প্রতীকী ছবি।
কোভিড রোগীদের মৃত্যু রুখতে ক্রমশ প্লাজ়মা প্রয়োগ পদ্ধতির দিকে ঝুঁকছে রাজ্যগুলি। একাধিক রাজ্যে শুরু হয়েছে এই ব্যবস্থা। অথচ স্বাস্থ্য মন্ত্রক বলছে, এখনও পরীক্ষামূলক পর্যায়ে রয়েছে প্লাজ়মা প্রয়োগ। এই পরিস্থিতিতে প্লাজ়মা দান নিয়ে সংশয় এড়াতে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের অধীন ন্যাশনাল ব্লাড ট্রান্সফিউশন কাউন্সিল (এনবিটিসি) জানিয়ে দিল, করোনা রোগী সুস্থ হয়ে ওঠার আঠাশ দিন পরেই প্লাজ়মা দান করতে পারবেন। তার আগে নয়।
গুরুতর অসুস্থ রোগীদের ক্ষেত্রে অনেক ক্ষেত্রেই প্লাজ়মা প্রয়োগে আশাতীত ভাল ফল পাওয়া গিয়েছে। মহারাষ্ট্রের স্বাস্থ্যমন্ত্রী রাজেশ টোপের দাবি, তাঁর রাজ্যে ১০ জনের মধ্যে ৯ জন রোগী প্লাজ়মা প্রয়োগে সুস্থ হয়ে উঠেছেন। দিল্লিতেও প্লাজ়মা প্রয়োগে সুস্থ হয়ে উঠেছেন খোদ রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈন। তার পরেই দিল্লিতে প্লাজ়মা ব্যাঙ্ক খোলার সিদ্ধান্ত নেন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল। দিল্লির ইনস্টিটিউট অব লিভার অ্যান্ড বাইলারি সায়েন্স হাসপাতালে খোলা হয়েছে প্লাজ়মা ব্যাঙ্কটি। গুয়াহাটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেও প্লাজ়মা ব্যাঙ্ক চালু হয়েছে। কিন্তু এ নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের অবস্থান হল— কোভিডের কোনও নির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। বিভিন্ন ধরনের ওষুধ প্রয়োগের পাশাপাশি রোগীকে সুস্থ করতে প্লাজ়মা দেওয়া হচ্ছে। এটি এখনও পরীক্ষামূলক প্রয়োগের স্তরে রয়েছে। প্লাজ়মা পরীক্ষা ঘিরে নানাবিধ সংশয় থাকায় এ নিয়ে নির্দিষ্ট নির্দেশিকা জারি করেছে এনবিটিসি।
কারা প্লাজ়মা দিতে পারবেন, তা নিয়ে নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, করোনা সংক্রমণ থেকে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল বা নিভৃতবাস থেকে ছাড়া পাওয়ার ২৮ দিনের পরেই কোনও ব্যক্তি প্লাজ়মা দিতে পারবেন। আঠাশ দিনের পরে প্লাজ়মা দেওয়া নিশ্চিত করার উপরে জোর দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রকও। এ নিয়ে এমসের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক চিকিৎসক নীরজ নিশ্চল বলেন, ‘‘করোনা-আক্রান্ত কোনও গুরুতর অসুস্থ ব্যক্তির হয়ে লড়ার জন্যই সেরে-ওঠা রোগীর রক্ত থেকে ওই প্লাজ়মা গ্রহণ করা হয়। কারণ প্লাজ়মায় থাকা অ্যান্টিবডি ওই অসুস্থ ব্যক্তির শরীরে প্রবেশ করে তাঁর হয়ে ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করে। এখন যদি রোগ থেকে সেরে-ওঠা কোনও ব্যক্তির শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে অ্যান্টিবডি তৈরিই না-হয়, সে ক্ষেত্রে অসুস্থ ব্যক্তিকে প্লাজ়মা দিয়েও কোনও লাভ হবে না।’’ চিকিৎসকেরা দেখেছেন, হাসপাতাল বা নিভৃতবাস থেকে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে বেরোনোর আঠাশ দিন পরেই ওই ব্যক্তি প্লাজ়মা দানের ক্ষেত্রে সক্ষম হয়ে ওঠেন। এনবিটিসি জানিয়েছে, শুধু প্লাজ়মাই নয়, রক্তদানের ক্ষেত্রেও একই ভাবে করোনা-আক্রান্তেরা সুস্থ হওয়ায় আঠাশ দিন পরে যেন রক্তদান করেন। তার আগে কোনও ভাবেই রক্তদান করা উচিত নয়। কোভিড-আক্রান্ত দেশ থেকে যাঁরা ফিরেছেন অথচ সুস্থ, তাঁদেরও ফেরার ২৮ দিন পরেই রক্তদান করা উচিত।
আরও পড়ুন: কোন ধাপে রয়েছে করোনা টিকা, কী জানাচ্ছে ভারত বায়োটেক?
দিল্লিতে দেশের প্রথম প্লাজ়মা ব্যাঙ্কে প্রাথমিক ভাবে ২০০ ইউনিট প্লাজ়মা সংরক্ষণ করা যাবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের যদিও মত হল, প্লাজ়মা দিলেই যে সবাই সুস্থ হয়ে যাবেন, এমন কোনও প্রমাণ এখনও পাওয়া যায়নি। চিকিৎসক নীরজ নিশ্চল বলেন, ‘‘করোনার কোনও নির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। রেমডেসিভিয়ার ওষুধ থেকে প্লাজ়মা প্রয়োগ— সবই এখনও পরীক্ষামূলক পর্যায়ে রয়েছে। তাই কোন রোগীকে কী দেওয়া উচিত, তা চিকিৎসকের হাতে ছেড়ে দেওয়া ভাল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy