ফাইল চিত্র।
বিজয়া দশমীর দিনে রাহুল গাঁধীর সঙ্গে বৈঠকের পরে নভজ্যোৎ সিংহ সিধু বলেছিলেন, সব সমস্যা মিটে গিয়েছে। কংগ্রেস দাবি করেছিল, রাহুলকে পঞ্জাবের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পদ থেকে নিজের পদত্যাগপত্র প্রত্যাহারের আশ্বাস দিয়েছেন সিধু। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি হিসেবে কাজ শুরুর নির্দেশও দেওয়া হয়েছে তাঁকে। অথচ গত দু’দিনে সিধু তাঁর ইস্তফা প্রত্যাহারের কথা তো মুখেই আনেননি, উল্টে আজ দ্বাদশীর দিনে সনিয়া গাঁধীকে লেখা চার পৃষ্ঠার চিঠি প্রকাশ করে দিলেন তিনি!
চিঠিতে সিধু ১৩ দফা কর্মসূচির তালিকা তুলে ধরে দাবি জানিয়েছেন, পঞ্জাবের নতুন মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিংহ চন্নীকে এই সব কাজ দ্রুত সেরে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হোক। সনিয়ার সঙ্গে দেখা করার জন্য সময়ও চেয়েছেন তিনি। সিধুর যুক্তি, রাজ্যের বিভিন্ন সমস্যা, দাবিদাওয়া নিয়ে এই ১৩ দফা কর্মসূচি রূপায়ণ করে (বিধানসভা ভোটের আগে) পঞ্জাবে কংগ্রেসের ক্ষত মেরামতের একটা শেষ চেষ্টা করা যেতে পারে।
তাৎপর্যপূর্ণ হল, সিধু এই চিঠি লিখেছিলেন শুক্রবার। রাহুলের সঙ্গে দেখা করার দিনেই। শনিবার কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে সনিয়া গাঁধী বলেছিলেন, তিনি খোলাখুলি আলোচনা ভালবাসেন। কাজেই তাঁর সঙ্গে ভায়া সংবাদমাধ্যম কথা বলার কোনও প্রয়োজন নেই। অথচ দলের মধ্যের কথাবার্তা নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ না খুলতে সনিয়ার ওই বার্তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই আজ সিধু তাঁর চিঠি প্রকাশ করে দিয়েছেন। তার উপরে তিনি নিজের পদত্যাগপত্র ফিরিয়ে নিচ্ছেন কি না, সে বিষয়ে একটি শব্দও উচ্চারণ করেননি।
চন্নী তাঁর আপত্তি সত্ত্বেও মন্ত্রী ও প্রশাসনিক পদে নিয়োগ হচ্ছে বলেই ক্ষুব্ধ সিধু প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন। আজ চন্নী বলেছেন, তাঁর হাতে সময় কম। চার মাসের মধ্যেই ভোট। তা সত্ত্বেও পাঁচ বছর আগে কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার আগে যে সব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তা পূরণ করার সব রকম চেষ্টা হবে। কংগ্রেস নেতারা বলছেন, সিধুর এই চিঠি থেকেই স্পষ্ট যে, তাঁর ও চন্নীর মধ্যে টানাপড়েন মেটেনি।
কংগ্রেস নেতৃত্বের অবশ্য তার থেকেও বেশি চিন্তার কারণ, এতে রাহুল-প্রিয়ঙ্কার সিদ্ধান্ত প্রশ্নের মুখে পড়া। সিধুর উপরে ভরসা করে ক্যাপ্টেন অমরেন্দ্র সিংহকে মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে সরিয়েছিলেন মূলত রাহুল আর প্রিয়ঙ্কাই। অমরেন্দ্র কংগ্রেস ছাড়ার কথা ঘোষণা করে বসে রয়েছেন। সম্ভবত তিনি নিজের দল গড়বেন। এরই মধ্যে সিধুর কাণ্ড পঞ্জাবে আসন্ন বিধানসভা ভোটে কংগ্রেস ‘জেতা ম্যাচ’ হারতে চলেছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। এআইসিসি-র এক নেতা বলেন, ২০২২ সালের গোড়ায় যে পাঁচ রাজ্যে নির্বাচন, তার মধ্যে একমাত্র পঞ্জাবেই কংগ্রেস জিততে পারে। সেখানে বিজেপির ভাল ফল করার সম্ভাবনা নেই। অথচ সেই রাজ্যেই নেতারা নিজেদের পায়ে কুড়ুল মারছেন। সিধু তাঁর চিঠিতে সনিয়াকে লিখেছেন, গত বিধানসভা নির্বাচনে তিনি যে ৫৫টি আসনে প্রচার করেছেন, তার মধ্যে কংগ্রেস ৫৩টিতেই জিতেছিল। কংগ্রেস নেতাদের প্রশ্ন, ‘‘সিধুর হাতে তো এ বার সারা রাজ্যে দলের ভার দেওয়া হয়েছে। তা হলে তিনি নিজের কাজে মন দিচ্ছেন না কেন!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy