Advertisement
১৯ নভেম্বর ২০২৪

আন্দোলনের নতুন ঘরানা চান প্রধানমন্ত্রী

রাস্তা-রোকো, রেল-রোকো, জঙ্গি আন্দোলনের জমানা শেষ। গঠনমূলক কাজে মানুষকে সামিল করে নতুন আন্দোলনের ঘরানা তৈরির দাওয়াই দিলেন নরেন্দ্র মোদী। আগামিকাল আনুষ্ঠানিক ভাবে জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠক শুরু। তার আগে আজ পদাধিকারীদের বৈঠকে বেনজির ভাবে বক্তৃতা দিলেন প্রধানমন্ত্রী।

নেতা ও সেনাপতি। বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠক উপলক্ষে বৃহস্পতিবার বেঙ্গালুরুতে নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহ। ছবি: পিটিআই।

নেতা ও সেনাপতি। বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠক উপলক্ষে বৃহস্পতিবার বেঙ্গালুরুতে নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহ। ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বেঙ্গালুরু শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:৪৩
Share: Save:

রাস্তা-রোকো, রেল-রোকো, জঙ্গি আন্দোলনের জমানা শেষ। গঠনমূলক কাজে মানুষকে সামিল করে নতুন আন্দোলনের ঘরানা তৈরির দাওয়াই দিলেন নরেন্দ্র মোদী।

আগামিকাল আনুষ্ঠানিক ভাবে জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠক শুরু। তার আগে আজ পদাধিকারীদের বৈঠকে বেনজির ভাবে বক্তৃতা দিলেন প্রধানমন্ত্রী। যেখানে সব রাজ্য থেকে আসা দলীয় সভাপতি ও সংগঠনের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের সামিল করলেন তিনি। এবং বললেন, পুরনো জমানার গতানুগতিক আন্দোলনের মাধ্যমে তাত্‌ক্ষণিক ফল হয়তো পাওয়া যেতে পারে। কিন্তু নতুন ঘরানায় দীর্ঘমেয়াদি সুফল অনেক বেশি। ঠিক এই ভাবেই গাঁধীজি একদিন সমাজসেবার মাধ্যমে জন-আন্দোলন গঠন করেছিলেন। গতানুগতিক আন্দোলনের কথা বলতে কি পশ্চিমবঙ্গকে বোঝালেন প্রধানমন্ত্রী? মোদী সরাসরি নাম করেননি ঠিকই, কিন্তু এ ধরনের আন্দোলনের রেওয়াজ যে পশ্চিমবঙ্গে রয়েছে, সে কথা মানছেন বিজেপি নেতারা।

কী হবে এই নতুন ঘরানার আন্দোলনের রূপরেখা? প্রধানমন্ত্রীর ব্যাখ্যা, বিজেপি ইতিমধ্যেই বিশ্বের সবথেকে বড় দল হয়ে উঠেছে। দলের ‘সদস্যতা অভিযান’ আরও বাড়িয়ে সমাজের সমস্ত বর্গকে ছুঁতে হবে। আন্দোলন হবে সমাজ গঠনের। জনগোষ্ঠী তৈরি করে দায়িত্ব দিতে হবে এক একটি কাজের। যেমন, কোনও দলের দায়িত্ব হবে এলাকার সাফাই অভিযান। কেউ থাকবে পার্ক বা মন্দির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে। যাঁরা নতুন সদস্য হচ্ছেন, তাঁদের দলের কর্মীতে পরিণত করতে হবে। এক বার সদস্য সংগ্রহ অভিযান শেষ হলে তাঁদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে যাচাই প্রক্রিয়া যখন শুরু হবে, তখন তাঁদের কাছে পৌঁছে যাবে মোদীর চিঠি। সঙ্গে পুস্তিকা। সেখানে বলা থাকবে, বিজেপির সদস্য হিসেবে তাঁদের দায়িত্ব কী।

দলের হিসেবে, বিজেপির সদস্য সংখ্যা এখনই দশ কোটি ছুঁতে চলেছে। পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে তাঁদের গঠনমূলক আন্দোলনের রূপরেখা ঘোষণা করবেন সভাপতি অমিত শাহ। চলতি বছরে দীনদয়াল উপাধ্যায় জন্মশতবার্ষিকী চলছে, ৬ এপ্রিল বিজেপির ‘স্থাপনা (প্রতিষ্ঠা) দিবস’, ১৪ এপ্রিল অম্বেডকরের জন্মদিন, ২৬ মে মোদী সরকারের এক বছর পূর্ণ হবে, ২১ জুন ‘যোগ দিবস’। তার সঙ্গে রয়েছে স্বচ্ছ ভারত অভিযান, গঙ্গা সাফাই অভিযান। এই যাবতীয় কর্মসূচিতে সমস্ত সদস্যকে সামিল করতে চাইছেন মোদীরা। তাঁদের মতে, সদস্যতা অভিযানের সঙ্গে সঙ্গেই মানুষকে বোঝাতে হবে কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মসূচি। বোঝাতে হবে, কী ভাবে কৃষকদের স্বার্থ সুরক্ষিত করে তৈরি করা হয়েছে নতুন জমি বিল।

বিজেপি সূত্রের মতে, এই যাবতীয় গঠনমূলক কর্মসূচিতে সদস্যদের নিরন্তর সামিল করলে যে সব জায়গায় দল সাংগঠনিক ভাবে দুর্বল, সেখানেও প্রভাব বাড়বে। মোদী তেমনই মনে করছেন। কর্নাটকে সরকার গড়ে এক সময় দক্ষিণে প্রথম রাজ্য দখল করেছিল বিজেপি। এখন সেটি হাতছাড়া। বস্তুত, কর্মসমিতির বৈঠক বেঙ্গালুরুতে আয়োজনের অন্যতম লক্ষ্যই হল, দক্ষিণের রাজ্যগুলিতে দলীয় সংগঠন মজবুত করার পথে এগোনো। ঠিক একই ভাবে পশ্চিমবঙ্গেও সংগঠন আরও মজবুত করতে চায় বিজেপি। সেই জন্য আজ রাজ্য বিজেপি সভাপতি রাহুল সিংহ, রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা সিদ্ধার্থনাথ সিংহ, রাজ্যের দায়িত্বে থাকা মন্ত্রী নির্মলা সীতারমনের সঙ্গে বৈঠক করেন অমিত শাহ। বৈঠকে অমিত শাহকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, যাতে কর্মসমিতির প্রস্তাবে পশ্চিমবঙ্গের আলু চাষি, অনুপ্রবেশ সমস্যা, খাগড়াগড়ে মমতা সরকারের ভূমিকার সমালোচনার মতো বিষয়গুলি অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy