Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
‘কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাই দায়ী’
Vaishno Devi

Vaishno Devi: এত মৃত্যুর জন্য ভিড়কেই দুষছেন স্বজনহারারা

মৃত অরুণপ্রতাপ সিংহের (৩০) এক বন্ধু জানালেন উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুর থেকে মন্দির দর্শনে এসেছিলেন তাঁরা।

অ্যাম্বুল্যান্স ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন আত্মীয়েরা। শনিবার জম্মুতে।

অ্যাম্বুল্যান্স ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন আত্মীয়েরা। শনিবার জম্মুতে। পিটিআই।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০২২ ০৭:২৭
Share: Save:

বছরের প্রথম দিনে বৈষ্ণো দেবীর আশীর্বাদ নেবেন বলে এসেছিলেন ওঁরা। কেউ উত্তরপ্রদেশ থেকে তো কেউ হরিয়ানা বা বিহার থেকে। কেউ পরিবারের সঙ্গে, তো কেউ আবার বন্ধুদের
সঙ্গে দল বেঁধে। কিন্তু নতুন বছরের প্রথম দিনের ভোরটাই আর দেখা হল না ১২ জনের। কেউ হারালেন প্রাণের বন্ধু, কেউ বা পরিবারের কাউকে।

আজ ভোর রাতে জম্মুর কাটরার কাছে বৈষ্ণো দেবীর মন্দিরে পদপিষ্টের ঘটনায় কিন্তু স্থানীয় প্রশাসন ও মন্দির কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাকেই দুষলেন প্রত্যক্ষদর্শীদের অনেকে। পুলিশ বা প্রশাসন সেই অভিযোগে আমল দেয়নি অবশ্য। তবে পুণ্যার্থীদের কথায় ঝরে পড়ল প্রশাসনের প্রতি ক্ষোভ। প্রবল ভিড়ে কোভিড বিধি লঙ্ঘনের কথাও বললেন অনেকে।

মৃত অরুণপ্রতাপ সিংহের (৩০) এক বন্ধু জানালেন উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুর থেকে মন্দির দর্শনে এসেছিলেন তাঁরা। সংবাদমাধ্যমের কাছে নিজের নাম জানাতে চাইলেন না ওই ব্যক্তি। তবে বললেন, ‘‘দশ বছর আগে এক বার এখানে এসেছিলাম। এ বার তো ভিড় দেখে চমকে গেলাম। পদপিষ্ট হওয়ার পরে ভোর ছ’টা পর্যন্ত কোনও সাহায্য পাইনি আমরা। আমার বন্ধুটা এ ভাবে চলে গেল, কিছু করতে পারলাম না।’’

পরিবারের সঙ্গে বিহারের মুজফ্ফরপুর থেকে দর্শনে এসেছিলেন রানি দেবী। বললেন, ‘‘আমরা ভাগ্যবান যে আমাদের কিছু হয়নি। দেখলাম মাটিতে অনেকেই নিথর হয়ে পড়ে রয়েছেন।’’ গোটা ঘটনার জন্য অতিরিক্ত ভিড় আর তা সামলাতে ব্যর্থ প্রশাসনকেই দায়ী করলেন তিনি।

উত্তরপ্রদেশের গাজ়িয়াবাদের এক ব্যক্তি পরিজনের দেহ শনাক্তের জন্য মর্গের বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। নাম জানাতে চাইলেন না। বললেন, ‘‘মন্দির কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থার জন্যই তো এ রকম ঘটনা হল। এত ভিড়, অথচ সামাল দেওয়ার কোনও
ব্যবস্থাই নেই। ভিড়টা নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেই তো আর এতগুলো প্রাণ যেত না। অনেকেই মন্দির চত্বরের মাটিতে শুয়ে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। তাঁদের উপর দিয়ে ভিড়টা দৌড়তে শুরু করে। ঘুমের মধ্যে ওঠারই সুযোগ পাননি অনেকে।’’ আর এক প্রত্যক্ষদর্শী জানালেন, একটা উঁচু জায়গা থেকে নীচে নামার মুখে গোটা ভিড়টাকে কেউ একটা ধাক্কা মারে, তার পরেই শুরু হয় হুড়োহুড়ি। অনেক মহিলা আর শিশু মাটিতে পড়ে গিয়েছিল বলে জানান তিনি। কোনও মতে উঁচু একটা জায়গায় দাঁড়িয়ে ওই ব্যক্তি নিজের প্রাণ বাঁচান বলে জানিয়েছেন তিনি।

মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিয়রের বাসিন্দা প্রেম সিংহ বললেন, ‘‘কোথাও কোভিড বিধি মানা হচ্ছিল না। যে যেমন পারছিল মন্দিরে ঢোকার চেষ্টা করছিল। মুখে মাস্কও ছিল না অনেকের। এক্সরে মেশিনের সামনে দাঁড়ানো পুলিশকর্মীরা যেন ভিড়ের সামনে আত্মসমর্পণ করেছিলেন। তবে তাঁরা বারবার সাবধান করছিলেন, এমন একটা কিছু হতে পারে।’’

দুর্ঘটনার পরে মন্দিরে দর্শন চালু থাকলেও অনেকেই আজ ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। রেখা নামে পঠানকোটের বাসিন্দা বললেন, ‘‘ভবনে পৌঁছেও দর্শন না
করেই ফিরে যাচ্ছি আমরা। পদপিষ্ট হওয়ার পরে ওখানে আর থাকতে ইচ্ছে হল না।’’

১২ জনের মধ্যে আট জন মৃতের নাম প্রকাশ করেছে পুলিশ। যাঁদের মধ্যে উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা, দিল্লি ও জম্মু-কাশ্মীরের রাজৌরির বাসিন্দারা রয়েছেন। মৃতদের সকলেরই বয়স ২৪ থেকে ৩৮ এর মধ্যে।

অন্য বিষয়গুলি:

Vaishno Devi Stampede
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy