অস্ত্র এবং সামরিক সরঞ্জাম আমদানিতে বিশ্বের ভারতের স্থান শীর্ষে। ফাইল চিত্র।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘আত্মনির্ভর ভারত’ স্লোগান সফল করতে গিয়ে গত কয়েক বছরে দফায় দফায় অস্ত্র এবং সামরিক সরঞ্জাম আমদানিতে কাটছাঁট করেছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। কিন্তু আন্তর্জাতিক রিপোর্ট বলছে, ২০১২ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে বিদেশ থেকে অস্ত্র এবং সামরিক সরঞ্জাম আমদানির ক্ষেত্রে এখনও শীর্ষে রয়েছে ভারত।
সুইডেনের প্রতিরক্ষা সমীক্ষা সংস্থা স্টকহলম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট (এসআইপিআরআই) তার সাম্প্রতিক রিপোর্টে জানিয়েছে, বিশ্বের মোট অস্ত্র এবং সামরিক সরঞ্জাম আমদানির ১১ শতাংশ করে ভারত। তবে মোদী সরকার প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে ‘স্বদেশি উৎপাদনে’ জোর দেওয়ার ‘প্রভাব’ পড়েছে এ ক্ষেত্রে। ২০১৩-১৭ সালে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীকে প্রয়োজনীয় অস্ত্র এবং সামরিক সরঞ্জামের জন্য বিদেশের উপর নির্ভর করতে হলেও ২০১৮-২২-এ তা কমেছে।
সামগ্রিক ভাবে গত ৫ বছরে বিশ্বজুড়ে অস্ত্র আমদানির ব্যবসা ৫ শতাংশেরও বেশি কমেছে বলে এসআইপিআরআই রিপোর্টে দাবি। তবে ইউক্রেনের মতো দেশে তা বিপুল পরিমাণে বেড়েছে। শুধুমাত্র ২০২২ সালের হিসাব ধরলে অস্ত্র আমদানিতে তৃতীয় স্থানে ভলোদিমির জ়েলেনস্কির দেশ! অস্ত্র আমদানির ক্ষেত্রে দ্বিতীয় স্থানে সৌদি আরব এবং তৃতীয় স্থানে কাতার রয়েছে। চিন ৫ এবং পাকিস্তান ৮ নম্বরে। অস্ত্র রফতানিকারক দেশগুলির মধ্যে শীর্ষে রয়েছে আমেরিকা। বিশ্বের অস্ত্রবাজারের ৪০ শতাংশই তাদের দখলে। যদিও বিশ্বের বৃহত্তম অস্ত্র আমদানিকারক ভারত সবচেয়ে বেশি অস্ত্র কিনেছে রাশিয়ার থেকে। তবে ২০১৩-১৭ সালের মধ্যে ভারতের মোট অস্ত্র আমদানিতে রাশিয়ার অবদান ৬৪ শতাংশ হলেও তা ২০১৮-২২-এ তা কমে ৪৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে ক্ষমতায় এসেই মোদী ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’-র কথা বলেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। পরবর্তী সময়ে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রেও ‘আত্মনির্ভর ভারত’ নীতি রূপায়ণের জন্য পদক্ষেপ করা হয়। সেই লক্ষ্যে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম আমদানিতে কাটছাঁট করতে কয়েক বছর আগে সক্রিয় হয় মোদী সরকার। বিদেশ থেকে অস্ত্র এবং প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম আমদানি নিয়েও নতুন করে পর্যালোচনা শুরু হয়। এ বিষয়ে বিস্তারিত পর্যালোচনার পরে প্রতিরক্ষা সচিব অজয় কুমারের নেতৃত্বে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম কেনা পর্যালোচনার দায়িত্বপ্রাপ্ত কমিটি ২০২০ সালে এ বিষয়ে একটি নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়ে তা কার্যকর করার সুপারিশ করেছিল।
এর পর প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহের নেতৃত্বাধীন প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম ক্রয় সংক্রান্ত কমিটি (ডিএসি) তা অনুমোদন করে। তার জেরে প্রতিরক্ষা উৎপাদনে ভারতকে স্বনির্ভর করার লক্ষ্যে গত বছর প্রথম ধাপে ১০১টি প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল মোদী সরকার। তার পর আরও কিছু সরঞ্জাম আমদানিতে জারি হয় বিধিনিষেধ। বিদেশি নির্ভরতা কমাতে বিভিন্ন ধরনের রাইফেল, ক্ষেপণাস্ত্র, কামান, ড্রোন, যুদ্ধে ব্যবহারের হালকা হেলিকপ্টার থেকে ভারী পণ্যবাহী বিমান আমদানিতে ধাপে ধাপে নিষেধাজ্ঞা চাপানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তার আগে প্রতিরক্ষা উৎপাদন ক্ষেত্রে গতি আনার লক্ষ্যে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ ৪৯ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৭৪ শতাংশ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy