Advertisement
০৪ জানুয়ারি ২০২৫
Trade Deal

বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে হতাশা ঢাকছে দিল্লি

গত কালই ট্রাম্প অভিযোগ করেছেন, বাণিজ্য নিয়ে ভারতের কাছ থেকে ভাল ব্যবহার আমেরিকা পায়নি।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

অগ্নি রায়
শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৪:৫৪
Share: Save:

দু’টি দেশের নিজ নিজ জাতীয় স্বার্থ জড়িত বলেই আন্তর্জাতিক স্তরে কোনও দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্ন করা অত্যন্ত ‘জটিল প্রক্রিয়া’। সে কারণে এ নিয়ে কোনও ‘কৃত্রিম সময়সীমা’ আগে থেকে নির্ধারণ করা অসম্ভব।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আসন্ন ভারত সফরে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে প্রত্যাশার পারদ শীর্ষ থেকে একবারে শূন্যে নেমে আসার পরে এমনই বিবৃতি দিলেন বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রবীশ কুমার। পরিসংখ্যান দিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করলেন, ভারতের সঙ্গে আমেরিকার বাণিজ্য সম্পর্ক ক্রমশ শক্তিশালী হচ্ছে। এখন কেউই তাড়াহুড়ো করতে চায় না।

গত কালই ট্রাম্প অভিযোগ করেছেন, বাণিজ্য নিয়ে ভারতের কাছ থেকে ভাল ব্যবহার আমেরিকা পায়নি। কূটনীতিকদের মতে, গত দু’বছর ধরে লাগাতার চেষ্টা সত্ত্বেও বাণিজ্য চুক্তি সই না-করতে পারায় হতাশা তৈরি হয়েছে সাউথ ব্লকে। কিন্তু ট্রাম্পের এই বহু প্রচারিত এবং আড়ম্বরপূর্ণ সফরের ঠিক আগে সেই মনোভাব আড়াল করতে চাইছে মোদী সরকার। বিশেষজ্ঞদের মতে, শুধু মাত্র আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি নয়, মোদী সরকারের বিদেশনীতির একটি বড় ব্যথর্তাই হল, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ক্ষেত্রে নিজেদের রফতানি বাড়াতে না পারা এবং কোনও বড়মাপের আন্তর্জাতিক চুক্তি করতে না পারা। আরএসএসের চাপের কাছে নতি স্বীকার করে সংরক্ষণশীল অর্থনীতির দিকে ঝুঁকে থাকা এর অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন অনেকে। অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড-সহ ষোল দেশের প্রস্তাবিত বাণিজ্য চুক্তি (আরসিইপি) থেকে মোদী সরকার সরে এসেছে শেষ মুহূর্তে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে দফায় দফায় কথাই চলছে শুধু। কিন্তু তা শেষ পর্যন্ত চুক্তিতে রূপায়িত হবে কিনা, তা এখনও স্পষ্ট নয়। মোদী সরকারের ‘অ্যাক্ট ইস্ট’ এবং ‘প্রতিবেশী প্রথম’ নীতি এত দিন পরেও নড়বড়ে দেখাচ্ছে তার কারণ, এই সব ক্ষেত্রে বাণিজ্যের ভূমিকা বা লেনদেন তুলনায় কম। সূত্রের বক্তব্য, ক্রমশ আন্তর্জাতিক বাজারে রফতানি কমছে ভারতের। ভারতীয় সংস্থাগুলির তৈরি করা পরিসরে থাবা বসাচ্ছে অন্যান্য দেশ। ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’-র সযত্নলালিত নীতিকেও ম্লান দেখাচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

মোদী-ট্রাম্প-এর আলোচনার টেবিলে যা থাকবে

• মার্কিন ক্ষেপনাস্ত্র মোকাবিলা সরঞ্জাম সংক্রান্ত কেনা
• আন্তর্জাতিক সন্ত্রাস বিরোধিতার কৌশল
• মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে সমন্বয় বাড়ানো
• অন্ধ্রপ্রদেশে ১১০০ মেগাওয়াট শক্তিসম্পন্ন পরমাণু চুল্লি তৈরির কাজে অগ্রগতি
• অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা
• বিভিন্ন আন্তর্জাতিক এবং আঞ্চলিক বিষয়

বাণিজ্য মন্ত্রক সূত্রের খবর, নতুন চুক্তি তো হচ্ছেই না, পাশাপাশি এর আগে মনমোহন সিংহের জমানায় যে বাণিজ্য চুক্তিগুলি হয়েছিল, সেগুলিকেও স্থগিত করে তার সার্বিক পর্যালোচনা করছে বর্তমান সরকার। তাদের মতে, পুরনো চুক্তিগুলি নাকি জাতীয় স্বার্থের পক্ষে ক্ষতিকর।

আজ বিদেশ মন্ত্রক অবশ্য আশার কথা শোনাতে চেয়েছে। রবীশের কথায়, ‘‘আমরা আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে বেশ কিছু দিন ধরেই কথা বলছি। দু’দেশেরই ভারসাম্য ঠিক থাকে, এমন একটা অবস্থানে পৌঁছতে সময় লাগছে। যে হেতু এই সংক্রান্ত যে কোনও সিদ্ধান্তই দেশের মানুষের জীবনযাপন ও তাদের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির উপর সরাসরি প্রভাব ফেলবে, তাই তাড়াহুড়ো করে চুক্তি সই করতে চাইছি না। কৃত্রিম সময়সীমা তৈরি করতে চাওয়া হচ্ছে না।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Trade Deal Donald Trump Narendra Modi USA India
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy