Advertisement
২১ ডিসেম্বর ২০২৪
RSS on Garbha Sanskar

গর্ভেই সংস্কারী শিশু! এ বার ‘গর্ভ সংস্কার’ কর্মসূচি শুরু করল আরএসএসের মহিলা শাখা

ন্যাসের রাষ্ট্রীয় সচিব মাধুরী মরাঠে দাবি করেছেন, গর্ভাবস্থা থেকেই সংস্কারের প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে। শিশুদের শেখানো উচিত— দেশ সবার উপরে।

Representative image of pregnant woman

ঠিক ভাবে যদি ‘গর্ভ সংস্কার’ করা যায়, তাহলে গর্ভের ভিতরেই সন্তানের ‘ডিএনএ’ বদল করা সম্ভব। প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০২৩ ১০:৩১
Share: Save:

অন্তঃসত্ত্বা মহিলাকে পড়তে হবে রাম, হনুমান কিংবা শিবাজির সংগ্রামের কাহিনি। তার ফলে জন্মের আগে থেকেই গর্ভের সন্তান ভারতীয় সংস্কারে অভ্যস্ত ও দেশপ্রেমী হয়ে উঠবে— রীতিমতো এমন যুক্তি হাজির করে গর্ভবতী মহিলাদের ‘গর্ভ সংস্কার’-এর কর্মসূচি শুরু করে দিয়েছে আরএসএসের মহিলা শাখা রাষ্ট্র সেবিকা সমিতির সঙ্গে জুড়ে থাকা সংগঠন সংবর্ধিনী ন্যাস।

রবিবার দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে স্ত্রী-রোগ বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি সম্মেলনে ‘গর্ভ সংস্কার কর্মসূচি’র রূপরেখা ঠিক করতে গিয়ে বলা হয়েছে, এবার থেকে চিকিৎসকদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করবে ন্যাস। বলা হবে, তাঁরা যেন অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের রাম, হনুমান কিংবা শিবাজীর জীবনের কাহিনি পড়ার পরামর্শ দেন, যাতে গর্ভের সন্তান জন্মের আগে থেকেই ভারতীয় সংস্কার শিখতে শুরু করে দেয় এবং দেশপ্রেমের ভাবনায় অভ্যস্ত হয়ে পড়ে তারা।

এখানেই শেষ নয়, গর্ভবতী মহিলাকে সংস্কৃত বই পড়ার পরামর্শ, কিংবা এক হাজার দিন ধরে গর্ভ সংস্কারের মাধ্যমে ‘সুসন্তান’ গড়ে তোলার পরামর্শও হাজির করা হয়েছে।

তবে ভারতে ‘দেশপ্রেমিক ও সংস্কারী শিশু’ তৈরি করতে সঙ্ঘ শিবিরের এমন দাওয়াই নিয়ে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। বিরোধীদের অনেকেই একে নাৎসি জার্মানিতে হিটলারের ভাবনার সঙ্গে তুলনা করেছেন।

সংবর্ধিনী ন্যাসের কর্মশালায় ১২টি রাজ্যের প্রায় ৮০ জন চিকিৎসক অংশগ্রহণ করেছেন। এদের মধ্যে অধিকাংশই ছিলেন স্ত্রী-রোগ বিশেষজ্ঞ ও আয়ুর্বেদ চিকিৎসক।

কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সাবিত্রী পণ্ডিতের নাম থাকলেও তিনি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন না। ন্যাসের রাষ্ট্রীয় সচিব মাধুরী মরাঠে দাবি করেছেন, গর্ভাবস্থা থেকেই সংস্কারের প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে। শিশুদের শেখানো উচিত— দেশ সবার উপরে। এই প্রসঙ্গে তিনি ছত্রপতি শিবাজির মা জীজাবাঈয়ের উদাহরণ টেনে আনেন। বলেন, গর্ভবতী মহিলাদের উচিত তাঁর মতোই প্রার্থনা করা— যাতে শিশুর মধ্যে হিন্দু শাসকের গুণ ফুটে ওঠে। মাধুরীর কথায়, ‘‘গর্ভাবস্থা এবং শিশুর জন্মের পরের দুই বছর— অর্থাৎ, এক হাজার দিন ধরে ‘গর্ভ সংস্কার’ করা হলে পরবর্তী প্রজন্মকে আমরা দেশপ্রেমী করে তুলতে পারি, এই সন্তানেরা মহিলাদেরও সম্মান দেবে।’’

কর্মশালায় বলা হয়েছে, গর্ভাবস্থায় মহিলাদের গীতা ও সংস্কৃত বইপত্র পড়া উচিত। আরও দাবি করা হয়েছে, ঠিক ভাবে যদি ‘গর্ভ সংস্কার’ করা যায়, তা হলে গর্ভের ভিতরেই সন্তানের ‘ডিএনএ’ বদল করা সম্ভব।

কর্মশালায় চিকিৎসক রজনী মিত্তল বলেছেন, আমাদের লক্ষ্য, দেশে প্রতি বছর ‘গর্ভ সংস্কার’-এর মাধ্যমে এক হাজার শিশুর জন্ম দেওয়ানো। এর ফলে ভারতের পুরনো গৌরব ফিরে আসতে পারে। তাঁর যুক্তি, ভারতে এখন অপরাধ অনেক বেড়ে গিয়েছে। ধর্ষক হয়ে উঠেছে অনেকে। সন্তানের হাতে বাবা-মায়ের হত্যার খবরও শোনা যায়। এই পরিস্থিতিতে রামের মতো সন্তান যদি হয়, মহিলারা নিশ্চয়ই খুশি হবেন। কর্মশালায় আরও দাবি করা হয়েছে, শিশুর লিঙ্গ নির্ধারণের বিষয়ে ভাবার কারণেই আজকাল সমকামী শিশুর জন্ম হচ্ছে।

অন্য বিষয়গুলি:

RSS Pregnancy
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy