প্রতীকী ছবি।
কর্নাটকে হিজাব বিতর্ক আজ নতুন মোড় নিয়েছে মুসলিম ছাত্রীদের একাংশের ক্লাস ও পরীক্ষা বয়কটের হুঁশিয়ারির মধ্য দিয়ে। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের স্কুলগুলিতে বিক্ষিপ্ত ভাবে এই ছবি ফুটে উঠেছে। এই জটিলতার মধ্যেই আগামিকাল রাজ্যের কলেজগুলি খোলার কথা রয়েছে।
কর্নাটকের কোডাগু জেলার একটি স্কুলে আজ হিজাব পরে এসেছিল বেশ কিছু মুসলিম ছাত্রী। স্কুল কর্তৃপক্ষ ক্লাসে ঢোকার আগে তাদের হিজাব খুলে ফেলতে বলেন। এতে রাজি হয়নি ছাত্রীরা। ওই নির্দেশের বিরোধিতা করে বিক্ষোভ দেখিয়ে ক্লাস বয়কট করেছে অন্তত কুড়ি জন ছাত্রী। শিমোগা জেলার একটি স্কুলে এক ছাত্রী দশম শ্রেণির পরীক্ষা বয়কট করেছে হিজাব পরে ক্লাসে ঢোকার অনুমতি না মেলায়। স্কুল কর্তৃপক্ষ হিজাব খুলে তাঁকে পরীক্ষায় বসার নির্দেশ দিয়েছিল। ওই ছাত্রী সাংবাদিকদের বলেছে, ‘‘ছোটবেলা থেকে হিজাব পরে এসেছি। এখন ছেড়ে ফেলা সম্ভব নয়। পরীক্ষা দেব না, বাড়ি যাচ্ছি।’’ কর্নাটকের বিভিন্ন জায়গা থেকে আজ খবর সামনে এসেছে, হিজাব পরে আসা ছাত্রীদের ক্লাসে ঢোকার অনুমতি মেলেনি। বেশ কিছু জায়গায় এ নিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশের সঙ্গে তর্ক শুরু হয়ে যায় অভিভাবকদের। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ধরনের ভিডিয়ো সামনে এসেছে।
চিকমাগালুর জেলার একটি সরকারি স্কুলে মুসলিম ছাত্রীরা হিজাব পরে আসায় তাদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এরপরেই অভিভাবকেরা ক্যাম্পাসে ঢুকে স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। লিখিত ভাবে নির্দেশ দেওয়ার জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানাতে থাকেন তাঁরা। এর মধ্যেই এক ছাত্র স্কুল ব্যাগ থেকে গেরুয়া স্কার্ফ বার করে। শিক্ষকদের নির্দেশের পর অবশ্য সেটি ব্যাগের ভিতরে ঢুকিয়ে নেয় সে। স্পর্শকাতর পরিস্থিতিতে আজকের মতো স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হয়। ওই জেলারই অন্য একটি স্কুলে হিজাব পরে ছাত্রীদের স্কুলে আসার অনুমতি না মেলায় অভিভাবকেরা ক্যাম্পাসে ঢুকে কর্তৃপক্ষের জবাব চান। পুলিশের সঙ্গে অভিভাবকদের তর্কাতর্কি হয়। টুমাকুরুতেও একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। আগামিকাল কলেজ খোলার আগে টুমাকুরুতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতেই কর্নাটক হাই কোর্টে আজও হিজাব বিতর্ক নিয়ে শুনানি চলেছে। আবেদনকারী মুসলিম ছাত্রীদের আইনজীবী দেবদত্ত কামাথ সুপ্রিম কোর্টের রায়কে উল্লেখ করে বলেন, ‘‘কোনও ব্যক্তির ধর্মীয় ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন তোলা যায় না। অন্য কোনও ব্যক্তি এমনকি রাষ্ট্রও এটা করতে পারে না।’’ হিজাব পরা নিয়ে বিভিন্ন দেশের আদালতের রায়কেও তুলে ধরেন তিনি। আমেরিকার একটি রায়কে নিয়ে তাঁর মন্তব্য, ‘‘বাধাদানকারী ব্যক্তি কারও মৌলিক অধিকারকে খর্ব করতে পারেন না।’’ আগামিকালও এই মামলার শুনানি চলবে। জানা গিয়েছে, হাই কোর্টের অন্তর্বর্তী রায়ের পর রাজ্য সরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হিজাব পরে আসা নিয়ে নতুন গাইডলাইন আনার কথা ভাবছে। মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাই এ নিয়ে শিক্ষা ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন। এরই মধ্যে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আরাগা জ্ঞানেন্দ্র দাবি করেছেন, কোনও কোনও ধর্মীয় সংগঠন পড়ুয়াদের সামনে রেখে সমাজে বিভাজন ঘটানোর চেষ্টা করছে। তিনি জানান, সরকার এদের চিহ্নিত করে আইনি ব্যবস্থা নেবে।
হিজাব বিতর্ক রাজনীতির অঙ্গনেও ঝড় তুলেছে। বিজেপির কর্নাটক শাখা তাদের ওয়েবসাইটে নাবালিকা ছাত্রীদের ঠিকানা পোস্ট করল কী ভাবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শিবসেনা সাংসদ প্রিয়ঙ্কা চতুর্বেদী। এই ঘটনাকে লজ্জাজনক আখ্যা দিয়েছেন তিনি। টুইটার ও কর্নাটকের পুলিশের কাছে বিষয়টি জানিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy