প্রতীকী ছবি।
বেসরকারি সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া ১৫১টি ট্রেনের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের ১৫টি রুটের দূরপাল্লার ট্রেন রয়েছে। রেল জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই বেশ কিছু সংস্থা ওই ট্রেন চালাতে আগ্রহ দেখিয়েছে। তাই আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে দরপত্র প্রক্রিয়া ডাকার কাজ শুরু করে দিতে চাইছে রেল। তবে কোন কোন সংস্থা আগ্রহী, তা তারা জানায়নি।
রেল মন্ত্রকের মতে, এই পদক্ষেপের ফলে রেলের ঘরে প্রায় ত্রিশ হাজার কোটি টাকা ঢুকবে। ওই উদ্যোগকে বেসরকারিকরণের অভিমুখে বড় মাপের পদক্ষেপ বলছেন রেলের কর্মী সংগঠনের নেতৃত্ব।আর কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধীর কথায়, ‘‘সরকার গরিবের জীবনরেখা রেলকে ছিনিয়ে নিচ্ছে।’’
গত ডিসেম্বর মাসে রেলের ১৫১টি ট্রেনকে বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় নীতি আয়োগ।ওই প্রকল্পে কারা আগ্রহী, গতকাল তা জানতে চায় রেল।
বর্তমানে প্রতি যাত্রী পিছু প্রতি কিলোমিটারে ৪৩ পয়সা ভর্তুকি দেয় রেল। রেল সূত্রের মতে, টিকিটের দাম নির্ধারণের ক্ষমতা বেসরকারি হাতে যাওয়ায় তাতে ভর্তুকির সুবিধে থাকবে না। ফলে টিকিটের প্রকৃত দাম ও বেসরকারি সংস্থার লাভ দুই মিলিয়ে টিকিটের যা দাম হবে তা সাধারণ মানুষের ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যাবে বলে বিরোধীদের অভিযোগ। রাহুলের কথায়, ‘‘ যা কেড়ে নেওয়ার নাও! কিন্তু মনে রেখো, জনতা এর জবাব দেবে।’’
আরও পড়ুন: ৬৫ বছরের উপরেই পোস্টাল ব্যালট, অবাধ ভোট নিয়ে আশঙ্কা
বর্তমানে ভর্তুকি দেওয়া সত্ত্বেওবাতানূকুল দ্বিতীয় ও প্রথম শ্রেণির কামরার ভাড়া একই রুটের বিমানভাড়ার সঙ্গে কার্যত পাল্লা দেয়। বহু যাত্রীই সময় বাঁচাতে প্রয়োজনে কিছু বেশি টাকা দিয়ে হলেও বিমানে যাতায়াত করাই পছন্দ করছেন। ফলে বাতানূকুল শ্রেণিতে গত দু-তিন বছর ধরেই যাত্রী হারাচ্ছে রেল। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেছে, ভর্তুকিহীন বেসরকারি সংস্থার ট্রেনের ভাড়া যদি বিমানের ভাড়া থেকে বেশি হয়, তা হলে লোকে কেন ট্রেনে যাবেন।
বঙ্গের ট্রেন
• রাঁচী ভায়া পুরুলিয়া
• হাওড়া-পুণে
• হাওড়া-চেন্নাই
• হাওড়া-পুরী
• হাওড়া-রাঁচী
• নিউ বঙ্গাইগাঁও-হাওড়া
• হাওড়া-আনন্দবিহার(দিল্লি)
• হাওড়া-বারাণসী ভায়া পটনা
• শিয়ালদহ-গুয়াহাটি
• হাওড়া-ভাগলপুর
• আসানসোল-পুরী
• আসানসোল-সুরাত
• হাওড়া-সেকেন্দ্রাবাদ
• হাওড়া-বেঙ্গালুরু
• হাওড়া-মুম্বই
বিরোধীদের দাবি, ওই মডেল অল্প দিনেই ভেঙে পড়বে। প্রাক্তন রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরীর মতে, ‘‘যখন দেশের মানুষ আর্থিক সংকটে, তখন রেলের মতো সুলভ ও সুবিধাজনক পরিবহণ বেসরকারি হাতে গেলে ভাড়া কি আর সাধারণ মানুষের আয়ত্তে থাকবে? পরিকাঠামো নির্মাণ করবে সরকার আর বেসরকারি সংস্থাকে মুনাফা অর্জনের জন্য ছেড়ে দেওয়া হবে? কার স্বার্থে ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হল স্পষ্ট করুক সরকার।’’
আরও পড়ুন: রাশিয়া থেকে ৩৩টি নতুন যুদ্ধবিমান কেনার সিদ্ধান্ত নিল দিল্লি
বেসরকারি ট্রেনগুলি যাতে যথেষ্ট যাত্রী পায় ও দ্রুত ছুটতে পারে তার জন্য দেশ জুড়ে অন্তত শ’খানেক ধীর গতির ট্রেন বসিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল। যার মধ্যে পূর্ব রেলেই রয়েছে ১৭ জোড়া ট্রেন। এমনকি, বেসরকারি ট্রেন ছাড়ার ১৫ মিনিট আগে ও পরে একই রুটের কোনও ট্রেন যাবে না বলে প্রতিশ্রুতি দিয়ে রেখেছে সরকার।
ইস্টার্ন রেলওয়ে মেনস ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অমিত ঘোষ বলেন, ‘‘বেসরকারি ট্রেনকে জায়গা করে দিতে সরকারি ট্রেনকে ক্রমেই পিছনের সারিতে ঠেলে দেওয়ার যাবতীয় পরিকল্পনা সেরে ফেলা হয়েছে। সে কারণে টিকিটের চাহিদা ১৫০ শতাংশের কাছাকাছি হওয়া সত্ত্বেও ট্রেন তুলে দিয়ে বেসরকারি সংস্থাকে সেখানে ঢুকতে সাহায্য করা হচ্ছে।’’ ইস্টার্ন রেলওয়ে মেনস কংগ্রেস-এর সভাপতি বিনোদ শর্মার কথায়, ‘‘আগামী কয়েক বছরে ভারতীয় রেল আরও রুগ্ণ হবে, তারপর তা বেঁচে দেওয়ার নীতি নেবে মোদী সরকার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy