আগামী সপ্তাহে দিল্লিতে ভারত-পাকিস্তান জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের (এনএসএ) বৈঠক। তার ঠিক আগে বিরোধী দলের চাপে পাক পার্লামেন্টে নওয়াজ শরিফ সরকার স্বীকার করে নিল, জামাত-উদ-দাওয়া সংগঠনের কাজকর্ম ‘সন্দেহজনক’। তাই তাদের উপরে নজর রেখেছে সরকার। মুম্বই হামলার অন্যতম চক্রী হিসেবে পরিচিত হাফিজ সইদের সংগঠন নিয়ে শরিফ সরকারের এই বক্তব্যকে এনএসএ স্তরের বৈঠকে হাতিয়ার করবে নয়াদিল্লি।
আজ পাক প্রশাসন স্বীকার করে নিল মুম্বই হামলার অন্যতম চক্রী হাফিজ সইদের সংগঠন জামাত-উদ- দাওয়ার কাজকর্ম যথেষ্ট সন্দেহজনক। সেই কারণে ওই সংগঠনের কাজকর্মের উপর নজর রাখছে নওয়াজ শরিফের প্রশাসন। দু’দেশের বৈঠকের আগে পাক সরকারের এই স্বীকারোক্তিতে ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে নতুন হাতিয়ার পেল ভারত।
রাশিয়ার উফায় ভারত ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে বৈঠকের পরেই সিদ্ধান্ত হয়েছিল, সন্ত্রাস নিয়ে আলোচনা করতে দিল্লিতে বৈঠকে বসবেন দু’দেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টারা। তার পরে গুরদাসপুর ও উধমপুরে হামলা-সহ বহু জঙ্গি সন্ত্রাস ঘটলেও এনএসএ স্তরের বৈঠক বাতিল হয়নি। গতকাল পাক পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সেনেটে গোয়েন্দা সংস্থার কাজকর্ম ও কিছু নিষিদ্ধ সংগঠনকে মদতদানের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল। তখনই বিরোধী পাকিস্তান পিপলস পার্টির সদস্য ফারহাতুল্লা বাবর জানান, সরকার এক দিকে সন্ত্রাস নির্মূল করার কথা বলছে। অন্য দিকে কিছু নিষিদ্ধ সংগঠনকে নাম বদলে দাতব্য করার নামে ফের সক্রিয় হওয়ার সুযোগ দিচ্ছে। জামাত-উদ-দাওয়ার নামও উল্লেখ করেন তিনি। লস্কর-ই-তইবা আন্তর্জাতিক ভাবে নিষিদ্ধ হওয়ার পরে নাম বদলে জামাত-উদ-দাওয়া নামে কাজ করতে শুরু করে হাফিজের সংগঠন। ফারহাতুল্লার প্রশ্নের জবাবে শরিফ সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বালিঘুর রহমান স্বীকার করে নেন, জামাতের কাজকর্ম সন্দেহজনক। তাই সরকার তাদের উপরে নজর রাখছে। দাতব্যের বদলে অন্য কাজ করলে তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে। বালিঘুরের কথায়, ‘‘২০০৮ সালে জামাতকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। কিন্তু ২০১০ সালে লাহৌর হাইকোর্টের রায়ের পরে তাদের দাতব্য কাজ করার অনুমতি দেওয়া হয়।’’ বালিঘুরের জবাবের পরে ফারহাতুল্লা বলেন, ‘‘সরকার জুলাই মাসে লাহৌর হাইকোর্টের ওই আদেশের কপি পার্লামেন্টে পেশ করার কথা বলেছিল। এখনও তা করা হয়নি। ফলে আমাদের সন্দেহ হচ্ছে, লাহৌর হাইকোর্ট আদৌ জামাতকে দাতব্য করার অনুমতি দেয়নি।’’
সম্প্রতি মুম্বই হামলার ছক পাকিস্তানেই কষা হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন প্রাক্তন পাক গোয়েন্দা কর্তা তারিক খোসা। খোসার মতোই বালিঘুরের রহমানের বক্তব্য কার্যত না চাইতেই দিল্লির হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রের খবর, মুম্বই, গুরদাসপুর, উধমপুর-সব ক্ষেত্রেই হাফিজ সইদ কী ভাবে জড়িত তা বৈঠকে তুলে ধরবেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল।
আজ পাক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা সরতাজ আজিজ বলেন, ‘‘২৩ ও ২৪ অগস্ট এনএসএ বৈঠকে যোগ দিতে আমি ভারতে যাচ্ছি।’’ কিন্তু দিল্লির তরফে জানানো হয়েছে, এখনও সরকারি ভাবে এনএসএ বৈঠকে যোগদানের কথা নিশ্চিত করেনি পাকিস্তান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy