মুখ আর মুখোশের দ্বন্দ্ব বিজেপিকে বরাবরই অস্বস্তিতে রেখেছে। দাদরি-কাণ্ড ফের সেই দ্বন্দ্বকে প্রকাশ্যে তুলে আনল।
দাদরিতে প্রৌঢ় খুনে একটি মুখ বলছে, এই ধরনের ঘটনা দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করে! আর অন্য মুখের সওয়াল, মা-কে রক্ষা করতে আমরা নিহত হতে রাজি আছি। রাজি হত্যা করতেও! বিজেপি-র কোন মুখটি আসল, আর কোনটি মুখোশ তাই নিয়ে ধন্দ বেড়েছে। বেড়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর।
গত সোমবার উত্তরপ্রদেশের দাদরিতে বিসারা গ্রামে গোমাংস খাওয়ার গুজবে খুন হতে হয় এক প্রৌঢ়কে। সেই ঘটনা প্রসঙ্গে গত কাল কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি মন্তব্য করেন, ‘‘পরিণত এক সমাজ রয়েছে আমাদের দেশে। সেখানে এমন ঘটনা গোটা বিশ্বের কাছে দেশের নামই অনুজ্জ্বল করে।’’ জেটলির মত, দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করার পক্ষে এই ঘটনা যথেষ্ট। কিন্তু, দলের কেন্দ্রীয় স্তরের নেতা জেটলি এমনটা মনে করলেও বিজেপি-র অন্য একটা অংশ কিন্তু এমন ভাবে দেখেছেন না বিষয়টিকে।
যেমন বিজেপি সাংসদ সাক্ষী মহারাজ। দাদরিতে মহম্মদ আখলাকের খুন হওয়ার প্রসঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমাদের মা-কে যদি কেউ হত্যার চেষ্টা করে, আমরা হাত গুটিয়ে বসে থাকব না। আমরা তাদের হত্যা করার পাশাপাশি নিহত হতেও প্রস্তুত।’’ এর পরই এই ঘটনায় উত্তরপ্রদেশ সরকারের ভূমিকাকে রীতিমতো তুলোধোনা করেছেন তিনি। প্রশ্ন তোলেন, আখলাকের পরিবারকে ৪৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিলেও কেন উন্নাওয়ের ঘটনায় চুপ করে বসে ছিল অখিলেশ-সরকার? তিনি মুখ্যমন্ত্রীর ‘দ্বিমুখী’ এই নীতির সমালোচনা করেন।
দাদরি পরগনার বিসারা গ্রামে ৫০ বছরের মহম্মদ আখলাককে পাথর দিয়ে পিটিয়ে খুন করে জনতা। তিনি গোমাংস খেয়েছিলেন বলে গ্রামে গুজব ছড়িয়েছিল। আখলাকের ছোট ছেলে দানিশকেও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। ওই গ্রামের মন্দিরে একটি ঘোষণা থেকেই সে দিন রাতে হিংসা ছড়িয়ে পড়ে বলে প্রাথমিক তদন্তের পরে জানিয়েছে পুলিশ। এই ঘটনায় অভিযুক্তদের সঙ্গে বিজেপি-র ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল বলে জানা গিয়েছে। মূল অভিযুক্ত হিসেবে এক বিজেপি নেতার ছেলেকে গ্রেফতারও করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy