সাংবাদিক বৈঠকে প্রকাশ জাভড়েকর। ছবি: রণজিৎ নন্দী
স্কুল স্তরে কমানো হবে পাঠ্যক্রমের বোঝা। আর তা কমানো শুরু হবে আগামী বছর থেকে। আগামী বছর থেকে পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতে পাশ-ফেল চালু হয়ে যাবে বলেও আশা প্রকাশ করলেন কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর।
শনিবার কলকাতায় এসে জাভড়েকর বলেন, ‘‘পাঠ্যক্রমের ভার কমাতে আমরা প্রায় ৩৭ হাজার মত পেয়েছি। সব শিক্ষাবিদ এবং অন্যরা খতিয়ে দেখছেন। পাঠ্যক্রমের ভার অর্ধেক করা হবে।’’ তিনি জানান, পড়ুয়ার মস্তিষ্ক শুধু ডেটা ব্যাঙ্ক নয়। তাকে খেলাধুলো, জীবনশৈলির শিক্ষা দেওয়াও দরকার। ২০১৯ থেকে পাঠ্যক্রমের বোঝা কমানো শুরু হবে। ২০২০-র মধ্যে তা সম্পন্ন হবে। মন্ত্রী বলেন, ‘‘প্রথম শ্রেণির পড়ুয়ার জন্য একটি বই থাকার কথা। দ্বিতীয় শ্রেণির জন্য দু’টি বই। এ সব মানা হচ্ছে না। একটির বদলে থাকছে সাতটি বই।’’ স্কুলে ডিজিটাল বোর্ড থাকার উপরও গুরুত্ব দেন। সম্প্রতি মাদ্রাজ হাইকোর্টের বিচারপতি এন কিরুবকরণ বলেন, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পড়ুয়াদের ‘হোমওয়ার্ক’ দেওয়া উচিত নয়। জাভড়েকর জানান, তিনি বিচারপতির সঙ্গে একমত।
লোকসভার আসন্ন অধিবেশনে পাশ-ফেল নিয়ে শিক্ষার অধিকার আইনের সংশোধনী পেশ করা সম্ভব হবে বলে আশাবাদী জাভড়েকর। গত জুলাইয়ে তিনি জানিয়েছিলেন, পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতে পাশ-ফেল ফিরছে। লোকসভা অধিবেশনে শিক্ষার অধিকার আইনের সংশোধনীর পরেই তা কার্যকরী হবে। জাভড়েকরের অভিযোগ, অধিবেশন চালাতে না দিয়ে কংগ্রেসই তা করতে দিচ্ছে না। তাঁর আশা, আসন্ন অধিবেশনে আইনের সংশোধনী হলে ২০১৯-এর মার্চে পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণির পরীক্ষার্থীদের উপর তা কার্যকরী হবে।
২০০৯-এর শিক্ষার অধিকার আইন অনুযায়ী অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পাশ-ফেল প্রথা এখন নেই। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক চালু ছিল। কেন্দ্রে বিজেপি সরকার আসার পরেই নতুন শিক্ষানীতি প্রণয়নের সিদ্ধান্ত হয়। তার মধ্যে পাশ-ফেল প্রথা ফেরানো কেন্দ্রের প্রধান লক্ষ্য ছিল। শিক্ষার বিষয়টি কেন্দ্র-রাজ্যের যৌথ তালিকার অন্তর্ভুক্ত বলে সব রাজ্যের মত চায় কেন্দ্র। এ বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গ-সহ ২৫টি রাজ্য পাশ-ফেল প্রথা ফিরিয়ে আনার পক্ষেই মত দিয়েছে। মন্ত্রী গত বছরের জুলাইয়ে জানান, পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণির পরীক্ষা নেওয়া হবে। সেখানে যারা ফেল করবে তাদের দু’মাস পরে ফের এক বার পরীক্ষায় বসার সুযোগ দেওয়া হবে। এ বিষয়ে আইন সংশোধিত হলে রাজ্যগুলি নিজেদের মতো করে বিষয়টি চালু করতে পারবে। রাজ্যের স্কুলশিক্ষা দফতরও বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও শিক্ষাবিদের মত নিয়েছে।
মন্ত্রী এ দিন জানান, সব ধরনের সর্বভারতীয় পরীক্ষা নিতে ‘ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি’ কাজ শুরু করবে ২০১৯ থেকে। বছর দুয়েক আগে এই বিষয়ে কেন্দ্র সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। মন্ত্রী আরও জানান, নতুন জাতীয় শিক্ষা নীতি নিয়ে রিপোর্ট জমা পড়বে এ মাসেই। তার পরে মন্ত্রিসভায় আলোচনা করে কাজ শুরু হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy