Advertisement
০৩ জানুয়ারি ২০২৫

মহারাষ্ট্রেও জোট, হাত ধরলে জয় পেত ত্রিপুরা

সাম্প্রতিক বিতর্কের কারণ ত্রিপুরার একটি কেন্দ্রের উপনির্বাচনের ফলাফল। বাধারঘাট বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে কয়েক মাস আগের লোকসভা নির্বাচনের চেয়ে প্রায় ১৩% ভোট বাড়িয়ে দ্বিতীয় হয়েছে সিপিএম।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সন্দীপন চক্রবর্তী
শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০১৯ ০৩:২৪
Share: Save:

হায়দরাবাদ পার্টি কংগ্রেস দরজা খুলে দিয়েছিল গত বছর। লোকসভা ভোটের আগে দলের কেন্দ্রীয় কমিটিও সেই লাইনে সিলমোহর দিয়েছে। কিন্তু দলের রাজনৈতিক লাইন অনুকূলে পেয়ে এবং বিজেপি ‘বড় বিপদ’ বুঝেও কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতার ক্ষেত্রে কেন বিভ্রান্তি বজায় রেখে চলা হচ্ছে, সেই প্রশ্ন ফের মাথাচাড়া দিল সিপিএমে। দলেরই বড় অংশের জিজ্ঞাস্য, গোটা বিরোধী শিবির যখন বিজেপির অশ্বমেধের ঘোড়াকে আটকাতে হিমশিম, তখন সুযোগ পেয়েও কেন কাজে লাগাবে না বামপন্থীরা!

সাম্প্রতিক বিতর্কের কারণ ত্রিপুরার একটি কেন্দ্রের উপনির্বাচনের ফলাফল। বাধারঘাট বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে কয়েক মাস আগের লোকসভা নির্বাচনের চেয়ে প্রায় ১৩% ভোট বাড়িয়ে দ্বিতীয় হয়েছে সিপিএম। বিজেপির ভোট কমেছে ১৪%। কিন্তু ভোটের পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, ওই কেন্দ্রে বিজেপি পেয়েছে ২০ হাজার ৪৮৭ ভোট। সিপিএমের প্রাপ্ত ভোট ১৫ হাজার ২১১ এবং তৃতীয় স্থানে থাকা কংগ্রেসের ভোট ৯ হাজার ১০৫। সিপিএম এবং কংগ্রেসের ভোট এক হলে ওই কেন্দ্রে পাঁচ হাজার ভোটে বিজেপির জয় সম্ভব হত না! একই সময়ে মহারাষ্ট্রে বিধানসভা নির্বাচনের জন্য কংগ্রেস এবং শরদ পওয়ারের এনসিপি-র সঙ্গে জোট গড়ে লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিপিএম। দলের অন্দরেই প্রশ্ন, বিজেপি ত্রিপুরায় ক্ষমতায় আসার দেড় বছরের মাথায় তাদের ধাক্কা দেওয়ার সুযোগ কেন হাতছাড়া করল বামেরা?

ত্রিপুরায় কংগ্রেসের হাত ধরতে বরাবরই অনীহা দেখিয়েছেন রাজ্য সিপিএম নেতৃত্ব। বরং, কংগ্রেসের ভোটব্যাঙ্ক পুরোটা গেরুয়া শিবিরে চলে যাওয়া সেখানে বিজেপি-র ক্ষমতায় আসার অন্যতম কারণ বলে তাঁরা মনে করেন। যদিও গত লোকসভা ভোটে বামেদের চেয়ে বেশি ভোট সেখানে কংগ্রেস পেয়েছে। গোটা পরিস্থিতির দিকে ইঙ্গিত করে সিপিএমের এক পলিটব্যুরো সদস্যের বক্তব্য, ‘‘বিজেপির হিংসা, সন্ত্রাস নিয়ে আমাদের দলের ত্রিপুরার নেতারা প্রতিদিন সরব। বিজেপিকে ঠেকানোর জন্য ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক সর্বোচ্চ ভোটকে একজোট করার কথা আমাদের কেন্দ্রীয় কমিটি বলেছে। সেই লক্ষ্য মাথায় রেখেই তো নির্বাচনী কৌশল তৈরি হওয়া উচিত!’’

সিপিএমের ত্রিপুরা রাজ্য সম্পাদক গৌতম দাশ অবশ্য বলছেন, ‘‘আমাদের এখানে কংগ্রেসের সঙ্গে একত্রে যাওয়ার পরিস্থিতি নেই।’’ রাজ্য নেতাদের ব্যাখ্যা, কংগ্রেসের বাহিনীর বড় অংশই এখন রং বদলে গেরুয়া তাণ্ডব চালাচ্ছে। আবার লোকসভা ভোটের বিপর্যয় থেকে ঠেকে শিখে বাংলায় বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্রেরা কংগ্রেস দফতরে গিয়ে সোমেন মিত্রদের সঙ্গে আলোচনায় বসছেন।

বাংলার লাইনের পক্ষেই আছে মহারাষ্ট্র সিপিএম। কংগ্রেস এবং এনসিপি-র সঙ্গে সমঝোতা করে তারা কিছু আসনে লড়ছে, কয়েকটি আসনে আবার ‘বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াই’ও হচ্ছে। মহারাষ্ট্রের কৃষক নেতা এবং দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অশোক ধওয়ালে পরিষ্কারই বলছেন, ‘‘বিজেপি যে ধরনের বিপদ, তার তুলনীয় এখন কিছুই হতে পারে না। কংগ্রেস বা এনসিপি-র সঙ্গে আমাদের রাজনৈতিক ফারাক থাকবে। কিন্তু বৃহত্তর বিপদকে রুখতে একজোট হতে হবে।’’ এর আগে তামিলনাড়ুতে ডিএমকে এবং কংগ্রেসের সঙ্গে জোট গড়েই লোকসভায় চারটি আসন পেয়েছিল বামেরা।

অন্য বিষয়গুলি:

CPM Congress Alliance
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy