পানীয় জলের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে একের পর এক হত্যার অভিযোগ। ছাড়েননি নিজের মা, ঠাকুমাকেও। সম্প্রতি ১৩ নম্বর খুন করার আগে পুলিশের হাতে ধরা পড়েন আমদাবাদের নবলসিংহ ছাবড়া। গ্রেফতার হন। কিন্তু পুলিশি হেফাজতেই মৃত্যু হয় তাঁর। মৃত্যুর আগে পুলিশি জেরায় অন্তত ১২ জনকে খুনের কথা স্বীকার করেছেন তিনি। বেশির ভাগই প্রায় একই কায়দায়— পানীয় জলের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে হত্যার অভিযোগ।
শুরু হয় ২০১০ সাল থেকে। ছাবড়ার ঠাকুমা বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন। কিন্তু ঠাকুমার চিকিৎসার জন্য খরচ করতে রাজি ছিলেন না তিনি। তাই পানীয় জলের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে সেটিও ওষুধ বলে খাইয়ে দেন ঠাকুমাকে। গত জানুয়ারি মাসে নিজের কাকাকেও এই একই কারণে খুন করার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। প্রথম দিকে অসুস্থ কাকার চিকিৎসা করালেও, পরে আর চিকিৎসার খরচ বহন করতে রাজি হননি। তাই জলের সঙ্গে বিষ পান করিয়ে মেরে ফেলেন বলে অভিযোগ। ন’মাস আগে নিজের মাকেও তিনি বিষ খাইয়ে খুন করেন বলে অভিযোগ। অভিযুক্তের মা-ও শারীরিক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন সেই সময়ে। পুলিশ সূত্রে খবর, মায়ের সঙ্গে মাঝেমাঝে ঝামেলাও হত অভিযুক্তের। তাই মাকেও একই ভাবে তিনি খুন করেন বলে অভিযোগ।
যদিও সেই সময়ে এই খুনগুলির বিষয়ে কারও মনে কোনও সন্দেহ হয়নি। হৃদ্যন্ত্র বিকল হয়ে মৃত্যু হয় তাঁদের। ফলে স্বাভাবিক মৃত্যু বলেই সেই সময়ে ধরে নেন পরিবারের সদস্যেরা। এ ছাড়াও বেশ কয়েকটি খুনের নেপথ্যে এই তরুণেরই হাত রয়েছে বলে সন্দেহ করছে পুলিশ। ২০২১ সালের অগস্টে পথ দুর্ঘটনায় এক জনের মৃত্যু হয়। পরে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে দেখা যায়, হৃদ্যন্ত্র বিকল হয়ে মৃত্যু। ২০২৩ সালের মার্চে একসঙ্গে তিন জনের মৃত্যু হয়। পুলিশ কল রেকর্ড খতিয়ে দেখে, ছাবড়ার সঙ্গে সেই সময়ে কথা হয়েছিল তাঁদের। ছাবড়ার মোবাইলের লোকেশনও আশপাশেই ছিল। এই খুনগুলির সঙ্গেও ছাবড়া জড়িত বলে সন্দেহ পুলিশের।
ছাবড়ার এই সন্দেহজনক গতিবিধির উপর গত তিন বছর ধরে নজর রাখছিলেন তাঁরই এক ব্যবসায়িক সঙ্গী। তিনিই পুলিশে খবর দেন। এর পর গত ১ ডিসেম্বর আরও এক সম্ভাব্য ‘শিকার’-কে খুনের আগে পুলিশ হাতেনাতে পাকড়াও করে তাঁকে। গ্রেফতারির পর পুলিশি হেফাজতেই মৃত্যু হয় অভিযুক্তের।