সোমবার বিজেপির সংসদীয় বোর্ড উত্তরপ্রদেশের জন্য অমিত শাহ ও সহ পর্যবেক্ষক হিসাবে রঘুবর দাসকে বেছে নেয়। বিজেপি সূত্রে বলা হয়েছে, উত্তরপ্রদেশ-সহ চার রাজ্যে বিধায়ক দলের নেতা বেছে নিতেই ওই পর্যবেক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে
ফাইল চিত্র।
শুক্রবার দোল পূর্ণিমার পরেই চার রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করতে চলেছে বিজেপি। উত্তরপ্রদেশের হবু মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ দিল্লিতে এসে দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ সেরে ফিরে যাওয়ার পরে চার রাজ্যে বিধায়ক দলের নেতা নির্বাচনে কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক নিযুক্ত করল দলের সংসদীয় বোর্ড। এর মধ্যে তাৎপর্যপূর্ণ হল উত্তরপ্রদেশে কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক হিসাবে অমিত শাহকে বেছে নিয়েছে দল।
সোমবার বিজেপির সংসদীয় বোর্ড উত্তরপ্রদেশের জন্য অমিত শাহ ও সহ পর্যবেক্ষক হিসাবে রঘুবর দাসকে বেছে নেয়। বিজেপি সূত্রে বলা হয়েছে, উত্তরপ্রদেশ-সহ চার রাজ্যে বিধায়ক দলের নেতা বেছে নিতেই ওই পর্যবেক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে। উত্তরপ্রদেশে যেখানে যোগী আদিত্যনাথকে মুখ করে দল নির্বাচনে নেমেছিল, যোগী যেখানে দলকে দ্বিতীয় বার জিতিয়ে এনেছেন, এমনকি দ্বিতীয় বার মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে যেখানে তাঁর শপথের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে, তৈরি হয়ে গিয়েছে মন্ত্রিসভা, সেখানে অমিত শাহের মতো দলের প্রথম সারির নেতাকে উত্তরপ্রদেশের বিধায়ক দলের নেতা নির্বাচিত করার কেন দায়িত্ব দেওয়া হল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে! রাজনীতির অনেকের মতে, উত্তরপ্রদেশের নির্বাচনের পরেই বিজেপিতে ক্ষমতার অলিন্দে ‘দ্বিতীয় কে’ তা নিয়ে অমিত শাহ ও যোগী আদিত্যনাথের মধ্যে ঠান্ডা লড়াইয়ের সূত্রপাত হয়ে গিয়েছে। তা ছাড়া যে ভাবে যোগী জেতার পরেই নিজেকে মুখ্যমন্ত্রী ধরে নিয়ে দিল্লি সফর করে অতি-সক্রিয়তা করেছেন, তা ভাল চোখে দেখছে না দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। বিজেপির একটি সূত্রের মতে, তাই অমিত শাহ যে দলে এখনও দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ‘গোরক্ষপুর’-কে সেই বার্তা দিতেই আজ উত্তরপ্রদেশের বিধায়ক দলের নেতা নির্বাচনের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে। যিনি আনুষ্ঠানিক ভাবে যোগীর নামে সিলমোহর দেবেন। এ ছাড়া উত্তরাখণ্ডের জন্য রাজনাথ সিংহ ও মীনাক্ষী লেখি, মণিপুরের জন্য নির্মলা সীতারামন ও কিরেণ রিজিজু এবং গোয়ার জন্য নরেন্দ্র সিংহ তোমর ও এল মুরুগনকে পর্যবেক্ষক হিসাবে বেছে নিয়েছে দল।
আগামিকাল বিজেপির সংসদীয় বোর্ডের হওয়ার কথা রয়েছে। সকালে সংসদ শুরু হওয়ার আগে সংসদীয় পার্টির বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। সূত্রের মতে, সেই বৈঠকে চার রাজ্যে জয়ের জন্য মূলত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেই সংবর্ধনা দেওয়ার কথা রয়েছে দলীয় নেতৃত্বের। সেই সংবর্ধনার আজ কিছুটা হলেও সাক্ষী থাকল সংসদের বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় পর্বের প্রথম দিন। আজ লোকসভায় নরেন্দ্র মোদী পা দিতেই গোটা শাসক শিবির উঠে দাঁড়িয়ে তালি মেরে টেবিল চাপড়াতে থাকে। লোকসভা জুড়ে আওয়াজ ওঠে মোদী-মোদী। প্রধানমন্ত্রী নিজের আসনে এসে পৌঁছলে দাঁড়িয়ে উঠে তাঁকে অভ্যর্থনা জানান পাশে থাকা রাজনাথ সিংহ, অমিত শাহেরা। প্রধানমন্ত্রীকে নিজের আসনে বসে বিপক্ষ শিবিরকে লক্ষ্য করে হাতজোড় করে নমস্কার করতে দেখা যায়। প্রধানমন্ত্রী এর পর নিজের আসনে বসে গেলেও, কেন্দ্রীয় সংসদীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশীকে দেখা যায় প্রধানমন্ত্রীর পিছনে দাঁড়িয়ে থেকে ঠায় টেবিল চাপড়ে যেতে। এমনকি দলের অন্য নেতারা যাতে আরও কিছু ক্ষণ ধরে টেবিল চাপড়ে যান, সে জন্য চোখের ইশারা করতে দেখা যায় তাঁকে। প্রায় দেড়-দুমিনিট ধরে টেবিল চাপড়ানি ও মোদী-মোদী ধ্বনি সত্ত্বেও স্পিকার ওম বিড়লাকে এক বারও শাসক শিবিরের সাংসদের বারণ করতে শোনা যায়নি। উল্টে মুখে মিটিমিটি হাসি নিয়ে নীরব হয়ে গোটা পর্বটি আসনে বসে দেখেন স্পিকার।
উল্টো দিকে চার রাজ্যে বিজেপির হাতে দুরমুশ হওয়ায বিরোধী শিবির ছিল দৃশ্যতই হত্যোদম। আজ লোকসভা জুড়ে যখন প্রবল মোদী ধ্বনি উঠেছে তখন তা বসে দেখা ছাড়া উপায় ছিল না বিরোধীরা। যদিও পরে বাইরে কংগ্রেসের এক নেতা বলেন, “দলের সতীর্থদের মুখে নিজের নাম শুনে প্রধানমন্ত্রী বেশ উপভোগ করছিলেন মনে হল। নৈতিক ভাবে অন্তত তাঁর উচিত ছিল সতীর্থ সাংসদের
আটকানো। কিন্তু তা তিনি করেননি।” এ দিকে চার রাজ্যে হার নিয়ে গত কালই ঝড় উঠেছিল কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটিতে। আজ সনিয়া ও রাহুল গান্ধী লোকসভায় উপস্থিত থাকলেও, কোনও বিষয়েই মুখ খুলতে দেখা যায়নি তাঁদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy