(বাঁ দিকে) চিন্ময়কৃষ্ণ দাস। রবীন্দ্র ঘোষ (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
বাংলাদেশে বন্দি সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের মামলার শুনানি বৃহস্পতিবার। তবে সেই শুনানিতে কোনও ইতিবাচক রায় পাওয়া যাবে বলে মনে করছেন না কলকাতায় চিকিৎসারত, সন্ন্যাসীর আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষ। তাঁর মতে, দমন-পীড়ন এবং ভয় পাওয়ানোর প্রতীক হিসাবেই সন্ন্যাসীকে আটকে রাখা হবে।
তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের সঙ্গে মঙ্গলবার দীর্ঘ বৈঠকে এ কথা জানিয়েছেন চিন্ময়কৃষ্ণের আইনজীবী রবীন্দ্র। রাজনৈতিক সূত্রের খবর, এই বৈঠকে তিনি কুণালের কাছে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ঢাকায় ফিরলে প্রাণহানির সম্ভাবনা রয়েছে। হয় তাঁকে 'ভারতের চর' আখ্যায় বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করা হতে পারে। অথবা অপঘাতে বা দুর্ঘটনায় বা অজ্ঞাতপরিচয়ের হামলায় প্রাণ হারাতে হতে পারে। প্রসঙ্গত, গত মাসে চিন্ময়কৃষ্ণের জামিনের শুনানির আগে তাঁকে মারধর করা হয়েছিল।
সূত্রের খবর, এই মুহূর্তে আইনজীবী রবীন্দ্র মনে করছেন, আপাতত কিছুটা সময় চুপচাপ কাটিয়ে দিতে হবে, যত ক্ষণ না আমেরিকায় প্রেসিডেন্ট হিসাবে নিজের কাজ শুরু করেন (২০ জানুয়ারি) ডোনাল্ড ট্রাম্প। কারণ, এখন তিনি দেশে ফিরে গ্রেফতার হলে বা আক্রান্ত হলে চিন্ময়কৃষ্ণের জামিন মামলা অগাধ জলে চলে যাবে, তাঁকে নিয়েই শুরু হয়ে যাবে হইচই। রাজনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, তাই কিছুটা সময় তিনি মাঝখানে হাতে নিয়ে নিতে চাইছেন। এই আইনজীবীর দাবি, তিনি কলকাতা থেকে বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের চার জন এবং চট্টগ্রামের ছ’জনকে ‘ব্রিফ’ করে দিয়েছেন, যাঁরা চট্টগ্রামে মামলা লড়বেন। তবে আদৌ শুনানি কত দূর হতে পারবে, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে রবীন্দ্রের।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে তাঁর এই বৈঠকের ঠিক পরেই বুকে ব্যথা নিয়ে রবীন্দ্রকে দ্রুত ভর্তি করা হয়েছে এসএসকেএম হাসপাতালে। এই সময় চাওয়ার বিষয়টির সঙ্গে তাঁর কলকাতার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার কোনও প্রত্যক্ষ সম্পর্ক রয়েছে কি না, তা অবশ্য স্পষ্ট করা হয়নি রাজ্য সরকারের তরফে। শুধু প্রশাসনের তরফে যাচাই করে নেওয়া হয়েছে, তাঁর পাসপোর্ট বৈধ এবং ভারতে থাকার ভিসার মেয়াদ রয়েছে।
এই ঘটনার মাধ্যমে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব আপাতত এই বার্তাই দিতে চাইছেন, সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা মেনেও বাংলাদেশের বন্দি সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ এবং তাঁর বিচারের পাশে দাঁড়িয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্য দিকে, মমতার সঙ্গে দেখাও করতে চেয়েছেন আইনজীবী রবীন্দ্র। তিনি কুণালকে জানিয়েছেন, মমতা যে ভাবে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের উপরে নিপীড়নের প্রশ্নে অবস্থান নিয়েছেন, তা তাঁকে
‘মুগ্ধ’ করেছে।
এমতাবস্থায় চিন্ময়কৃষ্ণের মুক্তির দাবিতে ইংরেজি নতুন বছরের প্রথম দিন ব্যাজ় পরে বাংলায় প্রতিবাদে নামার ঘোষণা হলেও তেমন কিছু চোখে পড়েনি। তবে ইস্কনের তরফে তাঁর আরোগ্য কামনায় কোথাও কোথাও যজ্ঞ হয়েছে। চিন্ময়কৃষ্ণের মুক্তির দাবিতে মূলত বিজেপি ও অন্য হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের তরফে একাধিক কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল। ঘোষণা করা হয়েছিল, শহরে কালো ব্যাজ় পরে সন্ন্যাসীর মুক্তির দাবিতে পথে নামবে বিজেপিও। কিন্তু এ দিন দৃশ্যত কোথাও সেই কর্মসূচি হয়নি। জল্পনা তৈরি হয়েছে, রবীন্দ্রের ব্যারাকপুরের বাড়ি গিয়ে বিজেপি নেতারা সাক্ষাৎ করে এসে যে হিন্দুত্বের হাওয়া তুলতে চেয়েছিলেন, ওই আইনজীবীর সঙ্গে তৃণমূলের যোগাযোগের পরে প্রধান বিরোধী দলের সেই তাস কিছুটা হলেও হাল্কা হয়েছে বলেই কি এমন ‘শিথিলতা’? যদিও বিজেপির তরফে দাবি, ঘোষিত কর্মসূচির সঙ্গে দলের সম্পর্ক ছিল না। রাজ্য বিজেপির প্রধান মুখপাত্র শমীক
ভট্টাচার্যের বক্তব্য, “প্রতিবাদ হবেই। বাংলাদেশ সমস্যার স্থায়ী সমাধানে কেন্দ্র প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy