দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু প্রয়াত হয়েছেন ৬০ বছর আগে। তবুও বিজেপি নেতাদের ধারাবাহিক নিশানা থেকে রেহাই নেই তাঁর। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও নানা বিষয়ে বার বার নেহরুকে আক্রমণ করেছেন। ছাড় পাননি নেহরু-কন্যা ইন্দিরা গান্ধীও। রবিবার দিল্লির এক জনসভায় বাজেট নিয়ে বলতে গিয়ে মোদী আবার নেহরু-ইন্দিরাকে এক বন্ধনীতে রেখে আক্রমণ শানালেন। কেন্দ্রীয় বাজেটকে ‘জনগণের বাজেট’ বলে শনিবারই উল্লেখ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। রবিবার দিল্লির এক জনসভায় বাজেট নিয়ে বলতে গিয়ে তিনি জানান, এই বাজেট থেকে মধ্যবিত্তরা উপকৃত হবেন।
শনিবার বাজেট পেশ করতে গিয়ে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নতুন কর কাঠামোর ঘোষণা করেছেন। তিনি জানান, ১২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়ে কোনও কর দিতে হবে না। তাঁর কথায়, ‘‘সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার বেতনভোগীদের বছরে ১২ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা পর্যন্ত আয়ে শূন্য রাখা হয়েছে করের পরিমাণ।’’ সেই বিষয়ে বলতে গিয়ে মোদী টেনে আনলেন নেহরু, ইন্দিরার জমানাকে।
মোদীর কথায়, ‘‘আপনি যদি নেহরুজির সময়ে ১২ লক্ষ টাকা আয় করতেন তবে কর দিতেই আপনার বেতনের এক চতুর্থাংশ চলে যেত। আর ইন্দিরাজির আমলে ১২ লাখ টাকা আয় করলে আপনাকে কর হিসাবেই ১০ লাখ গুনতে হত! ১০-১২ বছর আগেও কংগ্রেস জমানায় ১২ লাখ টাকা আয় করলে কর হিসাবেই দু’লক্ষ ৬০ হাজার টাকা দিতে হত। কিন্তু বিজেপি সরকারের আমলে তা হবে না। শনিবারের বাজেটেই তা স্পষ্ট।’’ প্রধানমন্ত্রীর দাবি, ‘‘স্বাধীনতার পরে যাঁরা ১২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত উপার্জন করতেন, তাঁরা করের হাত থেকে কখনও এত ছাড় পাননি।’’
আরও পড়ুন:
অতীতেও নানা বিষয়ে কংগ্রেসকে আক্রমণ করতে গিয়ে মোদী টেনে এনেছেন নেহরু, ইন্দিরাকে। সে সংসদে অম্বেডকর বিতর্ক হোক বা সংবিধান নিয়ে আলোচনা। কিংবা ভারত-আমেরিকা সম্পর্ক নিয়ে বলতে গিয়েও মোদী সরকারের নেতারা নেহরু জমানার সঙ্গে তুলনা টেনেছেন। সম্প্রতি, সংসদে সংবিধান বিতর্কে মোদী বলেন, ‘‘কংগ্রেস কখনও জরুরি অবস্থার কালি মুছতে পারবে না। জরুরি অবস্থা জারি করে জনগণের সমস্ত সাংবিধানিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। গোটা দেশকে জেলখানায় পরিণত করেছিলেন ইন্দিরা গান্ধী। প্রথম প্রধানমন্ত্রী এক সময় সমস্ত কংগ্রেস মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখে বলেছিলেন, সংবিধান যদি বাধা সৃষ্টি করে, তবে তা পরিবর্তন করা উচিত। সংবিধান পরিবর্তনে নেহরু যে বীজ বপন করেছিলেন, ইন্ধিরা গান্ধী তা অনুসরণ করেছিলেন।’’