কংগ্রেস-সহ বাকি বিরোধীরা।
দু’দিন আগে তৃণমূলের সংসদীয় দলের নেতৃত্ব স্থির করেন তাঁরা অভিনব কায়দায় (সংসদ ভবনের করিডরে মিছিল) গৌতম আদানিকে গ্রেফতারের দাবি তুলবেন। আজ দুই কক্ষের অধিবেশন মুলতুবির পরেই বাংলার শাসক দলের সাংসদেরা তাঁদের সংসদীয় অফিসে জড়ো হন। নরেন্দ্র মোদী-আদানির ছবিওয়ালা এবং আদানিকে গ্রেফতারের স্লোগান লেখা টুপি নিয়ে আসা হয়। তাঁরা বড় কাগজে আদানি-বিরোধী বার্তা লিখে যখন নিজেদের সংসদীয় অফিসের বাইরে দাঁড়িয়ে মিছিলের প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তখন কংগ্রেসের নেতৃত্বে ১৭ দলের বিরোধী সাংসদেরা যৌথ সংসদীয় কমিটির তদন্তের দাবি লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে উল্টোদিক থেকে আসেন। আচমকা মুখোমুখি হয়ে পড়ায় কিছুক্ষণের জন্য হতচকিত দেখায় উভয়পক্ষকেই। তৈরি হয় নৈঃশব্দও। এরপর তৃণমূলের পাশ কাটিয়ে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন মিছিলটি দোতলায় চলে যায়।
আর দোলা সেনের নেতৃত্বে স্লোগান দিতে দিতে তৃণমূলের মিছিলটি করিডর দিয়ে মূল প্রবেশ দ্বারের সামনে খানিক্ষণ দাঁড়ায়। সেখানেও চলতে থাকে স্লোগান। তাঁরা দাবি তোলেন, আদানিকে জেলে ভরতে হবে, মোদীকে মুখ খুলতে হবে। এর পরে পদযাত্রা করে বিজয় চকে পৌঁছে সাংবাদিক বৈঠক করেন তৃণমূলের সাংসদেরা। দলের লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “অগুন্তি মানুষ ভরসা করে এলআইসি এবং এসবিআইয়ে টাকা রেখেছিলেন। তা আদানিকে দিয়ে দেওয়া হয়েছে। এটা ১ লক্ষ ২০ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি। কিন্তু সংসদে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে দিচ্ছে না মোদী সরকার। আলোচনা না হওয়ার জন্য কংগ্রেসও দায়ী বলে মনে করি।” রাজ্যসভার তৃণমূলের দলনেতা ডেরেক ও ব্রায়েন বলেন, “এসবিআই এবং এলআইসি তো বটেই, পিএনবি, ইউকো ব্যাঙ্কের টাকাও নয়ছয় হয়েছে। বিজেপি এই দুর্নীতিতে আদানির অংশীদার।”
কংগ্রেস যে আজ সংসদের করিডরে মিছিল করবে তা সকালে ঠিক হয় রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খড়্গের ঘরে। তৃণমূলের একাংশের মতে, সংবাদমাধ্যমে তাদের অভিনব পরিকল্পনা প্রকাশের পরে, কংগ্রেসের এই ভাবনা মাথাচাড়া দিয়েছে। যদিও কংগ্রেস নেতৃত্বের বক্তব্য, তাঁদের তরুণ সাংসদ ইমরান প্রতাপগড়ি এই ভাবনাটি নিয়ে আসেন। তাঁর প্রস্তাব ছিল, আদানি কাণ্ডে এলআইসি, এসবিআইয়ের টাকা মার যাওয়ার আশঙ্কা যেহেতু তৈরি হয়েছে, তাই সংসদের দোতলায় এসবিআই শাখার সামনে হোক ধর্না-মিছিল। প্রবীণেরা সেই প্রস্তাব লুফে নেন।
দিনের শেষে কংগ্রেসের বক্তব্য, এই ধরনের কিছু যে করা যেতে পারে তা বিরোধীরা একজোট হয়ে করে দেখিয়ে দিয়েছেন। বিরোধী সাংসদেরা সংসদ ভবনের দোতলায় থাম থেকে কালো ব্যানার ঝুলিয়েছেন। তাতে লেখা, ‘আমরা যৌথ সংসদীয় কমিটির তদন্ত চাই’। এমন ভাবে এই ব্যানার ঝোলানো হয়েছে যার মুখ গান্ধী মূর্তির দিকে। কংগ্রেস-সহ বিরোধীদের স্লোগান, ‘মোদী-আদানি ভাই ভাই, দেশকে বেচে খাই মালাই’।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy