Advertisement
০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Reserve Bank of India

গত অর্থবর্ষে দেশে ৪ কোটি ৭০ লক্ষ নতুন কর্মসংস্থান, কাজ বৃদ্ধির হার দ্বিগুণ: রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক

‘ক্লেমস’ তথ্যভান্ডারে জমা পড়া তথ্য বিশ্লেষণ করে ২৭টি ক্ষেত্রে কর্মসংস্থানের হার খতিয়ে দেখেছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। এর মধ্যে রয়েছে কৃষি, মৎস্য, খনি এবং শিল্পোৎপাদনের মতো ক্ষেত্র।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

আনন্দবাজার অনলাইন প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০২৪ ১৫:০২
Share: Save:

২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে দেশে ৪ কোটি ৭০ লক্ষ নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে। সোমবার প্রকাশিত রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের একটি রিপোর্টে এমনটাই জানানো হয়েছে। বেড়েছে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির হারও। ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে এই হার ছিল ৩.২ শতাংশ। গত অর্থবর্ষে এই হার বেড়়ে হয়েছে ৬ শতাংশ।

‘ক্লেমস’ তথ্যভান্ডারে জমা পড়া বিভিন্ন তথ্য বিশ্লেষণ করে ২৭টি ক্ষেত্রে কর্মসংস্থানের হার খতিয়ে দেখেছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। এই ২৭টির মধ্যে রয়েছে কৃষি, মৎস্য, খনি এবং শিল্পোৎপাদনের মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র। প্রসঙ্গত, এই ‘ক্লেমস’ তথ্যভান্ডারে কর্মসংস্থান এবং শিল্পোৎপাদন সংক্রান্ত পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করা হয়।

রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের এই তথ্য অবশ্য নতুন বিভ্রান্তিরও জন্ম দিয়েছে। কারণ সম্প্রতি বেসরকারি সংস্থা ‘সিটিগ্রুপ ইন্ডিয়া’ ভারতে কর্মসংস্থানের হার নিয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। সেই রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, ভারতে আর্থিক বৃদ্ধির হার ৭ শতাংশ হলেও প্রয়োজনের তুলনায় কর্মসংস্থান নেই। রিপোর্টে আরও বলা হয়, বর্তমান আর্থিক বৃদ্ধির হার বজায় থাকলে বছরে ৮০ থেকে ৯০ লক্ষ কর্মসংস্থান তৈরি হতে পারে। কিন্তু বেকারত্ব রুখতে আগামী এক দশকে প্রতি বছর ১.২ কোটির কর্মসংস্থান হওয়া প্রয়োজন।

সোমবার কেন্দ্রীয় শ্রম মন্ত্রক অবশ্য বেসরকারি সংস্থার ওই রিপোর্ট খারিজ করে দিয়েছে। কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়, ‘পিরিয়োডিক লেবার ফোর্স সার্ভে’ এবং রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের ‘ক্লেমস’ তথ্যভান্ডারের পরিসংখ্যান অনুসারে ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষ থেকে ২০২১-২২ অর্থবর্ষ পর্যন্ত দেশে নতুন ৮ কোটি চাকরি হয়েছে।

এই প্রসঙ্গে অর্থনীতিবিদ সুপর্ণ মৈত্র বলেন, “রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের পরিসংখ্যানকে অস্বীকার করা যায় না। নিশ্চয়ই দেশে কর্মসংস্থানের হার বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে বেকারত্বের হার শুধু ভারতকে নয়, গোটা বিশ্বকেই চিন্তায় রেখেছে। প্রত্যেকটি দেশের প্রকৃতি, চরিত্র আলাদা। জনসংখ্যার দিক থেকে কাছাকাছি হওয়ার সুবাদে আমরা যদি চিনের সঙ্গে তুলনা করে দেখি, তবে ভারতে যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে কর্মসংস্থানের হার অনেকটাই বেশি।” অধ্যাপক মৈত্র একই সঙ্গে বলেন, “কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা গোটা বিশ্বেই সরকারি চাকরিতে কোপ বসাচ্ছে। এ দেশেও গিগ ওয়ার্ক বা অস্থায়ী কাজে উৎসাহ বৃদ্ধি পাচ্ছে যুব সম্প্রদায়ের। কেন্দ্রের সরকারও এখন বিষয়টিতে নজর দিচ্ছে।” কর্মসংস্থানের হার যে বৃদ্ধি পেয়েছে, সে কথা অস্বীকার করেননি অর্থনীতিবিদ অচিন চক্রবর্তীও। তিনি বলেন, “পিরিয়োডিক লেবার ফোর্স সার্ভে একটি সর্বজনমান্য সমীক্ষা। সেই সমীক্ষাতেও বলা হয়েছে দেশে কর্মসংস্থানের হার বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ কর্মসংস্থানই হয়েছে অসংগঠিত ক্ষেত্রে। খুবই খারাপ পরিবেশে কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন দেশের শ্রমজীবী মানুষের একাংশ।” একই সঙ্গে তাঁর সংযোজন, “কেন্দ্র প্রভিডেন্ট ফান্ডে নাম নথিভুক্তিকরণের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়াকে কর্মসংস্থানের হার বৃদ্ধির ইঙ্গিত হিসাবে প্রচার করছে। কিন্তু তা থেকে কর্মসংস্থানের প্রকৃত চিত্রটা বোঝা সম্ভব নয়।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

RBI Unemployment new job job creation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE