মণিপুরের চূরাচান্দপুর জেলার জেনহাঙে মার জনজাতির নেতা রিচার্ড মারের উপর হামলার প্রতিবাদে আরও এক বার অশান্ত হয়ে উঠল মণিপুর। সোমবার সকাল থেকেই চূরাচান্দপুর জেলায় ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতার (বিএনএসএস) ১৬৩ ধারা জারি করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার সন্ধ্যায় জেনহাঙের ভিকে মন্টেসরি স্কুলচত্বরের ভিতর মারদের সংগঠন ‘মার ইনপুই’য়ের সাধারণ সম্পাদক রিচার্ডের উপর হামলা চালায় অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীরা। সেই হামলার পর থেকেই বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন মারেরা। গোটা জেলায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। অভিযোগ, রিচার্ডের গাড়িতে গিয়ে ধাক্কা মেরেছিল একটা দু’চাকার গাড়ি। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিবাদ শুরু হয়। সেই বিবাদ থেকেই একসময়ে রিচার্ডের উপর হামলা চালানো হয়।
আরও পড়ুন:
অশান্তি বাড়তে শুরু করলে চূরাচান্দপুরের অতিরিক্ত জেলাশাসক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে গোটা জেলায় ১৬৩ ধারা জারি করেন। নিষেধাজ্ঞা থাকাকালীন অনুমতি ছাড়া কোনও মিছিল কিংবা সমাবেশের আয়োজন করা যাবে না। পাঁচ বা ততোধিক লোকের জমায়েতও নিষিদ্ধ। কেউ লাঠি, পাথর বা কোনও রকমের অস্ত্র বহন করতে পারবেন না।
অন্য দিকে, নেতার উপর হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ‘মার ইনপুই’। দোষীদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবিও জানিয়েছে তারা। ন্যায়বিচার না পেলে বৃহত্তর আন্দোলনের পথে হাঁটার হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, সোমবার সকাল থেকে চূরাচান্দপুর শহরে বন্ধ কার্যকর করার চেষ্টা করছেন বিক্ষোভকারীরা। কোথাও কোথাও লাঠি হাতে অনেককেই রাস্তায় টহল দিতে দেখা যাচ্ছে। কোথাও আবার পুলিশ ও নিরাপত্তাবাহিনীকে লক্ষ্য করে পাথর ছোড়ার ঘটনাও ঘটেছে বলে খবর পাওয়া গিয়েছে।
আরও পড়ুন:
প্রসঙ্গত, শুধু চূরাচান্দপুরই নয়, অশান্তি চলছে রাজ্যের বাকি জেলাতেও। চলতি মাসের শুরুতে মণিপুরের কুকি জনজাতি অধ্যুষিত এলাকায় যে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের ডাক দেওয়া হয়েছিল, গত ১৩ মার্চ তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়৷ কুকি জো কাউন্সিলের তথ্যসচিব কে গাঙতে জানান, নিরাপত্তাবাহিনীর গুলিতে কুকি যুবক লালগৌথাং সিংসিটের মৃত্যুর প্রতিবাদেই তাঁরা অনির্দিষ্টকাল বন্ধ ডেকেছিলেন৷ তাঁর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হতে বন্ধ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা৷ তবে এ-ও জানানো হয়েছে, বন্ধ প্রত্যাহার করা হলেও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ যে অবাধ যান চলাচলের নির্দেশ দিয়েছেন, তা তাঁরা মানবেন না৷ দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা ‘অবাধ চলাচল’-এর বিরোধিতা করে যাবেন৷