ছবি: রয়টার্স।
‘ফণী’কে নিয়ে উদ্বেগ কাটতে না কাটতেই মাসখানেকের মধ্যে এসে গেল ‘বায়ু’। গভীর নিম্নচাপের ফলে ঘূর্ণিঝড় ‘বায়ু’র সৃষ্টি হয়েছে লক্ষদ্বীপের কাছে, আরব সাগরে। দ্রুত তা এগিয়ে চলেছে উত্তর দিকে। ভয়াবহ সাইক্লোন হয়ে ‘বায়ু’ আগামী কালই আছড়ে পড়বে গুজরাত উপকূলে। বৃহস্পতিবার যার গতিবেগ হবে ঘণ্টায় ১২০ থেকে ১৫০ কিলোমিটার। মৌসম ভবন সূত্রে এই খবর পাওয়া গিয়েছে। তবে পশ্চিমবঙ্গের মানুষের জন্য সুখবর এইটুকুই, কেরলে বর্ষা ঢুকে গিয়েছে।
ইতিমধ্যেই চূড়ান্ত সর্তকতা জারি করা হয়েছে গুজরাটের উপকূল এলাকায়। কচ্ছ থেকে শুরু করে দক্ষিণ গুজরাটের একটি বিস্তীর্ণ এলাকা পড়ছে সেই উপকূলে। সেখানে আগাম সর্তকতা হিসেবে স্কুল ও কলেজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বুধবার থেকেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলি বন্ধ রাখা হয়েছে গুজরাতে। সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও উপকূল রক্ষী বাহিনীকেও সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে কেরল ও কর্নাটক উপকূল এবং লক্ষদ্বীপের মৎস্যজীবীদের। বুধ ও বৃহস্পতিবার সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে গুজরাত উপকূলের মৎস্যজীবীদের। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ মঙ্গলবার জানান, ‘বায়ু’ আছড়ে পড়ার পর কী কী ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে, ইতিমধ্যেই সেই সব খতিয়ে দেখা হয়েছে।
#CycloneVayu : IAF C-17 aircraft lands at Jamnagar with NDRF team. The NDRF team will carry out #HADR missions in Gujarat, for the people affected by Cyclone Vayu. #savinglives pic.twitter.com/3E0YjsVzeW
— Indian Air Force (@IAF_MCC) June 11, 2019
মৌসম ভবন জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি বৃহস্পতিবার পোরবন্দর এবং মাহুবার মাঝামাঝি কোথাও আছড়ে পড়বে। রাস্তা থেকে শুরু করে ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। আশঙ্কা রয়েছে বহু ঘরবাড়ি ভেঙে পড়ার। বুধবার সকালে বিমানবাহিনীর ‘সি-১৭’ বিমানে চাপিয়ে জামনগরে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর (এনডিআরএফ) আধিকারিক ও উদ্ধার কর্মীদের। বায়ু আছড়ে পড়ার পর তাঁরা নেমে পড়বেন উদ্ধার কাজে। বিএসএফকেও উদ্ধার কাজে লাগানো হবে বলে গুজরাত প্রশাসন সূত্রে খবর। গুজরাত এবং দমন-দিউ মিলিয়ে মোট তিন লক্ষ মানুষকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তাঁদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে মোট ৭০০টি কেন্দ্রে।
আরও পড়ুন- ১০৯ ঘণ্টার লড়াই থামল, কূপ থেকে উদ্ধার করেও বাঁচানো গেল না দু’বছরের শিশুকে
আরও পড়ুন- ফণীতে ধ্বংস বাড়ি, সপরিবার শৌচালয়ে
মৌসম ভবন সূত্রের খবর, ঘূর্ণিঝড়টি ইতিমধ্যেই সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্ট্রর্মে পরিণত হয়েছে। আর তার জেরে কচ্ছ, দ্বারকা, দেবভূমি, জুনাগর, সোমনাথ, আমরেলি, ভাবনা, কার-সহ বিভিন্ন জায়গায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। শনিবার পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে বারণ করা হয়েছে। শুধু গুজরাত নয়, মহারাষ্ট্র উপকূলের জন্যও এই সতর্কতা জারি থাকছে। বুধ ও বৃহস্পতিবারের জন্য।
গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রুপানি দ্বারকা ও সোমনাথে থাকা পর্যটকদের বুধবার বিকেলের মধ্যেই অন্যত্র চলে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। পর্যটকদের সাহায্য করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যের পরিবহন সংস্থাগুলোকে। টুইট করে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী বলেছেন, ‘‘ঘূর্ণিঝড় ‘বায়ু’ গুজরাতের দিকে এগোচ্ছে। আমি কংগ্রেসের সব কর্মীকে অনুরোধ করছি আপনারা মানুষের পাশে থাকুন।’’
মৌসম ভবন জানিয়েছে, আরব সাগরে লক্ষদ্বীপের উপকূলে আমিনিদিবিতে সৃষ্টি হয়েছে বায়ুর। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই তা আরও শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারে। তার পর সেটি হবে উত্তরমুখী। ভেরাবল ও দিউয়ের কাছে, পোরবন্দর থেকে মাহুবার মধ্যে দিয়ে সেই ভয়াবহ ঘূর্ণি ঝড় বায়ু আছড়ে পড়বে গুজরাত উপকূলে। ঝড়ের গতিবেগ থাকবে গড়ে ঘণ্টায় ১১০ থেকে ১২০ কিলোমিটার। বৃহস্পতিবার ভোরে যা ঘণ্টায় ১৩৫ বা ১৫০ কিলোমিটারও হতে পারে।
আবহবিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, বুধবার (১২ জুন) বায়ুর গতিবেগ বেড়ে হতে পারে ঘণ্টায় ১১০ থেকে ১২০ কিলোমিটার। তা আরব সাগরের পূর্ব-মধ্য দিক থেকে এগতে থাকবে উত্তর-পূর্ব দিকে। বুধবার সকাল থেকেই বায়ুর ঝাপটা টের পেতে শুরু করবে গুজরাত উপকূল। বিশেষ করে সৌরাষ্ট্র ও কচ্ছের মধ্যে পোরবন্দর থেকে মাহুবা পর্যন্ত এলাকা। ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৭০ কিলোমিটার গতিবেগের ঝড়ে আলোড়িত হতে পারে মহারাষ্ট্র উপকূলও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy