Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
Rahul Gandhi

Rahul Gandhi: বিরোধ মানেই হামলা নয়, শান্তি-উদ্যোগ রাহুলের

সোনা পাচার-কাণ্ডে মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের ইস্তফার দাবিতে কেরলে কংগ্রেসের আন্দোলন ঘিরে রাজনৈতিক উত্তাপের পারদ ক্রমশ চড়ছিল।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

সন্দীপন চক্রবর্তী
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২২ ০৫:৫০
Share: Save:

একের পর এক ঘটনায় উত্তপ্ত রাজনৈতিক আবহে উত্তেজনা প্রশমনের চেষ্টা চালালেন রাহুল গান্ধী। কেরল সফরে গিয়ে দলের রাজ্য নেতৃত্বের প্রতি তাঁর বার্তা, শাসক দল সিপিএমের সঙ্গে কংগ্রেসের রাজনৈতিক বিরোধ থাকবে। কিন্তু সেই বিরোধ ঘিরে হিংসাত্মক ঘটনা এড়াতে হবে, প্রতিবাদও হবে নিয়ন্ত্রিত। রাহুলের এমন উদ্যোগের উল্টো দিকে দলের সব সংগঠনকে সংযত থাকার পরামর্শ দিচ্ছে সিপিএমও।

সোনা পাচার-কাণ্ডে মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের ইস্তফার দাবিতে কেরলে কংগ্রেসের আন্দোলন ঘিরে রাজনৈতিক উত্তাপের পারদ ক্রমশ চড়ছিল। বিমানের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী বিজয়নের বিরুদ্ধে যুব কংগ্রসের তিন কর্মীর বিক্ষোভ দেখানোর ঘটনা ছায়া ফেলেছিল জাতীয় স্তরেও। তার জেরে প্রদেশ কংগ্রেসের সদর দফতর ইন্দিরা ভবনে ডিওয়াইএফআইয়ের ভাঙচুর, বিরোধী দলনেতা ভি ডি সতীশনের সরকারি আবাসে লোক ঢুকে পড়ার ঘটনা ঘটে। এই বিতর্ক চলাকালীনই ওয়েনাড়ে রাহুলের সাংসদ কার্যালয়ে এসএফআইয়ের হামলা আগুনে আরও ঘৃতাহুতি দেয়। সে সবের প্রেক্ষিতেই ওয়েনাড়ে নিজের লোকসভা কেন্দ্রে গিয়ে রাজ্যের কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনায় বসেছিলেন রাহুল।

ঘটনাচক্রে, রাহুল ওয়েনাড়ে পৌঁছনোর আগের রাতেই তিরুঅনন্তপুরমে রাজ্য সিপিএমের দফতর এ কে জি সেন্টারে বোমা ছোড়ার ঘটনা ঘটে। রাহুল গিয়ে শান্তি-উদ্যোগে নেমেছেন দেখে মুখ্যমন্ত্রী বিজয়ন এবং সিপিএম তথা এলডিএফের রাজ্য নেতৃত্বের পরামর্শে বামেরা আর ওই বোমা ছোড়ার ঘটনা নিয়ে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে জঙ্গি প্রতিবাদে নামেনি। বরং, রাহুল সাংসদ কার্যালয়ে হামলার ঘটনায় এসএফআইয়ের ‘ছোট’দের ক্ষমা করে দেওয়ার কথা প্রকাশ্যে বলার পরে রবিবার সিপিএমের ওই ছাত্র সংগঠনের ওয়েনাড় জেলা কমিটিই ভেঙে দেওয়া হয়েছে। আপাতত অ্যাড হক কমিটি সেখানে কাজ চালাবে। সূত্রের খবর, সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্বের সরাসরি নজরদারিতেই এসএফআইয়ে ওই পদক্ষেপ হয়েছে।

কংগ্রেস সূত্রের খবর, দলের রাজ্য নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় রাহুল বলেছেন, সিপিএম ও কংগ্রেসের দ্বৈরথ সেখানে রাজ্য রাজনীতির বাধ্যবাধকতা। কিন্তু সেই রাজনৈতিক বিরোধ হিংসা, হানাহানির পর্যায়ে গেলে আরএসএস-বিজেপির মতো দক্ষিণপন্থী সংগঠন তার ফায়দা নেবে। মানুষের কাছেও ভুল বার্তা যাবে। অন্য দলের কার্যালয় বা নেতাদের বাড়িতে বিক্ষোভ চলবে না। প্রতিবাদের নামে বাড়াবাড়ি যাতে না হয়, সে দিকে নজর রাখার জন্য রাজ্য নেতাদের পরামর্শ দেন রাহুল। তবে একই সঙ্গে তিনি বলেন, রাজ্যে প্রয়োজনমতো বামেদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক আক্রমণের পথ থেকে কংগ্রেস সরে আসবে না। সেই নীতি মেনে রাহুল নিজেও সেখানে প্রকাশ্যে প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘বিজেপির বিরোধিতা করায় আমাকে ইডি বারবার জেরা করছে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী বিজয়নকে সিবিআই-ইডি ডাকছে না কেন!’’

এই পরিস্থিতিতে এ কে জি সেন্টারে বোমা পড়ার ঘটনায় প্রাথমিক ভাবে কংগ্রেসকে দোষারোপ করেও পরে সেই পথ থেকে সরে এসেছেন এলডিএফ নেতারা। তদন্ত শেয না হওয়া পর্যন্ত তাঁর অপেক্ষা করতে চান। সিপিএমও তাদের সব গণসংগঠনকে বার্তা দিয়েছে, স্থানীয় স্তরে ওই ঘটনার প্রতিবাদ হতে পারে। কিন্তু ‘বেপরোয়া’ কর্মসূচি কোনও ভাবেই নয়। এলডিএফের আহ্বায়ক ই পি জয়রাজন মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ‘‘বিজয়নের নেতৃত্বে প্রথম বারের এলডিএফ সরকারের সময়ে সর্বদল বৈঠকে ঠিক হয়েছিল, বিক্ষোভের জন্য কোনও দলীয় কার্যালয় বা নেতাদের বাড়ি বেছে নেওয়া হবে না। সেই নীতিই আমরা মেনে চলার চেষ্টা করব।’’ বিরোধী দলনেতা সতীশনেরও বক্তব্য, ‘‘অন্য দলের দফতরে বোমা মারা কংগ্রেসের নীতি নয়! রাজনৈতিক ভাবেই আমাদের হাতে অনেক অস্ত্র আছে। যারা মূল প্রশ্ন থেকে নজর ঘোরাতে চায়, তারা নানা কৌশল নিতে পারে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Rahul Gandhi CPIM Congress
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy