প্রতীকী ছবি।
নরেন্দ্র মোদী সরকারের মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা বলেছিলেন, সব রোগের একটাই ওষুধ— বেসরকারি লগ্নি। তাতেই আর্থিক বৃদ্ধির মন্দ গতি, চাকরির অভাব, বাজারে কেনাকাটায় ভাটার টানের মতো সব অসুখ সেরে যাবে।
আর্থিক সমীক্ষার সেই প্রেসক্রিপশন মেনেই আজ অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন তাঁর বাজেটে বেসরকারি লগ্নির জোয়ার আনতে বাজেটে একগুচ্ছ ঘোষণা করলেন। কিন্তু আখেরে তাতে কতখানি লাভ হবে, সেই প্রশ্ন রয়েই গেল। অর্থনীতিবিদরা তাই বলছেন, মোদী সরকারের উদ্দেশ্য স্পষ্ট। কিন্তু তার রূপরেখা নেই। ইন্ডিয়া রেটিংস-এর প্রধান অর্থনীতিবিদ সুনীল সিন্হার মতে, ‘‘আর্থিক সমীক্ষায় বলা হয়েছিল, বেসরকারি লগ্নিকেই প্রধান চালিকা শক্তি করা হবে। কিন্তু বাজেটে কর্পোরেট লগ্নিকে চাঙ্গা করতে যথেষ্ট পদক্ষেপ করা হয়নি। উদ্দেশ্য স্পষ্ট হলেও রূপরেখার দেখা নেই।’’
মোদী লক্ষ্য স্থির করেছেন, আগামী পাঁচ বছরে অর্থনীতির বহর এখনকার ২.৭ লক্ষ কোটি ডলার থেকে ৫ লক্ষ কোটি ডলারে নিয়ে যাবেন। সে জন্য আজ অর্থমন্ত্রী রেল, সড়ক, বন্দর, বিমানবন্দর, সাধ্যের মধ্যে থাকা আবাসনে বছরে ২০ লক্ষ কোটি টাকা লগ্নির মাত্রা ঠিক হয়েছে। বলা বহুল্য, এ জন্য বেসরকারি লগ্নির উপরেই ভরসা রাখা হয়েছে।
বাজেটের আগে শিল্পমহল দাবি করেছিল, পুঁজির খরচ কমানো হোক। কর্পোরেট বন্ডের মাধ্যমে লগ্নি জোগাড়ের রাস্তা সহজ হোক। অর্থমন্ত্রী আজ বাজেটে দেশের কর্পোরেট বন্ড বাজার, বিদেশি পুঁজি ও সঞ্চয়ের তহবিল থেকে টাকা জোগাড়ের রাস্তা তৈরির চেষ্টা করেছেন। চলতি অর্থ বছরে ‘ক্রেডিট গ্যারান্টি এনহ্যান্সমেন্ট কর্পোরেশন’ তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম একে সাধুবাদ জানিয়েছেন। ব্যাঙ্ক ছাড়া অন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা এনবিএফসি-র সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেছেন। কিন্তু ইন্ডিয়া রেটিংসের মতে, বেশ কয়েক বছর ধরে ধুঁকতে থাকা বেসরকারি লগ্নি এতে ঘুরে দাঁড়াবে না।
শিল্প মহলের আশা ছিল, সব সংস্থার জন্য এ বার কর্পোরেট কর ৩০ থেকে ২৫% কমিয়ে আনা হবে। কিন্তু বছরে ৪০০ কোটি টাকা পর্যন্ত ব্যবসার ক্ষেত্রেই এই সুরাহা দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। ফলে বড় মাপের সংস্থাগুলি ও শেয়ার বাজারে নথিভুক্ত সংস্থাগুলির দুই-তৃতীয়াংশ সংস্থাই এই সুবিধা পাবে না।
বিদেশি লগ্নির ক্ষেত্রে এয়ার ইন্ডিয়ার বেসরকারিকরণ, জেট এয়ারওয়েজে নতুন লগ্নির পথ সহজ করতে বিমান ক্ষেত্রে বিদেশি লগ্নির ঊর্ধ্বসীমা বাড়ানোর কথা বলেছেন। স্বদেশী জাগরণ মঞ্চের মতো সংস্থার আপত্তি সত্ত্বেও, আইকিয়া-র মতো এক ব্র্যান্ডের খুচরো ব্যবসায় দেশের বাজার থেকে কাঁচামাল কেনার শর্ত শিথিল করা হবে বলে জানিয়েছেন। এখন এই সংস্থাগুলিকে ৩০% পণ্য দেশের ছোট-মাঝারি শিল্প, কুটির শিল্প বা হস্তশিল্পীদের থেকে কিনতে হয়।
এ বারের বাজেটে এই প্রথম কেন্দ্রীয় সরকার বিদেশের বাজার থেকে বিদেশি মুদ্রায় ঋণপত্র ছেড়ে টাকা জোগাড়ের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে। বিশেষত পরিকাঠামোর ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক বন্ডের মাধ্যমে টাকা জোগাড়ের চেষ্টা হবে।
গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন ‘ভাইব্র্যান্ট গুজরাত’ নামের শিল্প সম্মেলন আয়োজন করা শুরু করেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। এ বার সেই মডেলে জাতীয় স্তরে আন্তর্জাতিক লগ্নিকারীদের সম্মেলন আয়োজনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy