ফাইল চিত্র
দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মিটিয়ে দলিত শিখ নেতা চরণজিৎ সিংহ চন্নীকে মুখ্যমন্ত্রী করে পঞ্জাবে তো বটেই, কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব উত্তরপ্রদেশের ভোটেও ফায়দা তোলার আশা করছেন। কিন্তু চন্নীকে এখন মুখ্যমন্ত্রী করা হলেও, আগামী বিধানসভা নির্বাচনে নভজ্যোৎ সিংহ সিধুই মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হবেন বলে বার্তা যাওয়ায় কংগ্রেসের অন্দরমহলে ফের বিবাদ শুরু হয়ে গেল। যা ধামাচাপা দিতে ফের কংগ্রেস হাই কমান্ডকে সক্রিয় হতে হল।
ক্যাপ্টেন অমরেন্দ্র সিংহর অপসারণের পরে পঞ্জাবের নতুন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে চরণজিৎ সিংহ চন্নী আজ শপথ নিয়েছেন। অমরেন্দ্র শপথগ্রহণে গরহাজির ছিলেন। রাহুল গাঁধী শপথগ্রহণে অংশ নিতে চণ্ডীগড়ে হাজির হন। তবে তাঁর পৌঁছনোর আগেই শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু এ সবের আগেই পঞ্জাবের ভারপ্রাপ্ত এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদক হরিশ রাওয়ত বলেন, ‘‘সিধুর নেতৃত্বেই কংগ্রেস নির্বাচন লড়বে।’’ এতেই বিবাদ বেধে যায়। পঞ্জাবের প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি সুনীল জাখর বলেন, ‘‘চরণজিতের শপথগ্রহণের দিনে রাওয়তের মন্তব্য আশ্চর্যজনক। এতে মুখ্যমন্ত্রীর কর্তৃত্ব খাটো হবে। তাঁকে এই পদে নির্বাচনের পিছনে যে কারণ, সেটাও জলে চলে যাবে।’’
পঞ্জাবের দলিত ভোটব্যাঙ্ক মোট ভোটারের ৩২ শতাংশ। সেই কারণে কংগ্রেস হাই কমান্ড চরণজিতের নামই চূড়ান্ত করেছিল। শপথগ্রহণের দিনই তাঁর বদলে অন্য কাউকে মুখ্যমন্ত্রীর মুখ হিসেবে তুলে ধরা হলে দলিত ভোটব্যাঙ্কের ফায়দা তোলার চেষ্টাই ব্যর্থ হবে বুঝে কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব নড়ে বসেন। দিল্লিতে কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা সাংবাদিক বৈঠক করে বলেন, ‘‘হরিশ রাওয়তের মন্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিংহ চন্নী সরকারের প্রধান। প্রদেশ সভাপতি সিধু সংগঠনের প্রধান। দু’জনে সব কংগ্রেস নেতা, কর্মীর সঙ্গে মিলে ভোটে লড়বেন।’’ মুখ্যমন্ত্রীর দৌড়ে সকলের প্রথমে থেকেও ছিটকে যাওয়া বলরাম জাখরের পুত্র সুনীল অবশ্য তারপরেও পিছু হঠেননি। তিনি বলেছেন, কংগ্রেস ভোটে লড়বে সনিয়া-রাহুলের নেতৃত্বে।
কংগ্রেস পঞ্জাবে দলিত নেতাকে মুখ্যমন্ত্রী করে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে চাইছে দেখে আজ বিজেপি, মায়াবতী কংগ্রেসের সমালোচনা করেছে। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ একের পর এক টুইট করে অভিযোগ করেছেন, কংগ্রেস দলিত সমাজের কাউকেই সম্মান করেনি। বিএসপি নেত্রী মায়াবতীর অভিযোগ, এ সব কংগ্রেসের নির্বাচনী চমক। দলিত-তাসের ফায়দা তুলতে সুরজেওয়ালা বিজেপি, অকালি, মায়াবতী ও আম আদমি পার্টিকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলেছেন, ‘‘বিজেপি শাসিত এক ডজন রাজ্যে কোনও দলিত মুখ্যমন্ত্রী নেই কেন? পঞ্জাবে অকালি-বিএসপি জোট ক্ষমতায় এলে দলিতকে মুখ্যমন্ত্রী করা হবে বলে কেন ঘোষণা করছে না?’’
চরণজিৎ আজ শপথগ্রণের পরে নিজের দলিত পরিবার থেকে উঠে আসার কথা বলতে গিয়ে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলেন। তিনি বলেন, এক সময় তাঁদের বাড়ির কোনও ছাদ ছিল না। সাংবাদিক বৈঠক করে তিনি ঘোষণা করেন, কৃষকদের জল-বিদ্যুতের বিল মকুব করা হবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে তিন কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে কৃষক আন্দোলনের পাশে দাঁড়ানোর কথাও ঘোষণা করেন তিনি। তখন তাঁর পাশে ছিলেন সিধু।
দলিত শিখ চরণজিতকে মুখ্যমন্ত্রী করার পরে জাত-ধর্মের অঙ্কে ভারসাম্য রাখতে আজ এক জন জাঠ শিখ ও এক জন হিন্দুকে উপমুখ্যমন্ত্রী করা হয়েছে। সিধুর আপত্তিতে মুখ্যমন্ত্রীর দৌড় থেকে ছিটকে যাওয়া সুখজেন্দ্র সিংহ রণধাওয়া উপ-মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। হিন্দু নেতা হিসেবে ব্রহ্ম মহীন্দ্রার নাম ঠিক ছিল। কিন্তু অমরেন্দ্র ও কমলনাথের বন্ধু ব্রহ্ম শেষ মূহূর্তে বাদ পড়ে যান। তাঁর বদলে অমৃতসরের নেতা ওমপ্রকাশ সোনি দ্বিতীয় উপ-মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy