ছবি: পিটিআই।
পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের পরীক্ষাকে রাজনীতির ঊর্ধ্বে রাখার আহ্বান জানালেন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল নিশঙ্ক। তাঁর বক্তব্য, জেইই-মেন এবং নিট-ইউজি না-হওয়া নিয়ে পড়ুয়া ও অভিভাবকদের উদ্বেগ এবং তার পরে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের ভিত্তিতেই এত অসুবিধার মধ্যেও ওই দুই সর্বভারতীয় প্রবেশিকা পরীক্ষা আয়োজন করা হয়েছে। অনলাইনে পরীক্ষার অ্যাডমিট কার্ড যে গতিতে ডাউনলোড হচ্ছে, তা থেকেও অধিকাংশ পড়ুয়ার পরীক্ষায় বসার ইচ্ছে স্পষ্ট বলে তাঁর দাবি।
আজ সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মন্ত্রী এ কথা বললেও, প্রতিবাদ জানাচ্ছে বহু ছাত্র সংগঠন। তাদের দাবি, পরীক্ষা না-পিছোনোয় বাধ্য হয়ে অ্যাডমিট কার্ড ডাউনলোড করছেন পড়ুয়ারা। বুধবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ বিরোধী নেতারা এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর এ দিন পরীক্ষা নেওয়ার বিরুদ্ধে টুইট করেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী। পরীক্ষা পিছোনোর দাবিতে সরব হয়েছেন পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরেন্দ্র সিংহ। আগে এ নিয়ে চিঠি দেওয়ার পরে একই অনুরোধ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক। আর সমাজবাদী পার্টির কর্মীরা এর বিরুদ্ধে পথে নামলে, এ দিন তাঁদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠি চালিয়েছে উত্তরপ্রদেশের পুলিশ।
১ থেকে ৬ সেপ্টেম্বর সর্বভারতীয় ইঞ্জিনিয়ারিং প্রবেশিকা পরীক্ষা জেইই-মেন এবং ১৩ সেপ্টেম্বর ডাক্তারি প্রবেশিকা নিট-ইউজি আয়োজনের ঘোষণার পর থেকেই এর বিরুদ্ধে সরব পড়ুয়া এবং বিরোধী রাজনৈতিক দলের বড় অংশ। এই আবহে নিশঙ্ক এ দিন বলেন, “সকলের কাছে আমার বিনীত অনুরোধ, পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের পরীক্ষাকে অন্তত রাজনীতির ঊর্ধ্বে রাখুন।”
আরও পড়ুন: করোনার তৃতীয় ঢেউই চিন্তা
আরও পড়ুন: উর্দুর বেশি কদর মোদী জমানায়, দাবিতে প্রশ্ন
পরীক্ষা মসৃণ ভাবে নেওয়ার জন্য যে কেন্দ্রের সঙ্গে সমস্ত রাজ্যের সমন্বয় জরুরি, তা মনে করিয়ে দিয়েছেন মন্ত্রী। বলেছেন, পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছনো থেকে শুরু করে কোনও বিষয়ে যাতে পরীক্ষার্থীদের অসুবিধা না-হয়, তা নিশ্চিত করতে নিয়মিত প্রত্যেক রাজ্যের মুখ্যসচিব, শিক্ষাসচিব, স্বাস্থ্যসচিবের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছেন কেন্দ্রীয় শিক্ষাসচিব। কথা বলেছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিবও।
নিশঙ্কের দাবি, “পরীক্ষা কবে হবে, গত কয়েক মাস ধরে এই প্রশ্নই বার বার করেছেন উদ্বিগ্ন পড়ুয়া এবং অভিভাবকেরা। পুরো এক বছর নষ্ট হওয়া আটকাতে পরীক্ষা নেওয়ার জন্যই বরং ক্রমাগত চাপ দিচ্ছেন তাঁরা।…(পরীক্ষার আয়োজক সংস্থা) এনটিএ-র ডিরেক্টর জেনারেল আমাকে জানিয়েছেন, জেইই-মেনের ৮.৫৮ লক্ষ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ইতিমধ্যেই অ্যাডমিট কার্ড ডাউনলোড করেছেন প্রায় ৭.৫ লক্ষ জন। নিটের ১৫.৯৭ লক্ষ পরীক্ষার্থীর মধ্যে সংখ্যাটা ১০ লক্ষেরও বেশি। এ থেকেই স্পষ্ট যে, অধিকাংশ জনই পরীক্ষায় বসতে চান।”
প্রতিবাদী পড়ুয়াদের পাল্টা দাবি, “পরীক্ষা হচ্ছে বলে বাধ্য হয়ে অ্যাডমিট কার্ড সংগ্রহ করতে হচ্ছে। মন্ত্রী যদি এতই নিশ্চিত হন, তা হলে এনটিএ-র ওয়েবসাইটে অনলাইন মত নিয়ে দেখুন যে, অধিকাংশ পরীক্ষার্থী কী চান।” আর রাহুলের টুইট, “জেইই-নিটের পরীক্ষার্থীদের মনে স্বাভাবিক ভাবেই সংক্রমণের ভয় রয়েছে। অতিমারির সময়ে পরীক্ষা দিতে যাওয়ার জন্য যানবাহন এবং থাকার জায়গা নিয়েও দুশ্চিন্তা রয়েছে। তার উপরে বন্যায় ভাসছে অসম ও বিহার। সরকারের উচিত সমস্ত পক্ষের সঙ্গে কথা বলে গ্রহণযোগ্য সমাধানসূত্র খোঁজা।’’ পাল্টা বলেছেন বিজেপির সাধারণ সম্পাদক ভূপেন্দ্র যাদব। তাঁর কথায়, ‘‘কংগ্রেস রাজনীতিতে ভেসে থাকার জন্য পরীক্ষার্থীদের এক বছর নষ্ট করার পরিকল্পনা করবে, মোদী সরকার তা হতে দেবে না।’’
গোড়া থেকেই পরীক্ষা পিছোনোর পক্ষে সরব বিজেপির রাজ্যসভা সাংসদ সুব্রহ্মণ্যন স্বামী। তবে এ দিন তাঁর কটাক্ষ, “১১ জন মুখ্যমন্ত্রী নিট এবং জেইই-র বিরোধিতা করা সত্ত্বেও তা নিয়ে কোর্টে যাওয়ার প্রয়োজন কী? মুখ্যমন্ত্রীদের কি কোনও ক্ষমতাই নেই?”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy