বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ফাইল চিত্র।
সম্পর্কের বহু ঝড় জল পার হয়ে, কোভিডের পরে এই প্রথম বিদেশ সফরে বাংলাদেশ যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বঙ্গবন্ধুর শতবর্ষ এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর উদযাপন উপলক্ষে তাঁর এই সফরের মূল উদ্দেশ্য দুটি — এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক শিবির।
প্রথমত, গত দেড় বছরে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কে বিবিধ অনাস্থা সরিয়ে সম্পর্কের ‘সোনালি অধ্যায়’কে ফিরিয়ে আনা। গত ডিসেম্বরে ভিডিয়ো সম্মেলনে দুটি দেশের রাষ্ট্রনেতার বৈঠক হয়েছে ঠিকই, কিন্তু তাতে মুখোমুখি বসার উষ্ণতা অনুপস্থিত ছিল বলে ঘরোয়া ভাবে স্বীকার করেছিলেন সাউথ ব্লকের কর্তারা। এ বারের সফরে শীতলতা কমানোর সুযোগ থাকছে। সূত্রের খবর, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পরে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বেশ কিছু চুক্তিপত্র সই হওয়ারও কথা রয়েছে।
দ্বিতীয় কারণটি সম্পুর্ণ ঘরোয়া রাজনীতির সঙ্গে সংযুক্ত বলেই মনে করা হচ্ছে। ২৭ মার্চ প্রধানমন্ত্রী যাবেন সাতক্ষীরার শ্যামনগরে। সেখানে ঈশ্বরীপুরে যশোরেশ্বরীর মন্দিরে পুজো দেবেন। সেদিনই ওড়াকান্দিতে মতুয়াদের মন্দিরে যাবেন মোদী। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে সে দিনই পশ্চিমবঙ্গে শুরু হচ্ছে ৮ দফা বিধানসভা ভোটের প্রথম পর্ব। ফলে বাংলাদেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে এক দিকে হিন্দুত্বের বার্তা দেওয়া, অন্য দিকে পশ্চিমবঙ্গের বিপুল সংখ্যক মতুয়া ভোটারদের কাছে পৌঁছানোর রাজনৈতিক প্রয়াস থাকছে মোদীর— মনে করছে সংশ্লিষ্ট শিবির।
আজ পশ্চিমবঙ্গের ঠাকুরনগরে নিজের বাড়িতে বনগাঁর বিজেপি সাংসদ তথা অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি শান্তনু ঠাকুর বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর ওড়াকান্দিতে যাওয়া চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে। আমিও যাচ্ছি। একইসঙ্গে ওড়াকান্দিতে আমরা থাকব। দিন কয়েক আগে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দিল্লিতে আমার কথাও হয়েছে।’’ তাঁর দাবি, রাজ্যের ভোটের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর ওড়াকান্দি যাওয়ার সম্পর্ক নেই। প্রধানমন্ত্রীর ওড়াকান্দি যাওয়ার পরিকল্পনায় অবশ্য সরাসরি ভোট-রাজনীতিই দেখছে তৃণমূল।
প্রধানমন্ত্রীর সফরের প্রস্তুতি হিসেবে আজ দু’দেশের জলসম্পদ সচিবের বৈঠক হয়। পরে বাংলাদেশের সচিব কবীর বিন আনোয়ার দেখা করেছেন জল সম্পদউন্নয়ন মন্ত্রী রতনলাল কাটারিয়ার সঙ্গে। সূত্রের খবর, আলোচনায় উঠে এসেছে তিস্তার জলবন্টন চুক্তির প্রসঙ্গ। বাংলাদেশ চাইছে দ্রুত এই চুক্তি সই হোক। ভারতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গে এখন নির্বাচন আসন্ন। ফলে আপাতত তিস্তা নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য আলোচনার পরিসর নেই। তবে অদূর ভবিষ্যতেই এ নিয়ে পদক্ষেপ করা হবে। সূত্রের মতে, মোদীর আসন্ন ঢাকা সফরে তিস্তার জল গড়াবে এমন কোনও আশা হাসিনা সরকার করছে না। বরং তিস্তাকে কেন্দ্র করে সে দেশের রাজনৈতিক আবেগ যাতে ফুলে ফেঁপে না ওঠে সে দিকেও নজর রাখা হচ্ছে।
আসন্ন সফরে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা সংক্রান্ত চুক্তির পাশাপাশি ভারত এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে সমন্বয় সংক্রান্ত চুক্তি এবং দু’দেশের মধ্যে ‘বর্ডার হাট’ বাড়ানো নিয়েও কিছু সিদ্ধান্ত হতে পারে বলে জানা গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy