Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Ritu Karidhal

ছাদে শুয়ে আকাশ দেখতেন মঙ্গল থেকে চন্দ্র অভিযানের অন্যতম এই বিজ্ঞানী

চাঁদে যেতে চান, মাকে বলতেন ঋতু। শুনে হেসে মা বলতেন, তার জন্য টাকা জমাতে হবে। যেখান থেকে যা টাকা পেতেন, ঋতু জমাতেন। নইলে তার মতো সাধারণ পরিবারের মেয়ে কী করে চাঁদে পাড়ি দেবে!

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৩:২৫
Share: Save:
০১ ১২
রাতের আকাশ পাগলের মতো টানত কিশোরীকে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ছাদে শুয়ে শুয়ে তারা দেখত সে। মনে চলে যেত আকাশগঙ্গা বেয়ে। তারাদের দেশে হারিয়ে যাওয়া সে দিনের কিশোরী আজ অভিজ্ঞ বিজ্ঞানী। ছুঁয়ে ফেলেছেন চাঁদের মাটি।  (ছবি : সোশ্যাল মিডিয়া)

রাতের আকাশ পাগলের মতো টানত কিশোরীকে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ছাদে শুয়ে শুয়ে তারা দেখত সে। মনে চলে যেত আকাশগঙ্গা বেয়ে। তারাদের দেশে হারিয়ে যাওয়া সে দিনের কিশোরী আজ অভিজ্ঞ বিজ্ঞানী। ছুঁয়ে ফেলেছেন চাঁদের মাটি। (ছবি : সোশ্যাল মিডিয়া)

০২ ১২
ছোটবেলা থেকেই রাতে পড়াশোনা করতে ভালবাসতেন লখনউয়ের ঋতু করিধাল। যখন নিশ্চুপ হয়ে যেত পাড়া। বই খুলে বসতেন লখনউয়ের মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে, ঋতু। পাশে পেতেন মাকেও। সংসারের কাজ সেরে ঘুম চোখে হলেও পড়ার সময় মেয়েকে সঙ্গ দিতেন তিনি।

ছোটবেলা থেকেই রাতে পড়াশোনা করতে ভালবাসতেন লখনউয়ের ঋতু করিধাল। যখন নিশ্চুপ হয়ে যেত পাড়া। বই খুলে বসতেন লখনউয়ের মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে, ঋতু। পাশে পেতেন মাকেও। সংসারের কাজ সেরে ঘুম চোখে হলেও পড়ার সময় মেয়েকে সঙ্গ দিতেন তিনি।

০৩ ১২
চাঁদে যেতে চান, মাকে বলতেন ঋতু। শুনে হেসে মা বলতেন, তার জন্য টাকা জমাতে হবে। যেখান থেকে যা টাকা পেতেন, ঋতু জমাতেন। নইলে তার মতো সাধারণ পরিবারের মেয়ে কী করে চাঁদে পাড়ি দেবে!

চাঁদে যেতে চান, মাকে বলতেন ঋতু। শুনে হেসে মা বলতেন, তার জন্য টাকা জমাতে হবে। যেখান থেকে যা টাকা পেতেন, ঋতু জমাতেন। নইলে তার মতো সাধারণ পরিবারের মেয়ে কী করে চাঁদে পাড়ি দেবে!

০৪ ১২
আকাশপাঠের সঙ্গে সমান তালে চলতে থাকে বই পড়া। সবথেকে প্রিয় বিষয় ছিল গণিত আর পদার্থবিদ্যা। লখনউয়ের নবযুগ কন্যা বিদ্যালয়ের পরে মহিলা বিদ্যালয় পি জি কলেজ। সেখান থেকে পদার্থবি়জ্ঞানে স্নাতক হওয়ার পরে লখনউ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর।

আকাশপাঠের সঙ্গে সমান তালে চলতে থাকে বই পড়া। সবথেকে প্রিয় বিষয় ছিল গণিত আর পদার্থবিদ্যা। লখনউয়ের নবযুগ কন্যা বিদ্যালয়ের পরে মহিলা বিদ্যালয় পি জি কলেজ। সেখান থেকে পদার্থবি়জ্ঞানে স্নাতক হওয়ার পরে লখনউ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর।

০৫ ১২
স্নাতকোত্তরে মেধাবী ফল। শুরু হল উচ্চশিক্ষার জন্য প্রবেশিকা পরীক্ষা। গ্র্যাজুয়েট অ্যাপটিটিউড টেস্ট ইন ইঞ্জিনিয়ারিং বা ‘গেট’-এ ভাল স্কোর করে অ্যারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রির জন্য সুযোগ পান বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্সে। সেখান থেকে এম টেক।

স্নাতকোত্তরে মেধাবী ফল। শুরু হল উচ্চশিক্ষার জন্য প্রবেশিকা পরীক্ষা। গ্র্যাজুয়েট অ্যাপটিটিউড টেস্ট ইন ইঞ্জিনিয়ারিং বা ‘গেট’-এ ভাল স্কোর করে অ্যারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রির জন্য সুযোগ পান বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্সে। সেখান থেকে এম টেক।

০৬ ১২
ইসরোয় চাকরির আবেদন করলেন ঋতু। খুব দেরি করতে হয়নি। ডাক এল, পরীক্ষা ও ইন্টারভিউয়ের। যেতে হবে বেঙ্গালুরুতে। বাবাকে সঙ্গে নিয়ে গেলেন, পরীক্ষা, ইন্টারভিউ দিলেন। পেয়ে গেলেন ইসরোর চাকরিও।

ইসরোয় চাকরির আবেদন করলেন ঋতু। খুব দেরি করতে হয়নি। ডাক এল, পরীক্ষা ও ইন্টারভিউয়ের। যেতে হবে বেঙ্গালুরুতে। বাবাকে সঙ্গে নিয়ে গেলেন, পরীক্ষা, ইন্টারভিউ দিলেন। পেয়ে গেলেন ইসরোর চাকরিও।

০৭ ১২
বাইশ বছর আগে ট্রেনের দ্বিতীয় শ্রেণির কামরায় বাড়ি থেকে দু’হাজার কিলোমিটার দূরে প্রথম চাকরিতে চললেন ঋতু। বাবা, মা, দুই ভাই এবং বোনকে ফেলে।

বাইশ বছর আগে ট্রেনের দ্বিতীয় শ্রেণির কামরায় বাড়ি থেকে দু’হাজার কিলোমিটার দূরে প্রথম চাকরিতে চললেন ঋতু। বাবা, মা, দুই ভাই এবং বোনকে ফেলে।

০৮ ১২
স্কুল কলেজে যে ইসরোর বিভিন্ন খবরের কাটিং জমাতেন ঋতু, ১৯৯৭ সালে যোগ দিলেন সেই সংস্থায়। নবীন বিজ্ঞানী হিসেবে। তার দশ বছর পরে ২০০৭ সালে তদানীন্তন রাষ্ট্রপতি, প্রয়াত এ পি জে আবদুল কালামের হাত থেকে পেয়েছিলেন ‘ইয়ং সায়েন্টিস্ট অ্যাওয়ার্ড’।

স্কুল কলেজে যে ইসরোর বিভিন্ন খবরের কাটিং জমাতেন ঋতু, ১৯৯৭ সালে যোগ দিলেন সেই সংস্থায়। নবীন বিজ্ঞানী হিসেবে। তার দশ বছর পরে ২০০৭ সালে তদানীন্তন রাষ্ট্রপতি, প্রয়াত এ পি জে আবদুল কালামের হাত থেকে পেয়েছিলেন ‘ইয়ং সায়েন্টিস্ট অ্যাওয়ার্ড’।

০৯ ১২
২০১৯ সালে চন্দ্রযান-২ অভিযানে ঋতুই মিশন ডিরেক্টর। এর আগেও ইসরোর বিভিন্ন গবেষণায় তিনি ছিলেন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে। ‘মার্স অরবিটার মিশন’ বা ‘মম’-এর ডেপুটি অপারেশন্স ডিরেক্টর ছিলেন তিনি। ‘মঙ্গলযান’ কোন পথ ধরে যাবে, উৎক্ষেপণের কত দিন কত ঘণ্টায় তা ঢুকে পড়বে মঙ্গলের প্রথম কোনও কক্ষপথে, সেই সব কিছু চূড়ান্ত করার দায়িত্ব ইসরো যাঁদের হাতে দিয়েছিল, ঋতু ছিলেন তাঁদের মধ্যমণি।

২০১৯ সালে চন্দ্রযান-২ অভিযানে ঋতুই মিশন ডিরেক্টর। এর আগেও ইসরোর বিভিন্ন গবেষণায় তিনি ছিলেন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে। ‘মার্স অরবিটার মিশন’ বা ‘মম’-এর ডেপুটি অপারেশন্স ডিরেক্টর ছিলেন তিনি। ‘মঙ্গলযান’ কোন পথ ধরে যাবে, উৎক্ষেপণের কত দিন কত ঘণ্টায় তা ঢুকে পড়বে মঙ্গলের প্রথম কোনও কক্ষপথে, সেই সব কিছু চূড়ান্ত করার দায়িত্ব ইসরো যাঁদের হাতে দিয়েছিল, ঋতু ছিলেন তাঁদের মধ্যমণি।

১০ ১২
বিজ্ঞানসাধনার পাশাপাশি আছে সংসারও। ঋতুর স্বামী অবিনাশ শ্রীবাস্তব চাকরি করেন বেসরকারি সংস্থায়। মেয়ে অনীশা এবং ছেলে আদিত্যকে নিয়ে তাঁদের সংসার বেঙ্গালুরুতে। মঙ্গল অভিযানের সময় প্রচণ্ড ব্যস্ত হয়ে পড়লেও ঋতু প্রতি দিন বাড়ি ফিরে দুই ছেলেমেয়েকে পড়াতে বসাতেন। তারপর সংসারের প্রয়োজনীয় দেখভাল করে আবার মধ্য রাত থেকে ভোর অবধি কাজে ডুবে যেতেন। সব ক্ষেত্রেই পেয়েছেন স্বামীর সাহায্য ও উৎসাহ। জানিয়েছেন, ঋতু।

বিজ্ঞানসাধনার পাশাপাশি আছে সংসারও। ঋতুর স্বামী অবিনাশ শ্রীবাস্তব চাকরি করেন বেসরকারি সংস্থায়। মেয়ে অনীশা এবং ছেলে আদিত্যকে নিয়ে তাঁদের সংসার বেঙ্গালুরুতে। মঙ্গল অভিযানের সময় প্রচণ্ড ব্যস্ত হয়ে পড়লেও ঋতু প্রতি দিন বাড়ি ফিরে দুই ছেলেমেয়েকে পড়াতে বসাতেন। তারপর সংসারের প্রয়োজনীয় দেখভাল করে আবার মধ্য রাত থেকে ভোর অবধি কাজে ডুবে যেতেন। সব ক্ষেত্রেই পেয়েছেন স্বামীর সাহায্য ও উৎসাহ। জানিয়েছেন, ঋতু।

১১ ১২
‘মঙ্গলযান’-এর পরে ‘বিক্রম’-কে চাঁদে পাঠিয়ে ঋতু এখন দেশের ‘রকেট উওম্যান’। তাঁর সাফল্যের নেপথ্যে কৃতিত্ব দিতে চান ছোটবেলায় শোনা মায়ের বকুনিকেই। যে তিরষ্কার আদতে উজ্জীবিত করত চাঁদকে স্পর্শ করার।

‘মঙ্গলযান’-এর পরে ‘বিক্রম’-কে চাঁদে পাঠিয়ে ঋতু এখন দেশের ‘রকেট উওম্যান’। তাঁর সাফল্যের নেপথ্যে কৃতিত্ব দিতে চান ছোটবেলায় শোনা মায়ের বকুনিকেই। যে তিরষ্কার আদতে উজ্জীবিত করত চাঁদকে স্পর্শ করার।

১২ ১২
ঋতুর আশা, দেশের মেয়েরা আরও বেশি করে এগিয়ে আসবেন বিজ্ঞান গবেষণায়। সামজের বিভিন্ন স্তরের মেধাবী ছাত্রীদের তিনি আরও বেশি করে দেখতে চান বিজ্ঞানী ও গবেষকের ভূমিকায়।  (ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া)

ঋতুর আশা, দেশের মেয়েরা আরও বেশি করে এগিয়ে আসবেন বিজ্ঞান গবেষণায়। সামজের বিভিন্ন স্তরের মেধাবী ছাত্রীদের তিনি আরও বেশি করে দেখতে চান বিজ্ঞানী ও গবেষকের ভূমিকায়। (ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy