হাওড়ামুখী গীতাঞ্জলি এক্সপ্রেসের প্যান্ট্রিকার থেকে চারটি নিরামিষ ‘থালি’ নিয়েছিলেন শিলচরের প্রণবানন্দ দাস। অচেনা কেটারার সংস্থার কাগজে তাঁকে দেওয়া হয় নির্ধারিত দামের তিন গুণ বেশি বিল!
আপত্তি তুলে লাভ না হওয়ায় ট্রেনে বসেই টুইটারে রেলমন্ত্রীকে নালিশ জানান তিনি। ফল মেলে তড়িঘড়ি। পাল্টা জবাবে ‘ইন্ডিয়ান রেলওয়ে কেটারিং অ্যান্ড টুরিজম কর্পোরেশন’ (আইআরসিটিসি) তাঁকে জানায়, এ জন্য সংশ্লিষ্ট প্যান্ট্রি-কারের লোকেদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে।
প্রণববাবু জানান, ৫ এপ্রিল ভোর ৬টায় মুম্বই থেকে গীতাঞ্জলি এক্সপ্রেসে উঠেছিলেন। গন্তব্য ছিল হাওড়া। সঙ্গী ছিলেন শিলচরের পরীক্ষিৎ চক্রবর্তী। মাঝরাস্তায় তাঁরা দু’জন দু’বার প্যান্ট্রিকার থেকে নিরামিষ খাবার কেনেন। অভিযোগ, চারটি নিরামিষ ‘থালির’ জন্য ৬০০ টাকা চাওয়া হয়। ধরানো হয় ‘সত্যম কেটারার’ নাম লেখা বিল। ‘আইআরসিটিসি’-র প্যান্ট্রি-কারে বেসরকারি কেটারারের বিল কেন, তা জানতে চাইলেও সদুত্তর মেলেনি। আইআরসিটিসি-র মেনু কার্ড দেখতে চান প্রণববাবু। তাঁর অভিযোগ, তেমন কিছু নেই বলে তাঁকে জানানো হয়। আইআরসিটিসি-র টুইটার খুলে প্রণববাবু প্যান্ট্রিকারের ম্যানেজারকে দেখান— ট্রেনের নিরামিষ থালির দাম ৫০ টাকা। ডিম নিলে ৫৫। তাঁদের কাছে তিন গুণ টাকা দাবি করা হচ্ছে কেন। জবাব মেলে, ‘স্পেশাল ডিশ দেওয়া হয়েছিল’। ফের প্রশ্ন তোলেন প্রণববাবু, ‘‘এটা কি রেলের রেস্তোরাঁ! ইচ্ছা করলেই প্যান্ট্রিকার স্পেশাল ডিশ তৈরি করে দিতে পারে?’’ শুরু হয় তর্ক। প্রণববাবু ওই বিলের ছবি-সহ বাড়তি টাকা দাবির কথা জানিয়ে টুইট করেন রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু, রেল মন্ত্রক ও আইআরসিটিসি-কে।
সমাধান: টুইটারে নালিশ পাওয়ার পরেই জবাব মিলল আইআরসিটিসি-র তরফে।
আইআরসিটিসি মুহূর্তে জবাব দেয়। দুঃখপ্রকাশও করে। প্রণববাবু বলেন, ‘‘ওই টুইট দেখার পর প্যান্ট্রি ম্যানেজার কথা বাড়াননি। ২০০ টাকা নিয়ে চলে যান।’’ দু’ঘণ্টা পর আইআরসিটিসি ফের টুইটে জানায়, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হয়েছে। জরিমানা হয়েছে সংশ্লিষ্ট প্যান্ট্রিকারের আধিকারিক, কর্মীদের।
কিন্তু এতে বিস্মিত প্রণববাবু। আজ শিলচরে ফিরে তিনি বলেন, ‘‘প্যান্ট্রিকারে তিন গুণ টাকা আদায়ের ঘটনা হাতেনাতে ধরিয়ে দেওয়ার পরও শুধু জরিমানা করা হল! কত টাকা জরিমানা হয়েছে, তার উল্লেখ নেই।’’ অভিযোগ, ওই ট্রেনে নিরামিষ থালির জন্য কয়েক জনের কাছ থেকে দেড়শো টাকা নেওয়া হয়েছিল। ডিম নিলে ১৮০ টাকা। রেলের মেনু কার্ডে চা-কফির দাম ৭ টাকা। ওই ট্রেনে চায়ের জন্য নেওয়া হয় ১০ টাকা। কফি ৩০ টাকা। তাঁর হিসেব, একটি ট্রেনের এক বারের সফরে এ ভাবে হিসাব-বহির্ভূত প্রায় ৩ লক্ষ টাকাও আদায় হতে পারে। সব কথা জানিয়ে প্রণববাবু টুইট করেছেন প্রধানমন্ত্রীকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy