গাজ়ায় ইজ়রায়েলি বিমানহানার প্রতিবাদে বিক্ষোভ। ছবি: রয়টার্স।
নিহতের সংখ্যা ৪৭১। আহত ৩১৪ জন। তাঁদের মধ্যে অনেকেরই আঘাত গুরুতর হওয়ায় এবং ইজ়রায়েলি সেনার ‘সৌজন্যে’ অবরুদ্ধ গাজ়ায় চিকিৎসা পরিকাঠামো কার্যত স্তব্ধ হয়ে যাওয়ায়, আহতদের অনেকেরই কার্যত বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে স্বশাসিত প্যালেস্তিনীয় কর্তৃপক্ষের স্বাস্থ্য দফতর। এ ছাড়াও এখনও বেশ কয়েক জন ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়ে রয়েছেন বলে আশঙ্কা।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য প্রকাশিত একাধিক রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, ইজ়রায়েলের ধারাবাহিক বিমানহানা এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলা থেকে বাঁচতে বহু মানুষ আল–আহলি আল–আরবি হাসপাতালে আশ্রয় নিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন বহু মহিলা এবং শিশু। তাঁরা কল্পনাও করতে পারেননি অ্যাংলিকান গির্জার মালিকানাধীন ওই হাসপাতালে মঙ্গলবার রাতে আছড়ে পড়বে ক্ষেপণাস্ত্র! তেল আভিভ উত্তর এবং মধ্য গাজ়ার বাসিন্দাদের বাড়ি ছাড়ার ‘চরম সময়সীমা’ দেওয়ার পরে ওই হাসপাতালকেই ‘নিরাপদ’ ভেবেছিলেন তাঁরা।
গাজ়ায় ইজ়রায়েল সেনার হামাস বিরোধী অভিযানের একাদশতম দিনের ওই ঘটনা নিয়ে বুধবার দিনভর চলেছে চাপানউতোর। প্যালেস্তিনীয় কর্তৃপক্ষের স্বাস্থ্য দফতরের মুখপাত্র চিকিৎসক আশরাফ আল কুদরা বুধবার সরাসরি হাসপাতালে হামলার জন্য ইজ়রায়েল সেনাকে দুষেছেন। অন্য দিকে, ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু আঙুল তুলেছেন প্যালেস্তেনীয় যোদ্ধাদের দিকে। তবে প্রথমে ঘটনার জন্য হামাসকে দুষলেও পরে তাদের নিশানা ‘প্যালেস্তিনিয়ান ইসলামিক জিহাদ’ (পিআইজে) নামে একটি গোষ্ঠী।
আন্তর্জাতিক মঞ্চে বুধবার দিনভর ইজ়রায়েল প্রমাণ করতে চেয়েছে, শনিবার রাতে পিআইজের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে আঘাত করেছে আল–আহলি আল–আরবি হাসপাতালে। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বুধবার তেল আভিভে পৌঁছেই নেতানিয়াহু সরকারের সেই তত্ত্ব সমর্থন করেছেন। নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকে বাইডেন বলেন, “আমি যা দেখেছি, তার ভিত্তিতে বলছি, মনে হচ্ছে এটা (গাজ়ার হাসপাতালে হামলা) অন্য কোনও দল করেছে।” তার পরই নেতানিয়াহুর দিকে তাকিয়ে তাঁর উদ্দেশে বাইডেন বলেন, “আপনি নন।”
একাধিক পশ্চিমী দেশও হাসপাতালে হামলা নিয়ে ‘ক্লিন চিট’ দিয়েছে ইজ়রায়েলকে। প্রশ্ন তোলেনি, কেন গত ১২ দিন ধরে ভূমধ্যসাগরের তীরবর্তী ৩৬৫ বর্গ কিলোমিটারের ভূখণ্ডে কয়েক হাজার টন বোমা আর ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাত হেনেছে তেল আভিভ।
তবে পশ্চিম এশিয়ার একাধিক দেশ অভিযোগের আঙুল তুলেছে নেতানিয়াহু বাহিনীর দিকেই। পশ্চিম এশিয়ার কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের দাবি, শনিবার রাতের হামলায় যে ক্ষমতাসম্পন্ন বিস্ফোরক ব্যবহার করা হয়েছে, তা বহনের ক্ষমতাসম্পন্ন ক্ষেপণাস্ত্র পিআইজের হাতে নেই। ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ ভাবে এই পরিস্থিতিতে বুধবার জর্ডনের রাজা আবদুল্লা, মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফতাহ আল-সিসি এবং প্যালেস্তাইনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে পূর্বঘোষিত বৈঠক বাতিল করেছেন বাইডেন।
ইজ়রায়েল সেনার তরফে বুধবার একটি ভিডিয়ো এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করে দাবি করা হয়েছে, সেটি পিআইজের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রের হাসপাতালে আঘাত করার ছবি। যদিও সেই ভিডিয়োতে বিষয়টি স্পষ্ট নয় বলে পাল্টা অভিযোগ। নেতানিয়াহু নিজেও একাধিক পোস্টে হাসপাতালে হামলার জন্য দুষেছেন ‘প্যালেস্তিনীয় জঙ্গিদের’। যদিও রাষ্ট্রপুঞ্জে প্যালেস্তাইনের প্রতিনিধি রিয়াধ মনসুর তা খারিজ করে বলেন, ‘‘নেতানিয়াহু মিথ্যাবাদী। হাসপাতালে বিমানহানার পরে ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রীর ডিজিটাল মুখপাত্র একটি পোস্টে লিখেছিলেন, ‘ওই হাসপাতালের পাশে হামাসের ডেরা রয়েছে’। পরে সেই পোস্টটি মুছে দেওয়া হয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy