ধান গাছের মণ্ডপ তৈরি করে কয়েক বছর আগে বরাকবাসীকে চমকে দিয়েছিল দক্ষিণ বিলপার সর্বজনীন। মাটির দেওয়াল তারি করে তাতে ধানের চারা রোপণ করা হয়েছিল। এ বার একই প্রক্রিয়ায় পুরো কৈলাস পর্বত বানিয়ে ফেলেছে আশ্রম রোড তেমাথার সৃষ্টি সংঘ।
পরিবেশবান্ধব মণ্ডপ করতে গিয়ে সবুজে ঢাকা পর্বত তৈরির বিষয়টি চূড়ান্ত করেন ক্লাবকর্তারা। কেমন হবে সবুজ, কী করে হবে সবুজ—শুরু হয় ভাবনাচিন্তা। স্থির হয়, কোনও কৃত্রিম সামগ্রী নয়। চাটাইয়ের উপর চটের বস্তা দিয়ে সুউচ্চ কাঠামো তৈরি করেন পাড়ার শিল্পী বিভাস দাস। তার উপর ফেলা হয় মাটি। দু’-তিনদিন পাইপের সাহায্যে জল ঢেলে লাগানো হয় ধান ও ঘাসের চারা। এখন ওই সবুজ আর পাহাড়-মণ্ডপেই থাকবে অজন্তা-শৈলীর স্বর্ণাভ প্রতিমা। সৃষ্টি সংঘের সভাপতি রাজেশ দাস বলেন, কৈলাস-চূড়ায় শিবলিঙ্গ তৈরি করেছেন তাঁরা। ওই শিবলিঙ্গে দুধ ঢালবেন হনুমান। মোটরের সাহায্যে দেখানো হবে, ১৬ ফুটের বাহুবলী হাতের পাত্র থেকে ‘দুধ’ ঢালছেন। আর সেই ‘দুধ’ ঝর্ণার আকারে নীচে নেমে আসছে।
রাজেশবাবুর কথায়, সব মিলিয়ে পুজোর খরচ ২ লক্ষ টাকায় আটকে রাখার চেষ্টা চলছে। তাঁর কথায়, পরিকল্পিত ভাবে কাজ করলে যে কোনও মাপের নজরকাড়া পুজোর জন্য ৫-৭ লক্ষ টাকাই যথেষ্ট। সৃষ্টি ক্লাবের পুজো অবশ্য বেশি দিনের নয়। সম্পাদক গিরীন্দ্র দাস জানালেন, এ বার পুজোর চতুর্থ বর্ষ। তাঁর দাবি, তবে ভাল পুজো দেখার জন্য দর্শনার্থীদের এক বার আশ্রম রোডের শেষ প্রান্ত পর্যন্ত আসতেই হবে।
এই দাবি যে অনেকটাই যথার্থ, ষষ্ঠীতেই আঁচ মিলেছে। তবে তার ঠিক বিপরীত ছবি তারাপুর মোটরস্ট্যান্ড সর্বজনীনের। বেশ কয়েক বছর ধরে সেরার লড়াইয়ে থাকা এই পুজো এ বার অনেকটাই সাদামাটা। শুরু থেকে জায়গায় নিয়ে সমস্যা মিটছিল না। তাঁরা পুজো করেন শিলচর রেল স্টেশন চত্বরে। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল গত বছরই জানিয়ে দিয়েছিল, স্টেশনের সামনে যানবাহন রাখার জায়গায় পুজো করা চলবে না। প্রয়োজনে অন্য দিকে জায়গা দেওয়া যেতে পারে। এই নিয়ে যখন কথা শেষ হয়, তখন আর বড় মণ্ডপ তৈরির সময় নেই। ফলে কমিটি গঠনের পথেও পা বাড়াননি তাঁরা। বাবুল হোড়কে সভাপতি করে সমস্ত সদস্য একযোগে কাজে ঝাঁপিয়ে পড়েন। চট দিয়ে কাল্পনিক মণ্ডপ তৈরি করেছেন রঞ্জিত সূত্রধর ও সন্দীপ ভট্টাচার্য। নটরাজ ভঙ্গিমার মূর্তি গড়েছেন পার্থ পাল।
অন্য দিকে, শ্যামাপ্রসাদ রোড পুজো কমিটির এ বারের থিম ‘দাও ফিরিয়ে সে শৈশব’। মণ্ডপে ঢুকে অনেককেই নস্টালজিয়ায় ভুগতে হবে। চতুর্দিকে ছবি আঁকা। গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় লাগানো হয়েছে সেই বেলুনওয়ালার ছবি, যার ডাক আজও শহরের অনেকের কানে বাজে। হাঁটতে হাঁটতে একই তাল-সুর-লয়ে বলে বেড়াতেন, ‘রাজাবাবু দাঁতভাঙা বুড়া বেলুনওয়ালা/ভুবন পাহাড়ের ময়না কথা যে কয় না’। মণ্ডপের ভিতরে বোর্ডে ঝোলানো মার্বেল খেলা, কানামাছির এক এক মুহূর্ত। ডান দিকে আজকের শিশুদের কিছু দৃশ্য তুলে ধরা হয়েছে। সুন্দর জার্সি-বুটে সুসজ্জিত ফুটবলার, তাকে মোবাইল-বন্দি করার তোড়জোড়। স্পাইডারম্যান-সহ টিভির অন্য কার্টুন চরিত্র। সব মিলিয়ে ষষ্ঠীর সন্ধ্যায় তৈরি শিলচর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy