প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
ভারত-ভুটান সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দিয়ে আজ ভুটানের সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান ‘অর্ডার অব ড্রুক গ্যালপো’য় সম্মানিত হলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনিই প্রথম কোনও বিদেশি রাষ্ট্রনেতা, যাঁকে এই সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মানে ভূষিত করল ভুটান। ভুটানের সঙ্গে সখ্যের এই নিবিড় ছবি নিঃসন্দেহে অস্বস্তিতে ফেলবে চিনকে যারা ভুটানের সঙ্গে সীমান্ত চুক্তি সম্পন্ন করার খুব কাছে পৌঁছে গিয়েছে।
আজ সকালে দু’দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ভুটানে গিয়েছেন মোদী। তাঁর দ্বিতীয় দফার মেয়াদে এটিই শেষ বিদেশ সফর। ফিরেই তাঁকে ব্যস্ত হয়ে পড়তে হবে লোকসভা ভোটের প্রচারে। মোদীর এই সফর কূটনৈতিক ভাবে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ কারণ দীর্ঘদিন বাদে ভারতের মিত্র একটি পক্ষ সে দেশে ক্ষমতায় এসেছে। রাজনৈতিক সূত্রের ‘বার্তা’ ছিল, মলদ্বীপের পর এ বার ভুটানের ভোটেও নাক গলাবে চিন। ভারতের ‘বন্ধুদের’ হারানোর চেষ্টা করবে। কিন্তু ভুটানের জাতীয় আইনসভা ‘ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি’র ভোটে ‘ভারতবন্ধু’ বলে পরিচিত শেরিং তোবগের দল পিডিপি-ই জিতে এসেছে। তোবগে আজ অভ্যর্থনা জানানোর অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে ‘আমার বড় ভাই’ বলে সম্বোধন করেন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদীকে তাদের দেশের সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মানে ভূষিত করার সিদ্ধান্ত অবশ্য আগেই ঘোষণা করেছিল ভুটান। ২০২১ সালের ১৭ ডিসেম্বর ভুটানের ১১৪তম জাতীয় দিবস উদযাপনের সময়েই এ কথা ঘোষণা করেছিলেন ভুটানের রাজা। ভুটানের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘মোদী জাতীয়, আঞ্চলিক তথা গোটা বিশ্ব নেতৃত্বের এক অসামান্য প্রতীক। তাঁর নেতৃত্বে ভারত বিশ্বের সবে চেয়ে দ্রুতবর্ধনশীল অর্থনীতির দেশ হয়ে উঠেছে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে ভারত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হয়ে উঠবে।’
অন্য দিকে ভুটানের টেন্ড্রেলথাং ফেস্টিভ্যাল গ্রাউন্ডে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেছেন, “ভারত ও ভুটানের মধ্যে সম্পর্ক যেমন প্রাচীন তেমনই নতুন এবং সমসাময়িক। আমি ২০১৪ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হয়ে, প্রথম
বিদেশ সফর হিসেবে ভুটান সফর করেছিলাম স্বাভাবিক ভাবেই। দশ বছর আগে ভুটানের সেই প্রসারিত অভ্যর্থনা আমার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনের সূচনাকে
স্মরণীয় করেছিল।”
প্রধানমন্ত্রীর কথায়, “ভারত ও ভুটানের যুবাদের আকাঙ্ক্ষা ও লক্ষ্য একই রকম। ভারত ২০৪৭ সালের মধ্যে উন্নত দেশ হওয়ার লক্ষ্য স্থির করেছে, যেখানে ভুটান ২০৩৪ সালের মধ্যে একটি উচ্চ আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। আপনাদের লক্ষ্য পূরণ করতে, ভারত আপনার সঙ্গে প্রতিটি পদক্ষেপে দাঁড়িয়ে আছে।” প্রধানমন্ত্রীর কথায়, “ভারত এবং ভুটান একটি যৌথ ঐতিহ্যের অংশ। ভগবান বুদ্ধের জন্মস্থান ভারত। ভগবান বুদ্ধ ভারতেই নির্বাণ লাভ করেছিলেন। অন্য দিকে, ভুটান হল সেই জায়গা, যা ভগবান বুদ্ধের শিক্ষাকে গ্রহণ ও সংরক্ষণ করেছে।”
অন্য দিকে ভুটান নেতৃত্বের বক্তব্য, মোদীর ‘প্রতিবেশী প্রথম’ নীতি দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলিকে আরও শক্তিশালী করে তুলেছে। প্রধানমন্ত্রী মোদীকে তাদের দেশের সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মানে ভূষিত করে ভুটান মানপত্রে জানিয়েছে, ভুটানের স্বনির্ভর হওয়া ও উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী মোদী সব সময় পাশে রয়েছেন। ভারত ও ভুটানের মধ্যে বন্ধুত্ব বাকি দেশগুলির কাছে উদাহরণ হয়ে থাকবে।’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy