Advertisement
৩০ অক্টোবর ২০২৪
Chandigarh Mayor Election

চণ্ডীগড়ে মেয়র ভোটের আগে চাপে বিজেপি, পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাই কোর্টের সায় আপ-কংগ্রেসের আবেদনে

২০২২ সালে মেয়র পদে নির্বাচনে অংশ নেয়নি কংগ্রেস। তাতে আপের অঞ্জু কাটিয়ালকে ১ ভোটে পরাজিত করে মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন বিজেপির সরবজিৎ কউর। এ বার জোট বেঁধেছে আপ-কংগ্রেস।

অরবিন্দ কেজরীওয়াল (বাঁ দিকে) এবং রাহুল গান্ধী।

অরবিন্দ কেজরীওয়াল (বাঁ দিকে) এবং রাহুল গান্ধী। — ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০২৪ ১৯:৪৮
Share: Save:

কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল চণ্ডীগড়ের পুরসভার মেয়র নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া যাবে না। বিরোধী আম আদমি পার্টি (আপ) এবং কংগ্রেসের আবেদনে সাড়া দিয়ে বুধবার এই নির্দেশ দিল পঞ্জাব এবং হরিয়ানা হাই কোর্ট। আগামী ৩০ জানুয়ারি মেয়র নির্বাচন করতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছে বিচারপতি সুধীর সিংহ এবং বিচারপতি হর্ষ বুঙ্গারের বেঞ্চ।

বিজেপির বিরুদ্ধে আপ এবং কংগ্রেস হাত মিলিয়েছিল। গত ১৮ জানুয়ারি সেই ভোট হওয়ার কথা থাকলেও আচমকাই তা স্থগিত করে দিয়েছিলেন চণ্ডীগড় প্রশাসনের ডেপুটি কমিশনার বিনয়প্রতাপ সিংহ। জানিয়েছিলেন, প্রিসাইডিং অফিসার অসুস্থ হয়ে পড়ার কারণে ১৮ জানুয়ারির পরিবর্তে ৬ ফেব্রুয়ারি মেয়র পদে ভোট হবে। বিজেপি বিরোধী দুই দল হাই কোর্টে সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিল।

লোকসভা ভোটের আগে বিজেপির বিরুদ্ধে ‘ইন্ডিয়া’-র লড়াই হিসেবেই চণ্ডীগড়ের মেয়র নির্বাচনকে তুলে ধরেছিলেন বিরোধীরা। মেয়র পদে লড়ছে আপ। ডেপুটি মেয়র এবং সিনিয়র ডেপুটি মেয়র পদে আপের সমর্থনে লড়ছেন কংগ্রেসের প্রার্থী। গত ১৮ জানুয়ারি গোপন ব্যালটে পুরসভার অ্যাসেম্বলি হলে এই নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। একাধিক কাউন্সিলর জানিয়েছেন, ভোটের আগে হঠাৎ নির্দিষ্ট হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে একটি মেসেজ করে তাঁদের পরবর্তী নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত পুরসভায় আসতে বারণ করা হয়। কারণ হিসেবে বলা হয়, ভোট পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত অনিল মসীহ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে টেলিফোনে খবর এসেছে।

ডেপুটি কমিশনারের জারি করা নির্দেশেও বলা হয়, ‘মেয়র ও ডেপুটি মেয়র নির্বাচন ঘিরে আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি সম্পর্কে এসএসপি-র রিপোর্ট এবং অনিল মসীহের হাসপাতালে ভর্তি হওয়া নিয়ে মেডিক্যাল সুপারের রিপোর্ট— এই দুইয়ের ভিত্তিতে এই নির্দেশ জারি করা হল।’ যদিও আপ এবং কংগ্রেস প্রিসাইডিং অফিসারের অসুস্থতার খবরকে সত্যি বলে মানতে চায়নি। কংগ্রেস নেতা তথা চণ্ডীগড়ের প্রাক্তন সাংসদ পবন বনসল বলেন, ‘‘আমার কাছে নির্দিষ্ট তথ্য রয়েছে যে, শুধুমাত্র ভোট পিছোনোর উদ্দেশ্যেই বিজেপি প্রিসাইডিং অফিসারকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।’’

অন্য দিকে, আপ সাংসদ রাঘব চড্ডার দাবি, মোট ৩৬টি ভোটের মধ্যে ২০টি পেত ‘ইন্ডিয়া’-ই। তিনি বলেন, ‘‘এক জন প্রিসাইডিং অফিসার অসুস্থ হলে ভোট করানোর জন্য আর এক জনকে সেই দায়িত্ব দেওয়াই যেত। বৈধ পাস থাকা সত্ত্বেও আমাদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি পুরসভায়। আসলে উনি অসুস্থ নন। গণতন্ত্র খর্ব করতে ও অবাধ নির্বাচন পণ্ড করতে বিজেপি কতটা নীচে নামতে পারে, এ হল তার উদাহরণ।’’ ৬ ফেব্রুয়ারির মেয়র নির্বাচনের জন্য ডেপুটি কমিশনার বিনয়প্রতাপ যে প্রিসাইডিং অফিসার হিসাবে ‘অসুস্থ’ অনিলের বদলে অন্য কাউকে নিয়োগ করেননি, সে কথাও হাই কোর্টকে জানিয়েছিলেন মেয়র পদে বিরোধী জোটের প্রার্থী আপ কাউন্সিলর কুলদীপ কুমার।

প্রসঙ্গত, চণ্ডীগড়ের মেয়র পদ তফসিলি জাতির জন্য সংরক্ষিত হওয়ায় সেখানে নতুন করে নির্বাচন হবে। ২০২২ সালের পুরভোটে চণ্ডীগড়ের ৩৫ আসনের আপ ১৪, বিজেপি ১২, কংগ্রেস আট এবং শিরোমণি অকালি দল একটি আসনে জয়ী হয়েছিল। পরবর্তী সময় কংগ্রেস কাউন্সিলর হরপ্রীত কউর বাবলা বিজেপিতে যোগ দেন। আপের সঙ্গে সমঝোতা না হওয়ায় কংগ্রেস নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি। এর পরে অঞ্জু কাটিয়ালকে এক ভোটে পরাজিত করে মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন বিজেপির সরবজিৎ কউর। উভয়ই ১৪টি করে ভোট পেয়েছিলেন। কিন্তু এক আপ কাউন্সিলরের ভোট ‘বৈধ নয়’ বলে বাতিল করা হয়েছিল। এ বার জোট হওয়ায় অঙ্কের হিসাবে মেয়র ভোটে বিজেপির হার নিশ্চিত বুঝেই কাউন্সিলর কেনাবেচার সুযোগ দিতে মেয়র নির্বাচন পিছনো হয়েছিল বলে অভিযোগ বিরোধীদের।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE