Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

বিহারের উন্নয়নে নীতীশ সাহায্য চাইছেন মোদীরও

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মুখোমুখি হতে পারেন নীতীশ কুমার রাজনীতির অলিগলিতে এ বার এমন জল্পনা ছড়িয়ে দিলেন খোদ নীতীশই। ৯ মাস পর আজ ফের বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর তখ্তে বসে তিনি বললেন, “রাজ্যের উন্নয়নের স্বার্থে কেন্দ্রের সঙ্গে সব রকম সহযোগিতা করব। আশা করছি, নয়াদিল্লির তরফেও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া হবে।” তিনি কি সরাসরি মোদীর সঙ্গে দেখা করবেন? স্পষ্ট ভাবে এ নিয়ে কিছু বলেননি নীতীশ। তাঁর কথায়, “রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা অন্য বিষয়। তার সঙ্গে উন্নয়নকে মিশিয়ে দেওয়া উচিত নয়।” তবে, জেডিইউ অন্দরমহলে এ দিন তেমন কানাঘুষোই শোনা গিয়েছে।

নীতীশ কুমারের শপথগ্রহণ যেন বিরোধী ঐক্যের মঞ্চ। রয়েছেন এইচ ডি দেবগৌড়া, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তরুণ গগৈ এবং অখিলেশ যাদব। রবিবার পটনায়।  নিজস্ব চিত্র

নীতীশ কুমারের শপথগ্রহণ যেন বিরোধী ঐক্যের মঞ্চ। রয়েছেন এইচ ডি দেবগৌড়া, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তরুণ গগৈ এবং অখিলেশ যাদব। রবিবার পটনায়। নিজস্ব চিত্র

স্বপন সরকার
পটনা শেষ আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৩:২৩
Share: Save:

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মুখোমুখি হতে পারেন নীতীশ কুমার রাজনীতির অলিগলিতে এ বার এমন জল্পনা ছড়িয়ে দিলেন খোদ নীতীশই।

৯ মাস পর আজ ফের বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর তখ্তে বসে তিনি বললেন, “রাজ্যের উন্নয়নের স্বার্থে কেন্দ্রের সঙ্গে সব রকম সহযোগিতা করব। আশা করছি, নয়াদিল্লির তরফেও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া হবে।” তিনি কি সরাসরি মোদীর সঙ্গে দেখা করবেন? স্পষ্ট ভাবে এ নিয়ে কিছু বলেননি নীতীশ। তাঁর কথায়, “রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা অন্য বিষয়। তার সঙ্গে উন্নয়নকে মিশিয়ে দেওয়া উচিত নয়।” তবে, জেডিইউ অন্দরমহলে এ দিন তেমন কানাঘুষোই শোনা গিয়েছে।

সন্ধেয় টুইটারে নীতীশকে অভিনন্দন জানান মোদী। লোকসভা ভোটের আগে মোদীকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী করার পর বিজেপির সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ করেছিলেন নীতীশ। ওই নির্বাচনে বিহারে জেডিইউয়ের ভরাডুবি হয়। তার জেরে গত বছর ১৭ মে মুখ্যমন্ত্রী পদে ইস্তফা দেন তিনি। সেই কুর্সিতে বসান জিতনরাম মাঁঝিকে।

বিজেপি সেই সময় নীতীশকে নিশানা করে বলেছিল প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্নেই তাঁদের সঙ্গে জোট ভেঙেছে জেডিইউ। নির্বাচনে মোদী-সুনামির পর গেরুয়া পার্টি দাবি করে, প্রধানমন্ত্রীর সামনে দাঁড়াতে পারবেন না বলেই মুখ্যমন্ত্রীর গদি ছেড়েছেন নীতীশ।

এ বার হয়তো ছবিটা বদলে দেবেন নীতীশ।

এ দিন পটনা রাজভবনের রাজেন্দ্র মণ্ডপে জেডিইউ শীর্ষ নেতা নীতীশের সঙ্গেই বিহার মন্ত্রিসভার নতুন ২২ জন মন্ত্রীকে শপথবাক্য পাঠ করান রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী।

নীতীশ সরকার ফের ক্ষমতায় কায়েম হওয়ার পর শেষ হল রাজ্যে জিতনরাম মাঁঝিকে ঘিরে শুরু রাজনৈতিক বিতর্কেরও।

এ দিন নীতীশের শপথগ্রহণ ঘিরে কার্যত ‘চাঁদের হাট’ বসেছিল পটনা রাজভবনে। এসেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবগৌড়া, অসমের মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ, উত্তরপ্রদেশের অখিলেশ সিংহ যাদব। তাঁরা বসেছিলেন সামনের সারিতে। হাজির ছিলেন ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বাবুলাল মরাণ্ডি, কংগ্রেসের মোতিলাল ভোরা, ওমপ্রকাশ চৌতালার ছেলে অভয়, জেডিইউ নেতা শরদ যাদব, তৃণমূলের ফিরহাদ (ববি) হাকিম, সমাজবাদী পার্টির সহ-সভাপতি কিরণময় নন্দের মতো নেতারাও।

অতিথিদের মধ্যে ছিলেন জিতনরাম মাঁঝিও। সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি বলেন, “নীতীশজির সরকার ভাল কাজ করলে নিশ্চয় সাধুবাদ জানাব।” শপথগ্রহণ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই অবশ্য রাজভবন থেকে বেরিয়ে যান জিতনরাম।

শপথ নেওয়ার পর ভিভিআইপি অতিথিদের সঙ্গে সৌজন্য বিনিময় করেন নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যরা। মমতার সঙ্গে হাত মেলানোর পর তাঁকে জড়িয়ে ধরেন রঞ্জু গীতা, বীমা ভারতীর মতো মহিলা মন্ত্রীরা। তাঁদের অনুরোধে দু’জনের মাঝখানে দাঁড়িয়ে ছবিও তোলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। নীতীশ মন্ত্রিসভার শপথ-পর্ব চলাকালীন মাঝেমধ্যেই উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায় মমতাকে। তৃণমূল নেত্রীর এক পাশে অবশ্য বসেছিলেন তরুণ গগৈ, অন্য দিকে দেবগৌড়া। গগৈয়ের পাশে বসেছিলেন অখিলেশ। পরে মমতা আনন্দবাজারকে বলেন, “নীতীশজিরা বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের যে চেষ্টা করছেন আমি তার পাশে রয়েছি।”

নীতীশের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণার পর বিহার মন্ত্রিসভার যে সব সদস্যকে জিতনরাম বরখাস্ত করেছিলেন, এ দিন তাঁদেরই মন্ত্রিসভায় পুনর্বহাল করলেন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ। তাঁদের মধ্যে প্রশান্তকুমার শাহি, রামাই রাম, রামধনি সিংহ, লালন সিংহ, শ্যাম রজক অন্যতম। রাজভবনে শপথগ্রহণ শুরু হয় বিকেল ৫টায়। চলে আধ ঘণ্টা।

শরীর খারাপ থাকায় এ দিন পটনায় আসতে পারেননি সমাজবাদী পার্টির শীর্ষ নেতা মুলায়ম সিংহ যাদব। দলের সহ-সভাপতি কিরণময়বাবু বলেন, “নেতাজির (মুলায়ম) সঙ্গে নীতীশজির কথা হয়েছে। উনি তাঁকে বলেছেন, নিজে হাজির থাকতে পারছেন না। তবে, ছেলে অখিলেশকে এখানে পাঠাচ্ছেন।”

সন্ধেয় এক সাংবাদিক সম্মেলনে নীতীশ জানান, তিনি প্রতিহিংসার রাজনীতিতে বিশ্বাস করেন না। জিতনরাম মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তগুলি তাই আইনমাফিক খতিয়ে দেখার পরই তা কার্যকর বা বাতিল করা হবে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE