Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Ashok Gehlot and Sachin Pilot

গহলৌত-পাইলট দ্বন্দ্বের জের? রাজস্থানে এখনও প্রার্থিতালিকা ঘোষণা করতে পারল না কংগ্রেস

কংগ্রেসের একটি সূত্র জানাচ্ছে, অশোক গহলৌত গোষ্ঠীর কয়েক জন বিধায়ক এবং মন্ত্রীকে টিকিট দেওয়ার বিষয়ে জোরাল আপত্তি তুলেছেন সচিন পাইলট। আর তা নিয়েই তৈরি হয়েছে সমস্যা।

অশোক গহলৌত এবং সচিন পাইলট।

অশোক গহলৌত এবং সচিন পাইলট। — ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
জয়পুর শেষ আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০২৩ ১২:০৯
Share: Save:

অন্য চার রাজ্যের অনেক বিধানসভা আসনেই প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করে দিয়েছে কংগ্রেস হাইকমান্ড। কিন্তু ব্যতিক্রম রাজস্থান। সে রাজ্যের ২০০টি আসনের একটিতেও এখনও আনুষ্ঠানিক ভাবে ‘হাত’ প্রতীকের প্রার্থীদের নাম জানানো হয়নি। সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত এবং তাঁর ‘প্রতিদ্বন্দ্বী’ সচিন পাইলটের সঙ্ঘাতের কারণেই এই বিলম্ব বলে কংগ্রেসের একটি সূত্রের খবর।

আগামী ২৫ নভেম্বর রাজস্থান বিধানসভার ২০০টি আসনেই এক দফায় ভোটগ্রহণ হবে। গণনা আগামী ৩ ডিসেম্বর দেশের অন্য চার রাজ্য— মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ়, তেলঙ্গানা এবং মিজ়োরামের সঙ্গে। মরুরাজ্যে কংগ্রেসের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি ইতিমধ্যেই অধিকাংশ আসনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করে দিয়েছে। আম আদমি পার্টি, বিএসপির মতো ছোট দলগুলির প্রার্থীরাও কয়েকটি আসনে ভোটের প্রচারে নেমে পড়েছেন। কিন্তু ব্যতিক্রম কংগ্রেস।

সূত্রের খবর, গহলৌত গোষ্ঠীর কয়েক জন বিধায়ক এবং মন্ত্রীকে টিকিট দেওয়ার বিষয়ে জোরাল আপত্তি তুলেছেন সচিন। আর তা নিয়েই তৈরি হয়েছে সমস্যা। সম্ভবত, এমন সম্ভাবনার আঁচ পেয়ে আড়াই মাস আগেই সক্রিয় হয়েছিলেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে। যুযুধান দুই নেতার মধ্যে ভারসাম্যের নীতি নিয়ে জুলাই মাসে গড়া হয়েছিল ২৯ সদস্যের প্রদেশ কংগ্রেস নির্বাচন কমিটি। তাতে রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী গহলৌত এবং পাইলট দু’জনেই। রয়েছেন রাজস্থান প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির সভাপতি গোবিন্দ সিংহ দোতাসরা। যিনি একদা ‘গহলৌত ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত হলেও বর্তমানে দু’গোষ্ঠীর সঙ্গেই তাঁর সুসম্পর্ক রয়েছে বলে কংগ্রেস সূত্রের খবর। কিন্তু সমস্যা তাতে মেটেনি।

প্রসঙ্গত, ২০২০ সালে মুখ্যমন্ত্রী গহলৌতের সরকারের বিরুদ্ধে ‘অভ্যুত্থান’ চালাতে গিয়ে ‘ব্যর্থ’ হয়েছিলেন পাইলট। রাজস্থানের তৎকালীন উপমুখ্যমন্ত্রী এবং প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তাঁর অনুগামী ১৯ জন বিধায়ককে নিয়ে দিল্লির কাছে একটি রিসর্টে গিয়ে উঠেছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রত্যাশী পাইলটের এই পদক্ষেপে কংগ্রেসের অন্দরে আশঙ্কা তৈরি হয় যে, বিজেপির সহায়তায় তিনিও রাজস্থানে কংগ্রেস সরকার ফেলে দিতে পারেন। তবে কিছু দিন পরেই বিদ্রোহে ইতি টানেন প্রয়াত রাজেশ পাইলটের পুত্র। যদিও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি এবং উপমুখ্যমন্ত্রীর পদ খোয়াতে হয়েছিল তাঁকে।

এর পর গত তিন বছর ধরেই পাইলট রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রীর পদ চাইছেন। গত অক্টোবরে ‘লক্ষ্যের’ কাছেও পৌঁছে গিয়েছিলেন তিনি। সে সময় ছিল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি নির্বাচন। প্রাথমিক ভাবে সভাপতি হওয়ার দৌড়ে তখন গহলৌতকে এগিয়ে দিয়েছিলেন শীর্ষ নেতৃত্ব। তিনি সভাপতি হলে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী পদে বসতে পারেন পাইলট, এ রকমই সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। সে সময়ই গহলৌত অনুগামী ৮২ জন বিধায়ক বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। তাঁরা এআইসিসি প্রতিনিধিদের বৈঠকেও হাজির হননি।

শেষ পর্যন্ত ক্ষুব্ধ হাইকমান্ড সভাপতি হওয়ার দৌড় থেকে সরিয়ে দিয়েছিল গহলৌতকে। কিন্তু পাইলটের ‘ভাগ্য’ ফেরেনি। এমনকী, তাঁর দাবি সত্ত্বেও গহলৌত অনুগামী মন্ত্রী-বিধায়কদের বিরুদ্ধে দলবিরোধী পদক্ষেপের জন্য কড়া পদক্ষেপ করেনি কংগ্রেস হাইকমান্ড। রাজস্থানে সাধারণত পাঁচ বছর অন্তর সরকার বদল হয়। এ বার গহলৌতকে সামনে রেখেই সেই প্রথা ভাঙতে চাইছে কংগ্রেস। কিন্তু অন্তর্দ্বন্দ্ব সেই লক্ষ্যপূরণের পথে অন্তরায় হতে পারে বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের ধারণা।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy