প্রতীকী ছবি।
বাজেট পেশের সময়েই কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন জানিয়েছিলেন, রেলের ঘোষিত প্রকল্প শেষ করতে প্রয়োজন ৫০ লক্ষ কোটি টাকা। রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়ালও দাবি করেছেন, সামগ্রিক রেল পরিষেবাকে বিশ্বমানের করে তুলতে আগামী এক দশকে ওই টাকা বিনিয়োগ করা হবে রেলে। কিন্তু টাকা আসবে কোথা থেকে সে প্রশ্নের কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি তাঁরা।
পীযূষের দাবি, সরকার আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে রেলে ৫০ লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগ করার পরিকল্পনা নিয়েছে। যার অর্থ বছরে পাঁচ লক্ষ কোটি টাকা রেলের খাতে বিনিয়োগ করতে হবে নরেন্দ্র মোদী সরকারকে। রেলমন্ত্রীর ওই দাবি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন খোদ রেলকর্তারাই। এক রেল কর্তার বিশ্লেষণ, এ বছরের বাজেটে রেলের পরিকাঠামো খাতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১.৬০ লক্ষ কোটি টাকা। যার মধ্যে অর্থ মন্ত্রক রেলকে ৬৫,৮৭৩ কোটি টাকা দিয়ে সাহায্য করবে। বাকি অর্থ বিভিন্ন খাত থেকে জোগাড় করতে হবে রেলকে। একই সঙ্গে দিতে হবে যাত্রিভাড়ায় প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকার ভর্তুকি।
ফলে একে তো বাজেটে ঘোষিত অর্থ অন্যান্য খাত থেকে তোলার চাপ রয়েছে, সেইসঙ্গেই আবার আগামী বছর থেকে বাড়তি চার লক্ষ কোটি টাকা কোথা থেকে আসবে তার কোনও দিশা নেই রেলের কাছে। ওই কর্তার কথায়, ‘‘তাহলে কি অর্থ মন্ত্রক হাত উপুড় করবে?’’ সন্দেহ রয়েছে তা নিয়েও। এ দিকে পীযূষ ঘনিষ্ঠ শিবিরের দাবি, যে ভাবে এলআইসি-র মতো সংস্থা রেলে পাঁচ বছরে দেড় লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেই ভাবেই অন্যান্য সরকারি লাভজনক সংস্থা বা প্রয়োজনে স্বল্প সুদে আন্তর্জাতিক আর্থিক বিনিয়োগকারী সংস্থাগুলির কাছে টাকার জন্য দ্বারস্থ হবে রেল।
রেলের বর্ষীয়ান কর্তাদের মতে, সমস্যা লুকিয়ে রয়েছে অন্যত্র। মোদী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার আগের দু’দশকে পরিকল্পনাহীন ভাবে একের পর এক প্রকল্প ঘোষণা করে গিয়েছিলেন তৎকালীন রেলমন্ত্রীরা। যাদের অধিকাংশই ক্ষতিতে চলা প্রকল্প। সেগুলি থেকে লাভের মুখ দেখার আশা নেই। কিন্তু বাজেটে ঘোষিত প্রকল্প হওয়ায় সেগুলির পিছনে টাকা ঢেলে যেতেই হচ্ছে রেলকে। মোদী সরকারের প্রথম পর্বে এ ধাঁচের ক্ষতিতে চলা প্রকল্পগুলিকে চিহ্নিত করে সেগুলি বন্ধ করে দেওয়ার একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রেল। কিন্তু সেই বাতিলের সিদ্ধান্ত লোকসভায় পাশ করানোর রীতি থাকায় পিছিয়ে আসে সরকার। কিন্তু পুরনো প্রকল্পের পিছনেই বাজেট বরাদ্দের অধিকাংশ গলে যাওয়ায় টাকার অভাবে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আধুনিক মানের কোচ বা যন্ত্রাংশ তৈরির কারখানা গড়ারও ঝুঁকি নেয়নি মোদী সরকার।
রেল মন্ত্রকের বক্তব্য, অবিলম্বে গুরুত্বপূর্ণ রুটে ট্রেনের গতি বাড়ানোর প্রয়োজন রয়েছে। তা না হলে রেলের ব্যবসায় আরও ভাগ বসাবে বিমানশিল্প। কিন্তু গতি বাড়াতে লাইনের খোলনলচে পাল্টানো, সিগন্যালিং ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ, কিছু ক্ষেত্রে বিদ্যুদয়নের জন্যও বিপুল অর্থের প্রয়োজন। টাকার অভাবে সে কাজও করা যাচ্ছে না।
রেল ইউনিয়নগুলির আশঙ্কা, টাকার অভাবে এ বার আরও বড় মাপে বেসরকারিকরণের পথে হাঁটবেন পীযূষ গয়ালেরা। ন্যাশনাল ফেডারেশন অব
ইন্ডিয়ান রেলওয়েমেন একটি বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, চলতি বছরের বাজেট মূলত রেলকে আরও বেসরকারিকরণের পথে ঠেলে দিয়েছে। ১০ থেকে ১৩ জুলাই দেশের সব জোনে কালো ব্যাজ পরে সরকারের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাবেন সংগঠনের সদস্যরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy