Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Panitanki Corridor

অনুপ্রবেশের নয়া রাস্তা পানিটাঙ্কি, গন্তব্য নেপাল, সতর্কবার্তা কেন্দ্রের

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বার্তায় বলা হয়েছে, ভারত-নেপাল সীমান্তের দার্জিলিং জেলার খড়িবাড়ি থানার পানিটাঙ্কি করিডর দিয়ে নেপালে চলে যাওয়ার ঘটনা নজরে এসেছে।

ছবি পিটিআই।

ছবি পিটিআই।

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০২:৪৬
Share: Save:

বাংলাদেশ থেকে ভারতে অনুপ্রবেশের প্রশ্নে মাঝে মাঝেই কেন্দ্রীয় সতর্কবার্তা আসত রাজ্যে। সীমান্তরক্ষী বাহিনী যাতে বেআইনি ভাবে প্রবেশ করা বাংলাদেশিদের ‘পুশব্যাক’ করে, সেই বার্তা পেতেও অভ্যস্ত নবান্ন। কিন্তু সম্প্রতি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক বাংলাদেশ থেকে নেপালে অনুপ্রবেশের প্রশ্নে সতর্ক করেছে রাজ্য সরকারকে। ভারতের মাটি ব্যবহার করে বাংলাদেশিরা যে ভাবে নেপাল সীমান্তে ঘাঁটি গাড়ছে তাতে চিন্তিত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। আর এ জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে পানিটাঙ্কি করিডর। গত ৬ ফেব্রুয়ারি রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিংহকে পাঠানো এক বার্তায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর পাশাপাশি, রাজ্য পুলিশকেও পানিটাঙ্কি করিডর নিয়ে বাড়তি নজরদারি চালাতে বলেছে নর্থ ব্লক।

নবান্নের স্বরাষ্ট্র কর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, এনআরসি, সিএএ আতঙ্কে বাংলাদেশে ফেরত যাওয়ার সংখ্যা বেড়েছে বলে ঢাকা সম্প্রতি নয়াদিল্লিতে বিদেশ মন্ত্রককে জানিয়েছে। এত দিন দুই ২৪ পরগনা, মালদহ, মুর্শিদাবাদ করিডর দিয়েই এ রাজ্যে অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটত। গত কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশিদের একাংশের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে না থেকে দক্ষিণের রাজ্যগুলিতে চলে যাওয়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছিল। নবান্নের কর্তারা জানাচ্ছেন, মূলত রাজমিস্ত্রি বা বেশি মজুরির কাজ পেতেই বাংলাদেশ থেকে অনেকে এসে সোজা দক্ষিণে পাড়ি দিচ্ছিলেন। কিন্তু বাংলাদেশ থেকে নেপাল সীমান্তে বসবাসের খবর একেবারেই নতুন বলে জানাচ্ছেন কর্তারা।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বার্তায় বলা হয়েছে, ভারত-নেপাল সীমান্তের দার্জিলিং জেলার খড়িবাড়ি থানার পানিটাঙ্কি করিডর দিয়ে নেপালে চলে যাওয়ার ঘটনা নজরে এসেছে। এ জন্য বাংলাদেশি এবং ভারতীয় দালালরা একযোগে কাজ করছে। বাংলাদেশি দালালরা মূলত কোচবিহার ও দিনাজপুরের সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশকারীদের ভারতীয় দালালদের হাতে তুলে দিচ্ছে। এর পর ভারতীয় দালালরা কোচবিহার বা দিনাজপুর থেকে বাংলাদেশিদের পানিটাঙ্কি সীমান্তে নিয়ে এসে নেপালে পাঠিয়ে দিচ্ছে। এখনও ভারত-নেপাল সীমান্ত মোটের উপর খোলা। ফলে পানিটাঙ্কি পেরিয়ে নেপালে অস্থায়ীভাবে থাকতে শুরু করছে বাংলাদেশিরা। প্রয়োজন মতো ভারতে ঢুকে কাজকর্ম করছে। ফের সীমান্ত পেরিয়ে নেপালে চলে যাচ্ছে।

স্বরাষ্ট্র কর্তারা জানাচ্ছেন, নেপালে আস্তানা তৈরি করায় ভারতীয় নিরাপত্তা এজেন্সগুলির ধরা ছোঁয়ার বাইরে থাকছে ওই অনুপ্রবেশকারীরা। কিন্তু ভারতে ঢুকে দিনভর কাজকর্ম করছে তারা। নর্থ ব্লকের বার্তায় বলা হয়েছে, ইদানীং ভারত-নেপাল সীমান্তে নেপালের অংশে আইএসআই সক্রিয় হয়েছে। ভারত সীমান্তঘেঁষা নেপালের প্রতিটি জেলায় আইএসআই মদতপুষ্ট স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কাজ করছে। এমন পরিস্থিতিতে যদি পানিটাঙ্কি করিডর ব্যবহার করে বাংলাদেশিদের বসবাস বাড়তে থাকে তা ভারতের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার জন্যও আশঙ্কার। সেই কারণেই নবান্নকে সতর্ক করা হয়েছে বলে জানাচ্ছেন স্বরাষ্ট্র কর্তারা।

নবান্নের এক শীর্ষ কর্তার বক্তব্য, ‘‘অনুপ্রবেশ ঠেকানো বিএসএফ, এসএসবি’র কাজ। তাদেরই দেখা উচিত বাংলাদেশ থেকে ভারতে ঢুকে কী ভাবে অনুপ্রবেশকারীরা নেপালে চলে আসছে। রাজ্য প্রয়োজন মতো সহযোগিতা করবে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy