—ফাইল চিত্র।
জেএনইউয়ে ফি বৃদ্ধির বিরুদ্ধে মামলার প্রথম শুনানির দিনেই দিল্লি হাইকোর্টের বক্তব্য ছিল, শিক্ষার দায়িত্ব থেকে সরকার হাত ধুয়ে ফেলতে পারে না। সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পর্যাপ্ত টাকা জোগানোর দায়িত্ব নিতে হবে তাকেই। কিন্তু প্রস্তাবিত নতুন শিক্ষানীতির খসড়ায় তার ঠিক উল্টো পথে হাঁটার যাবতীয় ইঙ্গিত মজুত বলে অভিযোগ অধ্যাপক ও পড়ুয়াদের বড় অংশের।
দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও শিক্ষক সংগঠনের প্রাক্তন সভাপতি আদিত্যনারায়ণ মিশ্রের দাবি, খসড়া নীতিতে উচ্চশিক্ষার বেসরকারিকরণে জোর দেওয়ার ইঙ্গিত স্পষ্ট। কারণ, সেখানে সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে একই ভাবে দেখার কথা বলা হয়েছে। প্রস্তাব রয়েছে, ইউজিসি এবং এআইসিটিই-র হাত থেকে সরিয়ে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিয়ন্ত্রণের ভার জাতীয় উচ্চশিক্ষা নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ (এনএইচইআরএ)-এর হাতে তুলে দেওয়ার। এতে উচ্চশিক্ষার খরচ অধিকাংশ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাবে বলে আশঙ্কা অনেকের।
দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অনিতা রাম পাল ও আদিত্যনারায়ণের আশঙ্কা দু’টি। এক, সরকার বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকেও একই ভাবে দেখলে, তারাও এনএইচইআরএ থেকে অর্থ (ফান্ডিং) পাবে, কিন্তু ফি ঠিক করতে পারবে নিজেদের মর্জি মাফিক। এতে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সংখ্যায় দ্রুত বাড়বে। ‘কম খরচের’ সরকারি প্রতিষ্ঠান তাদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে উঠতে পারবে না। সরকার সেগুলিতে বরাদ্দ কমাতে থাকবে সেই সুযোগে।
আরও পড়ুন: প্রেরণা রাজধানী, অবস্থান মুম্বইয়েও
দ্বিতীয় আশঙ্কা: ক্যাম্পাসিংয়ে মোটা বেতনের চাকরি মিলবে— এই আশায় বেশি খরচ করে, এমনকি শিক্ষাঋণ নিয়েও ইঞ্জিনিয়ারিং ও ম্যানেজমেন্টের মতো কোর্সে ভর্তি হন অনেকে। এখন এই সমস্ত প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিরও নিয়ন্ত্রণ এক ছাতার তলায় চলে এলে, পড়ার গড় খরচ বাড়তে পারে। সম্প্রতি এর বিরুদ্ধে বার বার স্লোগান উঠেছে জেএনইউয়ের পড়ুয়াদের মিছিলেও।
জেএনইউয়ের সেন্টার ফর ইকনমিক স্টাডিজ অ্যান্ড প্ল্যানিংয়ের অর্থনীতির প্রাক্তন অধ্যাপক প্রভাত পট্টনায়কের অভিযোগ, ‘‘পড়ুয়াদের কাজের বাজারের উপযুক্ত করে তোলা পাঠ্যক্রমের অংশ হতে পারে। সেটা শিক্ষার একমাত্র লক্ষ্য নয়। কিন্তু প্রস্তাবিত নীতিতে শিক্ষার ওই বাণিজ্যিক লক্ষ্য পূরণের বন্দোবস্ত করা হচ্ছে।’’ অনেকেরই আশঙ্কা, শিক্ষাকে চাকরি পাওয়ার হাতিয়ার বা পণ্য হিসেবে তুলে ধরেই ফি বাড়ানোর কথা জোর দিয়ে বলছে সরকার। সরকারি বরাদ্দ কমিয়ে শিক্ষার বেসরকারিকরণ ও বিদেশিকরণের দিকে ঝুঁকতে চাইছে। হালে আইআইটি-তে লাফিয়ে ফি বৃদ্ধি কিংবা জেএনইউয়ে ফি বাড়ানোর চেষ্টার সময়ে সরকারি তরফে তুলে ধরা যুক্তিই এর হাতেগরম প্রমাণ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy