দেহ-ক্যামেরা ঠিক ভাবে ব্যবহারের জন্য আবারও ট্র্যাফিক পুলিশকর্মী ও সব থানাকে নির্দেশ দিল লালবাজার। সেই সঙ্গে দেহ-ক্যামেরা নিয়ে কয়েক বছর আগে কলকাতা পুলিশের তৈরি করা স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিয়োর (এসওপি) ফের স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে বাহিনীকে। এক পুলিশকর্তা জানান, মঙ্গলবার ট্র্যাফিক পুলিশের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন নগরপাল মনোজ বর্মা। সেখানেই দেহ-ক্যামেরা ঠিক ভাবে ব্যবহারের নির্দেশ দেন তিনি।
কেন দেহ-ক্যামেরা ঠিক ভাবে ব্যবহারের বিষয়টি সামনে এল? পুলিশ জানিয়েছে, এর নেপথ্যে রয়েছে বাঁশদ্রোণীর একটি ঘটনা। সম্প্রতি সেখানে ট্র্যাফিক আইন ভাঙার অভিযোগে এক বাইকচালককে আটকেছিলেন কর্তব্যরত পুলিশ অফিসার। লাইসেন্সের ডিজিটাল কপি দেখানো নিয়ে দু’জনের মধ্যে বচসা বাধে। অভিযোগ, সেই সময়ে চালককে চড় মারেন ওই পুলিশ অফিসার। ঘটনাটি ভিডিয়ো করে সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে দেন সংশ্লিষ্ট চালক। যার ভিত্তিতে ওই পুলিশ অফিসারকে ক্লোজ় করে লালবাজার।
সূত্রের খবর, তদন্তে উঠে আসে, ঘটনার সময়ে ওই পুলিশ অফিসারের কাছে দেহ-ক্যামেরা ছিল না। থাকলে ঘটনার আগে বা পরে কী হয়েছে, তা জানা যেত বলে মনে করছেন পুলিশকর্তারা। লালবাজার জানিয়েছে, পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে এই ধরনের অভিযোগ উঠলে প্রকৃত ঘটনা জানার জন্য দেহ-ক্যামেরার মাধ্যমে ভিডিয়ো রেকর্ডিং কাজে লাগে। তাই আরও এক বার পুলিশকর্মীদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার ডিউটি কিংবা ট্র্যাফিকের জরিমানা করার সময়ে ভিডিয়ো রেকর্ডিংয়ের এসওপি মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে।
সূত্রের খবর, ওই এসওপি-তে বলা হয়েছে, কোনও পুলিশকর্মী বা অফিসার ডিউটিতে যোগ দেওয়ার আগে তাঁর দেহ ক্যামেরার মেমোরি ডিস্কে জায়গা আছে কিনা এবং ঘড়ি ঠিক মতো কাজ করছে কিনা, তা দেখে নিতে হবে। ক্যামেরা কাজ না করলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে জেনারেল ডায়েরি করতে হবে। পাশাপাশি, ঘটনার সময়ে পুলিশকর্মীদের দেহ-ক্যামেরা ‘অন’ রাখা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
ন’দফা ওই নির্দেশাবলীতে আরও বলা হয়েছে, রেকর্ড করা ভিডিয়ো ফুটেজ ছ’মাস সংরক্ষণ করতে হবে। প্রতিদিনের কাজের শেষে মেমোরি কার্ড থেকে ওই ভিডিয়ো ফুটেজ ট্র্যাফিক গার্ড বা ইউনিটের নির্দিষ্ট হার্ড ডিস্কে সেভ করতে হবে। সংশ্লিষ্ট ভিডিয়ো ফুটেজ
ছ’মাস পরে মুছে দিতে হলে উপ-নগরপালের অনুমতি নিতে হবে। পুরো বিষয়টি ঠিক মতো মানা হচ্ছে কিনা, তা দেখার জন্য ওসি এবং সহকারী নগরপালদের নির্দেশ দিয়েছে লালবাজার।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)