(বাঁ দিকে) ভোলে বাবা। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সঙ্গে কথা বলছেন পুলিশ আধিকারিকেরা (ডান দিকে)। ছবি: পিটিআই।
হাথরসকাণ্ডে গ্রেফতার হলেন ছ’জন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁরা সকলেই ‘সৎসঙ্গের সেবাদার’ ছিলেন। এই ঘটনায় শিশু, মহিলা-সহ ১২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার রাত থেকে স্বঘোষিত ধর্মগুরু ভোলে বাবার আশ্রমে তল্লাশি চালায় উত্তরপ্রদেশ পুলিশের ‘স্পেশ্যাল অপারেশন গ্রুপ’ (এসওজি)। তবে মূল অভিযুক্ত ‘গুরুর মুখ্য সেবাদার’ দেবপ্রকাশ মধুকরের এখনও খোঁজ মেলেনি। এই ঘটনায় কেন ভোলে বাবাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে না পুলিশ, সেই নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, প্রয়োজনে তাঁকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
বৃহস্পতিবার গ্রেফতারির পর পুলিশের ইনস্পেক্টর জেনারেল (আলিগড়) শলভ মাথুর বলেন, ‘‘যে ছ’জন গ্রেফতার হয়েছেন, তাঁরা সকলেই সৎসঙ্গে সেবাদার ছিলেন।’’ ঘটনার পর থেকে নিখোঁজ ভোলে বাবা এবং মধুকর। আইজি বলেন, ‘‘মূল অভিযুক্ত মধুকরকে ধরার জন্য এক লক্ষ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করা হবে। জামিনঅযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি করা হবে।’’ কেন ভোলেবাবাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে না, সেই প্রশ্নের জবাবে মাথুর বলেন, ‘‘তদন্তে যেমন প্রয়োজন হবে, সেই অনুযায়ী গ্রেফতারি চলবে। প্রয়োজনে ভোলে বাবাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এই ঘটনায় তাঁর ভূমিকা রয়েছে কি না, তা বলার মতো সময় আসেনি। এফআইআরেও নাম নেই তাঁর। সেখানে সৎসঙ্গের আয়োজকদের নাম রয়েছে। আয়োজক কমিটির যাঁরা অনুমতি নিয়েছিলেন, তাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে।’’
বৃহস্পতিবার জেলাশাসক আশিস কুমার জানিয়েছেন, হাথরসে পদপিষ্ট হয়ে মৃতদের দেহ শনাক্ত করে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘শেষ দেহটি ভিডিয়ো কলের মাধ্যমে শনাক্ত করেছেন পরিবারের সদস্যেরা। দেহ নিতে তাঁরা আলিগড় হাসপাতালের পথে রওনা হয়েছেন।’’
মঙ্গলবার হাথরসে ভোলে বাবার ‘সৎসঙ্গ’-এর আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে উপস্থিত হন আড়াই লক্ষ ভক্ত। অভিযোগ, সেই তুলনায় পর্যাপ্ত ব্যবস্থা ছিল না। অনুষ্ঠানের পর গুরুর পায়ের ধুলো নিতে হুটোপাটি পড়ে যায়। পদপিষ্ট হয়ে মারা যান ১২১ জন। তার পর থেকে খোঁজ মেলেনি মধুকরের। তবে বুধবার ভোলে বাবা একটি বিবৃতি দিয়ে ‘সমাজবিরোধী’দের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। মৃতদের পরিবারকে সমবেদনাও জানিয়েছেন ভোলে বাবা, যাঁর আসল নাম ছিল সুরজপাল সিংহ। পরে তিনি নারায়ণ সাকার হরি নাম নেন।
বুধবার ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। আহতদের সঙ্গে দেখা করেন। তার পরেই প্রশ্ন ওঠে এফআইআরে কেন নাম নেই ধর্মগুরুর। যোগী বলেন, ‘‘যাঁরা অনুষ্ঠানের অনুমতি নিয়েছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধেই প্রাথমিক ভাবে মামলা দায়ের হয়েছে। যাঁরা এর জন্য দায়ী, সকলের বিরুদ্ধেই পদক্ষেপ করা হবে।’’
বুধবার রাত থেকে মধুকরের খোঁজে চলছে তল্লাশি। তেমনই এক তল্লাশি অভিযানে উত্তরপ্রদেশের মইনপুরিতে ‘ভোলে বাবা’র আশ্রমে অভিযান চালায় উত্তরপ্রদেশ পুলিশের ওই বিশেষ দল। সূত্রের খবর, মৈনপুরির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নগর) রাহুল মিঠাস ২০-২৫ জন পুলিশকর্মীর একটি দল সঙ্গে নিয়ে আশ্রমে ঢোকেন। তার পর থেকে বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত পাওয়া খবর বলছে, তাঁরা বাইরে আসেননি। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে আশ্রমের ভিতরে ভোলে বাবা বুধবার রাতেও ছিলেন না। বৃহস্পতিবারও তাঁর দেখা মেলেনি। আপাতত গোটা আশ্রমের সুরক্ষা ব্যবস্থা খুঁটিয়ে পরীক্ষা করছে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy