মহুয়া মৈত্র। —ফাইল চিত্র।
মহুয়ার বিরুদ্ধে টাকা নিয়ে প্রশ্ন করার অভিযোগ কতটা সত্যি, তা খতিয়ে দেখতে বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবের বক্তব্য আগামী ২৬ অক্টোবর শুনবে সংসদের এথিক্স কমিটি। ঝাড়খণ্ডের বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত ছাড়াও আইনজীবী জয়আনন্দ দেহাদরি কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদের বিরুদ্ধে ওই অভিযোগ এনেছিলেন। মঙ্গলবার লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা সংসদের এথিক্স কমিটিকে অভিযোগের সারবত্তা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
নিশিকান্তের দাবি ছিল, লোকসভায় কয়েকটি নির্দিষ্ট বিষয়ে প্রশ্ন করার বিনিময়ে এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে উপহার এবং আর্থিক উপঢৌকন পাচ্ছেন মহুয়া। তদন্তে তৃণমূল সাংসদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান কমিটি বসানোর পাশাপাশি, তাঁকে সাংসদ পদ থেকে সাসপেন্ড করারও প্রস্তাব দেন দুবে।
রবিবারেই এ বিষয়ে স্পিকারকে চিঠি লিখে অভিযোগ জানিয়েছিলেন বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত। তাঁর অভিযোগ ছিল, দুবাই-কেন্দ্রিক ব্যবসায়ীর থেকে নেওয়া অর্থ এবং উপহারের বিনিময়েই লোকসভায় প্রশ্ন করেছেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া। অন্য দিকে, আইনজীবী দেহাদরিও মহুয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে সিবিআই প্রধানকে চিঠি দেন। দু’জনেরই দাবি ছিল এক। তাঁদের বক্তব্য, ব্যবসায়ী দর্শন হিরনানদানির থেকে অর্থ, উপহার নিয়ে আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে কথা বলেছেন মহুয়া। নাম জড়াচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহেরও। যার পাল্টা জবাবও দিয়েছিলেন মহুয়া।
রবিবার সন্ধ্যায় ওই চিঠির খবর ছড়িয়ে পড়তেই এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে মহুয়া পর পর তিনটি পোস্ট করেছিলেন। প্রথম পোস্টে তিনি লেখেন, ‘‘আদানি গোষ্ঠী যদি আমাকে চুপ করানোর জন্য বা আমাকে টেনে নীচে নামানোর জন্য সঙ্ঘবাদী আর ভুয়ো ডিগ্রিওয়ালাদের মিথ্যা দলিলে বিশ্বাস করবে বলে ঠিক করে থাকে, তবে আমি বলব, আপনাদের সময় নষ্ট করবেন না, বরং আপনাদের আইনজীবীদের ভাল কাজে ব্যবহার করুন।’’ পরে সাসপেনশনের প্রস্তাব নিয়ে বিজেপিকে আক্রমণ করে মহুয়া লেখেন, ‘‘এই সব ভুয়ো ডিগ্রিওয়ালা এবং বিজেপির তথাকথিত প্রাজ্ঞদের বিরুদ্ধে বহু সুবিধা লঙ্ঘনের অভিযোগের বিচার হওয়া এখনও বাকি আছে। আমার বিরুদ্ধে যে কোনও প্রস্তাব আপনারা সংসদে আনতেই পারেন। তবে আশা করব, তার আগে মাননীয় স্পিকার ওই বাকি থাকা বিষয়গুলির বিচার করবেন।’’
শেষে তাঁর বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের কাছে অভিযোগ দায়ের করার প্রসঙ্গে মহুয়া লেখেন, ‘‘আমি সিবিআইকেও স্বাগত জানাচ্ছি। তারা আমার বিরুদ্ধে অর্থ তছরুপের অনুসন্ধান করতে পারে। কিন্তু তার আগে আদানির সমস্ত অর্থ কোন পথে সমুদ্রের ওপারে পৌঁছচ্ছে চালান আর বেনামি অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে, সেটাও তাদের খুঁজে বার করতে হবে।’’
প্রসঙ্গত মহুয়ার বিরুদ্ধে লোকসভার স্পিকারকে লেখা চিঠিতে দুবে অভিযোগ করেছিলেন যে, লোকসভায় সাম্প্রতিক কালে যে ৬১টি প্রশ্ন মহুয়া করেছেন, তার মধ্যে ৫০টিই আদানি গোষ্ঠী সংক্রান্ত। যদিও আদানির বিরুদ্ধে একা মহুয়া নন, কংগ্রেস-তৃণমূল-সহ বহু রাজনৈতিক দলই প্রশ্ন তুলেছে। দুবের দাবি, মহুয়া ওই প্রশ্ন করেছেন উপহারের নামে পাওয়া ‘ঘুষ’-এর বিনিময়ে। এই মর্মেই মহুয়ার বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১২০এ ধারায় ফৌজদারি অপরাধ, সংসদের কক্ষের অবমাননা, সুবিধা লঙ্ঘনের মতো অভিযোগ এনেছিলেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy