Advertisement
০৪ জানুয়ারি ২০২৫
Coronavirus

আর্থিক সঙ্কোচন ঠেকানোই মাথাব্যথা কেন্দ্রের

প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক উপদেষ্টা পরিষদের প্রাক্তন সদস্য রথীন রায় এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, যে যতই অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর কথা বলুক, ২০২০-২১ অর্থ বছরে দেশের জিডিপি বাড়ার বদলে ৭ থেকে ১২% কমবে।

ছবি সংগৃহীত

ছবি সংগৃহীত

প্রেমাংশু চৌধুরী 
শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০২০ ০৪:৩৭
Share: Save:

নরেন্দ্র মোদী সরকারের কর্তাব্যক্তিরা মুখে বলছেন, অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে অর্থ মন্ত্রকেরই অনুমান, এপ্রিল থেকে জুন, লকডাউনের তিন মাসে দেশের অর্থনীতির বহর প্রায় ২০ থেকে ৩০ শতাংশ কমেছে।

অর্থ মন্ত্রকের এক উচ্চপদস্থ কর্তা বলেন, “এটা ঠিক যে অর্থনীতি নিজের স্বাভাবিক গতিতে ফেরার চেষ্টা করছে। কিন্তু সেটা খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। অর্থনীতিতে করোনাভাইরাসের ধাক্কা ঠিক কতখানি লেগেছে, তা এখনও বোঝা যাচ্ছে না। তার মধ্যে আবার চলতি মাসে কিছু রাজ্যে লকডাউন জারি করতে হচ্ছে। কোনও কোনও রাজ্য সপ্তাহের মাঝখানে এক দিন বা দু’দিন লকডাউনের পথে হাঁটছে। তবে আমাদের আশা, অর্থ বছরের দ্বিতীয়ার্ধে, অর্থাৎ অক্টোবর মাসের পর থেকে অর্থনীতি কিছুটা চাঙ্গা হবে।”

প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক উপদেষ্টা পরিষদের প্রাক্তন সদস্য রথীন রায় এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, যে যতই অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর কথা বলুক, ২০২০-২১ অর্থ বছরে দেশের জিডিপি বাড়ার বদলে ৭ থেকে ১২% কমবে। রথীনের মতে, মূল্যবৃদ্ধি-সহ জিডিপি ১৪ থেকে ১৭% কমবে। খুব ভাল পরিস্থিতি হলেও ১২%। অর্থ মন্ত্রকের কর্তারাও মানছেন, কোভিড ও লকডাউনের জেরে বাজারে জোগান ও চাহিদা, দুই-ই মার খেয়েছে। এক দিকে পরিযায়ী শ্রমিকদের অভাবে কারখানার উৎপাদন মার খেয়েছে। অন্য দিকে, রোজগার কমায় বাজারে চাহিদা কমেছে।

গত সপ্তাহেই অর্থনীতির অবস্থা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দফতরের কর্তাদের সঙ্গে অর্থ মন্ত্রকের কর্তাদের বৈঠক হয়েছে। সরকারি সূত্রের খবর, বৈঠকের পর্যালোচনায় একটি বিষয় স্পষ্ট। তা হল, আর্থিক বৃদ্ধি ধাক্কা খাওয়ায় রাজস্ব আয়ও কমবে। ফেব্রুয়ারি মাসে বাজেটে আয়-ব্যয়ের যে অঙ্ক কষা হয়েছিল, তার কোনওটাই মিলবে না। আর্থিক বৃদ্ধির হার ৬ থেকে ৬.৫% ছোঁবে ধরে নিয়ে বাজেটের হিসেব হয়েছিল। এখন বৃদ্ধি দূর অস্ত্‌। সঙ্কোচন কতখানি কম রাখা যায়, সেটাই চিন্তা। এ বার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের মধ্যে বৈঠকে নতুন করে বাজেটের হিসেব কষা নিয়ে আলোচনা হতে পারে।

বাজেটে অনুমান ছিল, চলতি বছরে কর বাবদ আয় গত বছরের থেকে ১২% বেড়ে ২৪.২৩ লক্ষ কোটি টাকায় পৌঁছবে। এখন অর্থ মন্ত্রকের আশঙ্কা, কর বাবদ আয় ৭ থেকে ৮% কমবে। কিন্তু সেই অনুযায়ী খরচ ছাঁটাই করলে অর্থনীতির আরও ধাক্কা খাওয়ার আশঙ্কা। ফলে বেশি ধার করা ছাড়া উপায় নেই। আজই স্টেট ব্যাঙ্ক তার রিপোর্টে জানিয়েছে, এক দিকে বেশি ঋণ, অন্য দিকে জিডিপি কমে যাওয়া— এই দুইয়ের ফলে ধারের পরিমাণ জিডিপি-র ৮৭.৬% ছুঁয়ে ফেলবে।

নর্থ ব্লকের কর্তাদের যুক্তি, এপ্রিল মাসে প্রায় গোটা অর্থনীতিই লকডাউনে চলে যাওয়ায় জিডিপি-র ৬০%-ই মুছে গিয়েছিল। মে মাসেও মোটামুটি একই ছবি ছিল। জুন থেকে ধাপে ধাপে হাল শোধরাচ্ছে। একই সঙ্গে তাঁরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, যে অতিমারির আগেও অর্থনীতির হাল ভাল ছিল না। ২০১৮-১৯ থেকেই আর্থিক বৃদ্ধির হার কমছে। লকডাউন শুরুর আগে জানুয়ারি থেকে মার্চ, এই তিন মাসে বৃদ্ধির হার ৩.১%-এ নেমে এসেছিল।

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health Coronavirus Lockdown Indian Economy
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy