ফাইল চিত্র।
হাজার বছর ধরে এই অঞ্চলে বাস মুসলিম মৎস্যজীবীদের, এখন তাঁরা স্বেচ্ছায় মৃত্যুর আবেদন জানিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে গুজরাতের পোরবন্দরে। পোরবন্দর— গোটা বিশ্ব যে জায়গাকে চেনে মোহনদাস কর্মচন্দ গান্ধীর জন্মভূমি হিসেবে। যে গান্ধী আজীবন সত্য-শান্তি-সম্প্রীতির জন্য লড়াই করে গিয়েছেন। তাঁর জন্মভূমিতেই ৬০০ জন মুসলিম মৎস্যজীবীর স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদনের কারণ গুজরাতের বিজেপি সরকারের চূড়ান্ত বৈষম্য।
পোরবন্দরের গোসাবারা জলাভূমির মৎস্যজীবীদের নেতা আল্লারাখা ইসমাইল ভাই থিম্মার গুজরাত হাই কোর্টে গত বৃহস্পতিবার আবেদন করেছেন, তাঁদের অর্থনৈতিক অবস্থা দিনে দিনে চরম খারাপ হয়েছে। তার কারণ নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহদের দলের পরিচালিত রাজ্য সরকারের বৈষম্য। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে জীবনধারণ করাটাই দুর্বিষহ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই তিনি এবং তাঁর সঙ্গে ৬০০ জনকে স্বেচ্ছামৃত্যুর অনুমতি দিক আদালত।
হাই কোর্টে একই আবেদন জানানো হয়েছে, গোসাবারা মুসলিম ফিশারমেনস সোসাইটির তরফেও। ওই সংগঠনের অভিযোগ, একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের মৎস্যজীবীরা সরকারের বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন। ওই সম্প্রদায়ের মৎস্যজীবীদের কোনও রকম সরকারি সহায়তা দেওয়া হচ্ছে না। নানা ভাবে তাঁদের হেনস্থা করা হচ্ছে।
আবেদনে জানানো হয়েছে, ওই সম্প্রদায়টি ‘রাজনৈতিক নিপীড়নে’র শিকার। বিভিন্ন ভাবে স্থানীয় প্রশাসন তাদের হেনস্থা করেছে। এলাকার ১০০টি পরিবারের ৬০০ লোক মৎস্য ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। মাছ ধরার জন্য তাঁদের মৎস্য দফতরের অনুমতিপত্রও রয়েছে। তা সত্ত্বেও গোসাবারা এবং নভি বন্দরে তাঁদের নোঙর করতে দেন না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। ২০১৬ সাল থেকে তাঁদের এই ধরনের হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে বলে আদালতে জানিয়েছে পোরবন্দরের ওই মুসলিম মৎস্যজীবীরা।
আবেদনকারী মৎস্যজীবীদের আইনজীবী ধর্মেশ গুর্জার বলেন, ‘‘২০১৬ সাল থেকে গোসাবারা বন্দরে মুসলিম মৎস্যজীবীদের নৌকো চলাচল বন্ধ করা দেওয়া হয়েছে। অনুমতিপত্রেরও তোয়াক্কা করা হচ্ছে না।’’ থিম্মার অভিযোগ, হিন্দু মৎস্যজীবীদের সরকার সব রকম সুবিধা দিচ্ছে, অথচ তাঁদের দিকে কেউ ফিরেও তাকাচ্ছে না। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের ভাতে মারার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’
মুসলিম মৎস্যজীবীদের অভিযোগ, বার বার উচ্চতর কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানানো হলেও কোনও লাভ হয়নি। অথচ তাঁরা বেআইনি কাজকর্মের সঙ্গে কোনও ভাবেই জড়িত নন। বরং পাকিস্তানের মদতপুষ্ট দুষ্কৃতীদের গতিবিধি সম্পর্কে নিরাপত্তাবাহিনীকে সবসময় অবহিত করেন এবং সহযোগিতা করেন।
বিরোধীদের তির্যক মন্তব্য, এটাই নরেন্দ্র মোদীর উন্নয়নের গুজরাত-মডেল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy