কৃষক আন্দোলনের ‘ফসল হিসেবে’ এ বার পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের রাজনীতিতে ইঙ্গিত মিলল নতুন সমীকরণের।
২৬ জানুয়ারি দিল্লির ট্র্যাক্টর মিছিল থেকে ছড়ানো হিংসায় উত্তরপ্রদেশের শিখ যুবক নবরীত সিংহের মৃত্যু হয়েছিল। বৃহস্পতিবার তাঁর প্রার্থনা সভায় যোগ দিতে উত্তরপ্রদেশের রামপুরে নবরীতের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে পৌঁছন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা। ওই একই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে হাজির হন রাষ্ট্রীয় লোক দলের নেতা জয়ন্ত চৌধুরী এবং সমাজবাদী পার্টির নেতারাও।
রামপুরের দিদিবা গ্রামে প্রিয়ঙ্কা নবরীতের পরিবারের লোকজনদের সঙ্গে প্রার্থনা সভায় যোগ দিয়ে বলেন, ‘‘নবরীতের বয়স ছিল মাত্র ২৫ বছর। আমার ছেলে ২০ বছরের। আমি ওঁর পরিবারকে বলতে চাই, আপনারা একা নন। সারা দেশ, আমরা সবাই আপনাদের পাশে রয়েছি।’’
কৃষক পরিবারের সন্তান নবরীত অস্ট্রেলিয়ায় থেকে পড়াশোনা করতেন। কিছু দিন আগে তাঁর বিয়ে হয়। দিল্লিতে এসে বাড়ির লোকেদের সঙ্গে কৃষি আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। প্রিয়ঙ্কা বলেন, ‘‘নবরীত নিজের উৎসাহে আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন। এর পিছনে কিন্তু কোনও ষড়যন্ত্র ছিল না। তিন কৃষি আইন জারি করে মোদী সরকার অপরাধ করছে। এ সব প্রত্যাহার করা উচিত। তার থেকেও বড় অপরাধ, কৃষক আন্দোলনকে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখা হচ্ছে। নিহতদের বলা হচ্ছে সন্ত্রাসবাদী!’’
আগামী বছর উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা ভোট। এআইসিসি-তে প্রিয়ঙ্কা উত্তরপ্রদেশের ভারপ্রাপ্ত হলেও, ভোটের জন্য এখনও মাঠে নামেননি। কিন্তু প্রজাতন্ত্র দিবসে কৃষকদের মিছিল থেকে হাঙ্গামা আর পুলিশের চাপে কৃষক নেতা রাকেশ টিকায়েতের কান্নার পরে পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের চাষিরা নতুন করে আন্দোলনে যোগ দিতে শুরু করেছেন।জাঠ, মুসলিমরা এখন এককাট্টা হচ্ছেন। রাষ্ট্রীয় লোকদলের সঙ্গে টিকায়েতের সম্পর্কেও উন্নতি হয়েছে।
প্রমাদ গুনছে বিজেপি নেতৃত্ব। এই অবস্থায় তাই নবরীতের গ্রামে প্রিয়ঙ্কাকে নিয়ে গিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার সুযোগ ছাড়তে চাননি রাজ্যের কংগ্রেস নেতারা।
এ দিন সকালে ঝিরঝিরে বৃষ্টি ও মেঘলা আবহাওয়ার মধ্যেই প্রিয়ঙ্কা দিল্লি থেকে রওনা দেন। রাস্তায় দৃশ্যমানতা কম থাকার কারণে তাঁর গাড়ির সঙ্গে কংগ্রেস নেতাদের কনভয়ের ঠোকাঠুকিও হয়। তবে তাতে কেউ আহত হননি।