রাহুল গাঁধী। ছবি পিটিআই।
হম দো, হমারে দো’-র পরে এ বার ‘ভিতু’।
চিনের সামনে ‘মাথা ঝুঁকিয়ে’ তাদের হাতে ভারতের জমি তুলে দেওয়ার অভিযোগ তুলে রাহুল গাঁধী আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ‘ভিতু’ আখ্যা দিলেন। তাঁর যুক্তি, লাদাখের প্যাংগং লেক থেকে সেনা প্রত্যাহার নিয়ে দর কষাকষি করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী আসলে ভারতের জমি চিনকে ছেড়ে দিয়েছেন। ২০২০-র এপ্রিল পর্যন্ত প্যাংগং লেকের ফিঙ্গার ফোর বা চার নম্বর গিরিশৃঙ্গে ভারতীয় সেনার চৌকি ছিল। প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ সংসদে বলেছেন, এ বার থেকে ফিঙ্গার-থ্রি-তে সেনাচৌকি থাকবে। শুক্রবার সকালে কংগ্রেস সদর দফতরে বসে এ নিয়ে প্রশ্ন তুলে রাহুল বলেন, “এটা একশো ভাগ ভীরুতা। আর কিচ্ছু নয়। প্রধানমন্ত্রী ভিতু, যিনি চিনের সামনে রুখে দাঁড়াতে পারেন না। প্রধানমন্ত্রী সেনার আত্মত্যাগে থুতু দিচ্ছেন। সেনার আত্মত্যাগের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করছেন। এ দেশের, বাকি বিশ্বের কাউকে এর অনুমতি দেওয়া যায় না।’’
রাহুলের এমন আক্রমণের পরেই তাঁর ও গাঁধী পরিবারকে পাল্টা আক্রমণ করতে নামেন গোটা বিজেপি নেতৃত্ব। দলের সভাপতি জে পি নড্ডা রাহুলের অভিযোগকে ‘নতুন কংগ্রেস সার্কাস’ বলে কটাক্ষ করেন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জি কিষাণ রেড্ডির মন্তব্য, “রাহুল তাঁর দাদাজি নেহরুকে প্রশ্ন করুন, চিনকে কে জমি ছেড়ে দিয়েছেন।” কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মুখতার আব্বাস নকভি রাহুলকে ‘অল্পবুদ্ধি’ বলে নিশানা করেন। গিরিরাজ সিংহের কটাক্ষ, রাহুল ‘হম দো, হমারে দো’ বলতে আসলে তাঁর নিজের, মা, বোন ও ভগ্নিপতির কথা বলছেন। সরকারি ভাবেও রাহুলের অভিযোগের জবাব দিয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। বিবৃতিতে জানিয়েছে, চিনকে কোনও জমি ছেড়ে দেওয়া হয়নি। বিজেপি নেতাদের অভিযোগ, রাহুলই চিনের থেকে ‘সুপারি’ নিয়ে দেশকে, দেশের সেনাকে অপমান করছেন। কংগ্রেসের বক্তব্য, প্রধানমন্ত্রী তো প্রথম থেকেই চিনের জমি দখলের কথা মানতে চাইছেন না। চিনের নামও উচ্চারণ করেননি তিনি।
বৃহস্পতিবার বিকেলে রাহুল লোকসভায় বলেছিলেন, ‘হম দো, হমারে দো’-র সরকার চলছে। প্রধানমন্ত্রীর দুই শিল্পপতি বন্ধুর জন্যই কৃষি আইন আনা হয়েছে। আন্দোলনে মৃত কৃষকদের স্মরণে নীরবতা পালনও করেছিলেন। আজ বিজেপি সাংসদ সঞ্জয় জায়সওয়াল রাহুলের বিরুদ্ধে অধিকার ভঙ্গের নোটিস এনেছেন। তাঁর যুক্তি, কেবলমাত্র স্পিকারই নীরবতা পালনের কথা বলতে পারেন। বিজেপির মুখ্য সচেতক রাকেশ সিংহ বলেন, “রাহুল গাঁধীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।”
রাজস্থান রওনা হওয়ার আগেই সকাল ন’টায় সাংবাদিক সম্মেলন করে চিন নিয়ে মোদীকে নিশানা করেন তিনি। পরে রাজস্থানে কিসান মহাপঞ্চায়েত থেকে ফের অভিযোগ তোলেন, কৃষি আইন কার্যকর হলেও, ৪০% মানুষের রুটিরুজি, ৪০ লক্ষ কোটি টাকার কৃষিপণ্যের ব্যবসা মাত্র দু’জনের হাতে চলে যাবে।
প্যাংগং লেকে জমি ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগের পাশাপাশিই রাহুলের প্রশ্ন, কেন ভারতের সেনাকে কৈলাস রেঞ্জ দখল করার পরেও পিছু হটতে বলা হল? কেন দেপসাং-এর মতো গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় ঢুকে বসে থাকা চিনা সেনা পিছু হটছে না? কেন চিন ঘোগরা, হট স্প্রিং এলাকা থেকে সেনা সরায়নি বেজিং? কংগ্রেস নেতাদের যুক্তি, প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দাবি থেকেই স্পষ্ট, প্যাংগং লেকের ফিঙ্গার-এইটকেই ভারত প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বলে মনে করে। কিন্তু সেই পর্যন্ত নজরদারির অধিকারও ভারতের হাতে থাকছে না।
বিজেপির অবশ্য দাবি, এখনও দর কষাকষি চলছে। প্যাংগং লেকে সেনা সরানো শেষ হলেই দেপসাং ও অন্য এলাকা নিয়ে দর কষাকষি শুরু হবে। রাহুলের প্রশ্ন, ‘‘এই দেয়ানেয়ার দর কষাকষিতে কী দেওয়া হচ্ছে, সেটা স্পষ্ট। কিন্তু কী পাওয়া গেল, সেটাও বলা হোক। এখানে শুধুই দেওয়া। কারণ একটাই। প্রধানমন্ত্রী চিনের সামনে রুখে দাঁড়াতে পারেননি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy