রাজভবনে গিয়ে নতুন সরকার গড়ার দাবি জানালেন নীতীশ কুমার। পাশে তেজস্বী আর তেজপ্রতাপ। — ছবি পিটিআই থেকে।
একই দিনে দ্বিতীয় বার রাজভবনে গেলেন নীতীশ কুমার। প্রথম বার মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিতে। দ্বিতীয় বার নতুন সরকার গড়ে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার দাবি জানাতে। এক পাশে তেজস্বী যাদব। অন্য পাশে তেজপ্রতাপ। রাষ্ট্রীয় জনতা দল সু্প্রিমো লালুপ্রসাদের দুই ছেলে। ইতিমধ্যেই কংগ্রেস-সহ অন্য বিরোধী দলগুলো সমর্থনের কথা ঘোষণা করে দিয়েছে। যার অর্থ, সপ্তম বার বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন নীতীশ কুমার। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে দ্বিতীয় বার উপমুখ্যমন্ত্রী হতে চলেছেন তেজস্বী যাদব।
রাজভবন থেকে বেরিয়ে নীতীশ বলেন, ‘‘১৬৪ জন বিধায়কের সমর্থন রয়েছে আমাদের। প্রত্যেক বিধায়ক সমর্থন জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন।’’ তার পরেই মাইক ধরিয়ে দেন তেজস্বীকে। নীতীশের কথায়, ‘‘বাকিটা সব বলবে তেজস্বী’’। তেজস্বী বলেন, ‘‘কাকা-ভাইপোর সরকার আবার ক্ষমতায়। বিহারকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাব আমরা।’’
নীতীশকে ‘দেশের সবথেকে অভিজ্ঞ মুখ্যমন্ত্রী’ বলেই আক্রমণ করলেন বিজেপিকে। তেজস্বীর কথায়, ‘‘সাম্প্রদায়িকতার ভিত্তিতে জনগণের মধ্যে শুধু বিভেদ তৈরি করতে পারে বিজেপি। দেখুন নিজের জোটশরিকদের কী করেছে বিজেপি। তাদের নির্মূল করতে চেয়েছে। পঞ্জাব, মহারাষ্ট্রের দিকে দেখুন। বিহারেও সেটাই করতে চাইছিল। আমরা বিহারে বিজেপির উদ্দেশ্য সফল হতে দেব না।’’
সকাল থেকে জল্পনার পর দুপুরেই বিজেপির হাত ছাড়ার কথা ঘোষণা করেন নীতীশ। ২০১৫ সালের পর দ্বিতীয় বার এনডিএ ছাড়লেন তিনি। ষষ্ঠ বার ছাড়লেন মুখ্যমন্ত্রিত্ব। দ্বিতীয় বার ধরলেন লালুপ্রসাদের দল রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি)-র হাত।
বিকেলে রাজভবনে ইস্তফা দিয়ে সোজা চলে যান প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী রাবড়ি দেবীর বাড়ি। সেখানে গিয়েই আলোচনায় বসেন আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদবের সঙ্গে। তার পরেই তেজস্বী এবং তাঁর দাদা তেজপ্রতাপের সঙ্গে হেঁটে পৌঁছে যান রাজভবনে।
নীতীশকে ইতিমধ্যেই সমর্থনের কথা জানিয়ে দিয়েছে কংগ্রেস, সিপিআইএমএল, সিপিএম, সিপিআই। বিরোধী মহাজোটের নেতা হিসেবে আবারও উঠে আসে নীতীশের নাম। এর পরেই তিনি রাজভবনে সরকার গড়ার দাবি নিয়ে যান।
এর আগে ২০১৫ সালে এনডিএ ছেড়ে লালুপ্রসাদের দলের সঙ্গে জোট গড়ে বিহারে ক্ষমতায় আসেন নীতীশ। মুখ্যমন্ত্রীর পদে বসেছিলেন তিনি। আর উপমুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন লালু-পুত্র তেজস্বী। আর এক ছেলে তেজপ্রতাপ হয়েছিলেন বিহারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী। সেই জোট আড়াই বছরের বেশি টেকেনি।
২০১৭ সালে মহাজোট ভেঙে নীতীশ যোগ দেন এনডিএতে। চতুর্থ বার মুখ্যমন্ত্রী হন। ২০২০ সালে বিধানসভা নির্বাচনে জেডিইউ কম আসন পেলেও তাঁকেই মুখ্যমন্ত্রী করে বিজেপি। গত কয়েক মাস ধরেই অগ্নিবীর প্রকল্প থেকে বিভিন্ন ইস্যুতে সেই বিজেপিরই বিরুদ্ধে মুখ খুলছিলেন নীতীশ। দূরত্ব বাড়ছিল। এরই মধ্যে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর শপথগ্রহণ গরহাজির ছিলেন নীতীশ। এর পরে গত রবিবার প্রধানমন্ত্রীর ডাকা নীতি আয়োগের বৈঠকেও যোগ দেননি। বিরোধ তীব্র হয় আরসিপি সিংকে নিয়ে। অভিযোগ ওঠে, মহারাষ্ট্রের ঢঙে বিহারে জেডিইউকে ভাঙার চেষ্টা করছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এর পরেই টানা দ্বিতীয় বার বিহারে ক্ষমতায় আসার দু’ বছরের মাথায় বিজেপির সঙ্গে নীতীশের জোট ভাঙল।
ফিরে এল পুরনো জোট। এ বার নতুন সরকার গড়ার পালা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy