(বাঁ দিকে) রাহুল গান্ধী এবং প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢ়রা (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র
ভারী বৃষ্টি আর তার জেরে ভূমিধস। বিধ্বস্ত সাংসদহীন ওয়েনাড়। কেরলের এই জেলায় ধসে চাপা পড়ে ইতিমধ্যেই ৬৩ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। শতাধিক মানুষ চাপা পড়ে রয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ভারী বৃষ্টির মধ্যেই চলছে উদ্ধারকাজ। এই আবহে এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে পোস্ট করে শোকবার্তা জানিয়েছেন ওয়েনাড়ের প্রাক্তন সাংসদ রাহুল গান্ধী। একই ভাবে শোকবার্তা জানিয়েছেন ওয়েনাড় লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে সম্ভাব্য কংগ্রেস প্রার্থী তথা রাহুলের বোন প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢ়রাও।
রাহুল জানান বিপর্যয়ের খবর পাওয়ার পরেই তিনি কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন এবং ওয়েনাড়ের জেলাশাসকের সঙ্গে কথা বলেন। দু’জনেই উদ্ধারকাজের বিষয়ে তাঁকে আশ্বস্ত করেন বলে জানিয়েছেন রাহুল। লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল এক্স হ্যান্ডলে এ-ও লেখেন যে, তিনি কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের ওয়েনাড়ের এই বিপর্যয়ে সব রকমের সাহায্য করার অনুরোধ জানাবেন।
রাহুল এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করার প্রায় এক ঘণ্টা পরে পোস্ট করেন ওয়েনাড়ের ‘সম্ভাব্য’ কংগ্রেস প্রার্থী প্রিয়ঙ্কা। তিনিও মৃতদের পরিবারবর্গকে সমবেদনা জানান। ত্রাণকার্যে তদারকি করার জন্য তিনি সরকারকে অনুরোধ জানান। রাহুল এবং প্রিয়ঙ্কা দু’জনেই কেরলের কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন জোট ইউডিএফ-এর কর্মী-সমর্থকদের উদ্ধারকাজে ঝাঁপিয়ে পড়ার আর্জি জানান।
গত কয়েক দিন ধরেই ভারী বর্ষণ হচ্ছে ওয়েনাড়ে। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার ভোর ৩টে নাগাদ ওয়েনাড় জেলার পাহাড়ি এলাকায় প্রথম ধস নামার খবর পাওয়া যায়। ভোর ৪টে ১০ মিনিটে আরও একটি জায়গায় ধস নামার খবর আসে। ভোরেই রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের সঙ্গে উদ্ধারকাজে নামে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর। মঙ্গলবার সকালে কেরলের রাজস্বমন্ত্রী কে রাজন জানিয়েছিলেন, আট জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। তবে বেলা গড়ানোর সঙ্গে বাড়তে থাকতে নিহতদের সংখ্যা। ভারী বৃষ্টি এবং ধসের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ওয়েনাড় জেলার মেপ্পাডি, মুন্ডাকাই এবং চুরাল মালা এবং নুলপুঝা।
প্রসঙ্গত, লোকসভা ভোটে রায়বরেলী এবং ওয়েনাড়, দু’টি আসন থেকেই সাড়ে তিন লক্ষের বেশি ভোটের ব্যবধানে জয়ী হন রাহুল। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে উত্তরপ্রদেশের অমেঠী থেকে হেরে গেলেও কেরলের ওয়েনাড় জিতিয়েছিল রাহুলকে। অন্য দিকে, ২০০৪ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত সনিয়া টানা ছ’বার রায়বরেলী থেকে ভোটে জিতেছিলেন। তারও আগে রায়বরেলী থেকে কংগ্রেসের সাংসদ ছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী।
গত জুন মাসে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গের বাড়িতে আয়োজিত বৈঠকে সনিয়া গান্ধী, রাহুল, প্রিয়ঙ্কা, এআইসিসির সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) কেসি বেণুগোপালের উপস্থিতিতে বৈঠকে স্থির হয়, কেরলের ওয়েনাড় ছেড়ে দিয়ে উত্তরপ্রদেশের রায়বরেলীর সাংসদ পদ ধরে রাখবেন রাহুল। তিনি নিজেই এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে বলেন, ‘‘আমার কাছে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন ছিল। কারণ ওয়েনাড়ের মানুষ আমার পাশে দাঁড়িয়েছেন। রায়বরেলী এবং ওয়েনাড়ের মানুষের সঙ্গে আমার আত্মিক সম্পর্ক। আমি ওয়েনাড় ছাড়ছি। প্রিয়ঙ্কা লড়বেন ওয়েনাড় থেকে।’’ যদিও রাহুল ওয়েনাড় ছাড়লেও এখনও এই লোকসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করেনি নির্বাচন কমিশন। আনুষ্ঠানিক ভাবে নাম ঘোষণা করা না হলেও রাহুলের ঘোষণায় ওয়েনাড়ের কংগ্রেস প্রার্থী হিসাবে প্রিয়ঙ্কার নামে সিলমোহর দেওয়া হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। মঙ্গলবার দেখা গেল সাংসদহীন ওয়েনাড়ের বিপর্যয়ে শোকবার্তা দিলেন কেরলের এই কেন্দ্রের প্রাক্তন সাংসদ রাহুল এবং সম্ভাব্য প্রার্থী প্রিয়ঙ্কা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy