অতিথি: ডাবের জলে আপ্যায়ন চিনা প্রেসিডেন্টকে। শুক্রবার মমল্লপুরমে। পিটিআই
কাশ্মীর থেকে ৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রত্যাহার হওয়ার পরে বিরোধী নেতাদের একজোট করে মোদী-বিরোধী আন্দোলন শুরু করেছিলেন ডিএমকে নেতা স্ট্যালিন । হিন্দির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে অমিত শাহ ‘এক দেশ এক ভাষা’ তত্ত্ব দেওয়ার পর ঝড় উঠেছিল দাক্ষিণাত্যে। লোকসভা ভোটে গোটা দেশে জয়যাত্রা অব্যাহত থাকলেও বিজেপি মুখ থুবড়ে পড়েছিল তামিলনাড়ুতে।
গত চব্বিশ ঘণ্টায় তামিলনাড়ুর উপকূল শহর মমল্লপুরমকে গোটা দেশ তথা দক্ষিণ এশিয়ার নজরের কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে এসে এই প্রতিকূল দ্রাবিড়ভূমের বাতাসে নিজের তথা দলের পতাকা ওড়াতে চাইলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিংয়ের সঙ্গে তাঁর বৈঠকের পরে এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা। সামনেই তামিলনাড়ুতে দু’টি উপনির্বাচন। তবে শুধু সেই সামান্য কারণেই নয়। দাক্ষিণাত্যে গেরুয়া পতাকা ওড়ানোটা আরএসএস তথা সঙ্ঘ পরিবারের অনেক দিনের স্বপ্ন। কিন্তু কর্নাটক ছাড়া এ যাবৎ দক্ষিণে সাফল্যের মুখ দেখেনি বিজেপি। সূত্রের খবর, মোদী তাই এ বার কোমর বেঁধে নেমেছেন। চিনফিংয়ের সঙ্গে বৈঠক উপলক্ষে নিজের এই একটি চালে কূটনৈতিক ও অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক— দু’টি উদ্দেশ্যই সিদ্ধ করতে চাইলেন তিনি।
একে তো দেশের অন্য অনেক জায়গা ছেড়ে চিনা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকের জন্য মোদী বেছে নিলেন তামিলনাড়ুর এই উপকূলবর্তী শহরকে। বিদেশ মন্ত্রক বলেছে, তামিল-চিন ঐতিহাসিক সংযোগকে তুলে ধরতেই নাকি এই বাছাই। কিন্তু শুধু স্থান নির্বাচনই তো নয়। বেশির ভাগ সময়েই কুর্তা-চুড়িদার এবং জহরকোটে (তাঁর সমর্থকেরা যাঁকে ‘মোদী জ্যাকেট’ নাম দিয়েছেন) অভ্যস্ত মোদীকে গত কাল দেখা গেল খাস দক্ষিণী পোশাকে। সেই নতুন বেশেই চিনফিংকে আপ্যায়ন করেছেন তিনি। তামিলরা লুঙ্গির মতো করে যে মোটা কাপড়ের ধুতি পরেন, তাকে ‘ভেস্তি’ বলা হয়। তামিলনাডুতে মোদীকে প্রথম ভেস্তি পরতে দেখা গেল। সঙ্গে ছিল শাদা শার্ট এবং অঙ্গবস্ত্র।
মমল্লপুরমে দেখা হওয়ার পরে ঐতিহাসিক শহরটির প্রধান মন্দির-সৌধগুলি চিনা প্রেসিডেন্টকে ঘুরিয়ে দেখান মোদী। বোঝান কাঞ্জিভরম শাড়ির বৃত্তান্ত। রাতের মেনুতে ছিল তামিল খাবার। ক্যামেরার সামনে দু’দণ্ড জিরিয়ে নেওয়ার সময়ে চিনফিংকে পাশে নিয়ে তাঁকে চুমুক দিতে দেখা যায় ডাবে। বারবার রাজ্যের সরকার এবং মানুষের প্রশংসা করেছেন মোদী, দিল্লি ফিরে যাওয়া আগে তাঁদের বিশদে ধন্যবাদও দিয়েছেন। আর ভারত-চিন সম্পর্কে পাকাপাকি ভাবে জুড়েছেন একটি নতুন কূটনৈতিক শব্দ— ‘চেন্নাই কানেক্ট’। প্রতিনিধি স্তরের বৈঠকে নিজের প্রাথমিক বিবৃতিটিও শুরু করেছেন তামিল ভাষায়।
তামিল মন জয়ের চেষ্টা অবশ্য মোদী আগেই শুরু করে দিয়েছিলেন। আইআইটি মাদ্রাজে গিয়ে দক্ষিণী খাদ্যের বিশেষ প্রশংসা করেছিলেন তিনি। গত মাসে নিউ ইয়র্কে রাষ্ট্রপুঞ্জে বক্তৃতা দিতে গিয়ে সঙ্গম যুগের কবি কানিয়ান পুনগুন্দ্রন-এর কবিতা উদ্ধৃত করেছিলেন। বলেছিলেন, ‘‘তামিল বিশ্বের প্রাচীনতম ভাষা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy