প্রতীকী ছবি।
বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে কন্যাশ্রী প্রকল্পের সূচনা। সেই প্রকল্প বিশ্বসেরার তকমাও পেয়েছে। কিন্তু তার পরেও বাল্যবিবাহ কমানো গেল না এ রাজ্যে। পঞ্চম জাতীয় পরিবার স্বাস্থ্য সমীক্ষার (এনএফএইচএস) সদ্য প্রকাশিত রিপোর্টে এ তথ্যই উঠে এল।
ওই সমীক্ষার রিপোর্ট বলছে, এ রাজ্যে বাল্য-বিবাহের সূচক এখনও উদ্বেগজনক জায়গায়। বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায় বাল্য বিবাহের হার অনেকটাই বেশি। ২০১৯-২০ সালের ওই সমীক্ষা বলছে ২০ থেকে ২৪ বছর বয়সি মেয়েদের ৪১.৬ শতাংশ মেয়ের বিয়ে হয়েছে আঠারো বছরের আগে। এর মধ্যে গ্রামীণ এলাকার মেয়েদের বিয়ের হার ৪৮.১ শতাংশ এবং শহরের মেয়েদের বিয়ের হার ২৬.২ শতাংশ।
গত শনিবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন পঞ্চম জাতীয় পরিবার স্বাস্থ্য সমীক্ষার রিপোর্ট প্রকাশ করেন। রিপোর্ট জানাচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গের ১৮,১৮৭ টি পরিবারের ২১,৪০৮ জন মহিলা ও ৩০২১ পুরুষের উপর এই সমীক্ষা চালানো হয়েছে। আর সেই সমীক্ষা চালাতে গিয়েই দেখা গিয়েছে বাল্য-বিবাহের হার শহরের থেকে গ্রামে বেশি. শুধু তাই নয়, ১৫-১৯ বছরের মেয়েদের মধ্যে ১৬.৪ শতাংশই আঠারো বছরের আগে সন্তান সম্ভবা হয়ে পড়েছেন। ২০১৫-১৬ সালের চতুর্থ জাতীয় পরিবার স্বাস্থ্য মিশনের রিপোর্ট অনুযায়ীও এ রাজ্যে ২০-২৪ বছর বয়সি মেয়েদের বিয়ের হার ছিল ৪১.৬ শতাংশ।
যদিও এ বিষয়ে এ রাজ্যের শিশুর অধিকার রক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন অনন্যা চক্রবর্তীর দাবি, ‘‘সম্প্রতি কোভিড, আমপান এবং স্কুল বন্ধ—সব মিলিয়ে বাড়িতে মেয়েরা বসে থাকায় অনেক বাবা-মা বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। আর সমীক্ষায় হার বেশি হওয়ার আরও একটা কারণ কিন্তু মাথায় রাখতে হবে। সেটা হল এ রাজ্যে রিপোর্ট বেশি হয়। অর্থাৎ সচেতনতা বাড়ার জন্যই আঠারো বছরের নীচে মেয়ের বিয়ে হলেই সরকারিভাবে তা রিপোর্ট হয়।’’ তবে রিপোর্ট পাওয়া মাত্রই বেশিরভাগ বিয়ে আটকানো হয় বলেও তিনি জানান।
ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব জুরিডিক্যাল সায়েন্সের অধ্যাপিকা রুচিরা গোস্বামীর ব্যাখ্যা, গত কয়েক বছর ধরে নাবালক-নাবালিকাদের বাড়ি থেকে পালিয়ে বিয়ের প্রবণতা বেড়েছে আর সেই তালিকা থেকে এ রাজ্যও বাদ নেই। ফলে সেই সংখ্যাটিও এই সমীক্ষায় ধরা পড়ছে। আবার রয়েছে বিয়ের নাম করে পাচারের ঘটনা। সেই তথ্যও যোগ হচ্ছে পাচারের এবং একই সঙ্গে নাবালিকা বিয়ের সমীক্ষাতেও। তাঁর কথায়, ‘‘যে বিষয়টি খুবই চিন্তার, তা হল বাড়ি থেকেও নাবালিকার বিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কারণ, কন্যাশ্রী পেলেও দেখা যায়, সেই মেয়েটির পরিবারের আর্থ-সামাজিক অবস্থা খুবই খারাপ। ফলে বাবা-মা যেন তেন প্রকারে বিয়ে দিয়ে হয় মেয়েকে একটু ভাল রাখার চেষ্টা করছেন বা মেয়ে রাখলে দায়িত্ব বেড়ে যাবে. ফলে তাড়াতাড়ি বিয়ে দিয়ে দায়মুক্ত হতে চাইছেন।’’
এ দিকে, ২০১৫-১৬ সালের চতুর্থ জাতীয় পরিবার স্বাস্থ্য সমীক্ষা বলছে, ১৫-১৯ বছরের মেয়েদের মধ্যে ১৮.৩ শতাংশ মেয়ে আঠারো বছরের আগে সন্তান ধারণ করেছিলেন। ফলে চতুর্থের সঙ্গে পঞ্চমের সমীক্ষার রিপোর্ট তুলনা করলে দেখা যাচ্ছে, সন্তান ধারণের ক্ষেত্রে আঠারোর নীচে মেয়েদের হার এ রাজ্যে কিছুটা হলেও কমেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy